April 20, 2024, 2:59 pm


সামি

Published:
2020-08-11 11:55:27 BdST

শিবিরের ক্যাডার ছিল শুটার লিয়াকত


পুলিশের ইন্সপেক্টর লিয়াকত, তাকে পুলিশের মধ্যে ডাকা হতো শুটার লিয়াকত। ক্রসফায়ার এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য পুলিশের মধ্যে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আলোচিত হয়ে উঠে লিয়াকত। 

সোয়াতের সদস্য ছিলেন লিয়াকত আলী। থাইল্যান্ড থেকে তিনি শুটিং-এর উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন। 

প্রদীপের খুব প্রিয় পাত্র ছিলেন লিয়াকত আলী এই কারণে যে, লিয়াকতের গুলি কখনো মিস হতো না। যে কোন রেঞ্জ থেকে গুলি করে হত্যা করা যেন তার এক ধরণের নেশা ছিল। এই কারণেই এই ধরণের অপারেশনগুলোতে প্রদীপ লিয়াকত আলীকে দায়িত্ব দিতেন।

সিনহা মোহাম্মদ রাশেদের হত্যাকান্ডে প্রধান আসামি লিয়াকত আলী। তার গুলিতেই সিনহা মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এটি প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। লিয়াকত আলী সিনহাকে চারটি গুলি করেছিলেন। ক্রসফায়ার এবং গুলি করে হত্যা করার জন্য লিয়াকত আলীর পরিচিতি ছিল টেকনাফে। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, শুটার লিয়াকত আলীর বাড়ি পটিয়ায়। তার পিতার নাম সাহেব মিয়া। তিনি মারা গেছেন। তার গ্রাম পূর্ব হুলাইন। পটিয়ার এই অঞ্চলটি জামাত শিবির অধ্যুষিত ছিল দীর্ঘদিন। ছাত্রাবস্থায় লিয়াকত আলী শিবিরের ক্যাডার ছিল। এরপর এসআই পদে পরীক্ষা দিয়ে পুলিশের চাকরি গ্রহণ করে।

প্রশ্ন উঠেছে যে, লিয়াকতের মতো একজন শিবির ক্যাডার কিভাবে এসআই পদে নিয়োগ পেলো? 

জানা গেছে যে, শুধু লিয়াকত আলী নয় বিভিন্ন সময় পুলিশের মধ্যে এই ধরণের এসআই পদে প্রচুর জামাত শিবিরের ক্যাডাররা পরিকল্পিতভাবে যোগদান করেছিলো। এরাই এখন বিভিন্ন রকম অপকর্ম করছে। 

লিয়াকত আলীর সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, লিয়াকত পটিয়া কলেজে পড়ার সময় ছাত্র শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। ছাত্র শিবিরের একজন সক্রিয় ক্যাডার ছিল। তখন থেকেই আগ্নেয়াস্ত্রের সঙ্গে তার দেখভাল। 

এরপরে ছাত্র শিবিরে সিদ্ধান্ত হয় যে, তাদের মধ্যে থেকে একটা বড় অংশকে পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে লিয়াকত আলী এসআই পদের জন্য পরীক্ষা দেন, চাকরি পেয়ে যান। 

প্রশ্ন হল যে, একটা এসআই পদে নিয়োগের আগে বিভিন্ন গোয়েন্দা রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। কিন্তু এই ধরণের গোয়েন্দা রিপোর্ট এড়িয়ে কিভাবে লিয়াকত চাকরি পেলো? নাকি লিয়াকত অন্যকোন কিছুর বিনিময়ে এই ধরণের রিপোর্টকে তার পক্ষে নিয়েছিলো, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। 

তবে শুটার লিয়াকতকে গ্রেফতারের পর পুলিশের মধ্যে কথা উঠেছে যে, পুলিশে গত ১০ বছরে তথাকথিত নিরপেক্ষতার নামে যে নিয়োগ হয়েছে। সেই নিয়োগে বেশ কিছু জামাত শিবিরের লোক ঢুকেছে। 

পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, জামাত শিবিরের কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে পুলিশে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেয় ২০১১ সাল থেকেই। তারই অংশ হিসেবেই যে লিয়াকতের মতো ব্যক্তিরা পুলিশ বাহিনীতে ঢুকেছে, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই। এরাই এখন এই ধরণের অপকর্ম করে সরকারকে বদনাম করছে।

সিনহা মোহাম্মদ রাশেদকে হত্যার আগেও লিয়াকত আলী এই ধরণের একাধিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা