April 27, 2024, 9:32 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2021-04-30 16:32:19 BdST

ভারতকে আবার চমকে দিলো বাংলাদেশ


বাংলাদেশ ভারতের পাশে একটি খুব ছোট্ট দেশ। কিন্তু ছোট্ট দেশটি ভারতকে বারবার চমকে দিচ্ছে, ভারতকে বারবার হারিয়ে দিচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ করোনায় ক্ষতবিক্ষত ভারতের সহায়তায় হাত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।

সাম্প্রতিক ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে ভারতের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। এই প্রস্তাব পাঠানোর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের আরেকটি কূটনৈতিক বিজয় অর্জিত হলো বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।

কারণ, যত ছোট সাহায্যই হোক না কেন বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ হয়েও যে উদারতার পরিচয় দিলো সেটি ভারতের জন্য শিক্ষণীয়। অবশ্য বাংলাদেশ বারবার উদারতার পরিচয় দিয়ে ভারতকে চমকে দিয়েছে। ছোট দেশ হয়েও বড় দেশকে সহায়তা করেছে, সাহায্য দিয়েছে এবং নিজেরা ত্যাগ স্বীকার করেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে নানাকারণে ভারতের বিজেপি সরকারের কিছু অংশ আওয়ামী লীগ সরকারের উপর নাখোশ। এর প্রধান কারণ হলো বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি।

এই ধারা শুরু হলো যখন বিশ্বব্যাংক বললো যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতকে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ভারতের চেয়ে বেশি হবে। তখন থেকেই ভারতে যেন হুলস্থূল পড়ে গেল। তারপর থেকে ভারতের মন্ত্রী, প্রভাবশালী নেতারা এবং গণমাধ্যম বাংলাদেশ বিরোধী এক আবহ তৈরি করলো। এই আবহর মধ্য দিয়ে ভারতের দ্বিতীয় গূরত্বপূর্ণ ব্যক্তি অমিত শাহা বাংলাদেশ সম্পর্কে আপত্তিকর, নোংরা, কূটূক্তিপূর্ণ কথাবার্তা বলে বিতর্কিত হলেন। কিন্তু বাংলাদেশ এই সমস্ত নোংরা কথার ফাঁদে পা দেয়নি, এ নিয়ে তর্কেও যায়নি। বাংলাদেশ বাংলাদেশের কাজটিই করেছে।

ভারত যখন বাংলাদেশে টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে তখন বাংলাদেশ সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার মঞ্চে যোগ দিয়ে টিকার ব্যবস্থা করেছে। রাশিয়ার কাছ থেকে টিকা নেয়ার জন্য মাত্র দুই দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে।

বাংলাদেশ যে দ্রুত বিকল্প উৎস থেকে টিকা নিতে পারবে এটা ভারত চিন্তাও করতে পারেনি। আর এজন্যই ভারত চমকে গেছে। আর বাংলাদেশে টিকা নিয়ে যখন নানারকম সমালোচনা তখন বাংলাদেশ ভারতের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে এটাও বোধহয় ভারত চিন্তা করে পারেনি, ভারত চমকে গেছে।

যেমন ভারত চমকে গিয়েছিল ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ ঘোষণা করেছিল বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং সন্ত্রাসী জঙ্গিদের ব্যাপারে বাংলাদেশ শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করেছে। এদেরকে কোন সময়ই আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া হবে না এবং বাংলাদেশ শত প্রতিবন্ধকতার পর ভারতের নানারকম উস্কানি, আপত্তিকর মন্তব্য এবং অপ্রীতিকর সম্পর্কের পরও জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জায়গা দেয়নি। এটি ছিলো ভারতের বিরাট প্রাপ্তি।

বাংলাদেশ যা বলে তাতে যে অটুট থাকে। এমনকি যাকে আশ্বাস দেয় তারা বিশ্বাস ভঙ্গ করলেও যে বাংলাদেশ তার অবস্থান থেকে সরে না এই জঙ্গিবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেয়া বোধহয় তার সবচেয়ে বড় কারণ।

বাংলাদেশ ভারতকে যা দিয়েছে তা ভারত মনে রেখেছে সেটা ভারতের নীতিনির্ধারক মহল মনে করতে পারেন কিন্তু এই দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে বাংলাদেশ যে উদারতা, শিষ্টাচার এবং বন্ধু রাষ্ট্রকে সহযোগিতার নজির স্থাপন করেছে তাতে ভারত বারবার শুধু চমকেই যায়।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা