April 18, 2024, 6:41 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2021-06-06 02:12:53 BdST

সঞ্চয়পত্র ক্রয় ও মুনাফার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব পরিবর্তন এসেছে


বাংলাদেশে সকল শ্রেণী-পেশার সচ্ছল মানুষের কাছে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা বিনিয়োগের একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম ।

এ ধরনের লাখ-লাখ পরিবার আছে যারা সঞ্চয়পত্র থেকে অর্জিত মুনাফা দিয়ে তাদের পারিবারিক ব্যয় নির্বাহ করেন।

সঞ্চয়পত্র ক্রয় করা সাধারণ মানুষের কাছে একটি বিনিয়োগ হলেও সরকারের জন্য এটি ঋণ।

২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য সরকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ৩২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা ঋণ করলেও এই ঋণের সুদ দিতে হবে ৩৮ হাজার কোটি টাকা।

সঞ্চয়পত্র বিক্রির ক্ষেত্রে সরকার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে, প্রতিবছরই দেখা যায় যে তার বিক্রির পরিমাণ অনেক ছাড়িয়ে যায়।

ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে লাগাম টেনে ধরতে এবং সেখান থেকে সরকারের আয় বাড়ানোর জন্য গত কয়েক বছরে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে সরকার।

যেসব পরিবর্তন এসেছে

দুই লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বা পোস্টাল সেভিংস কিনতে হলে কর সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানিয়েছেন।

পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র শুধু বাংলাদেশ জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতাধীন সঞ্চয় ব্যুরো থেকে ক্রয় করা যাবে। অন্য কোন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে এটি ক্রয় করা যাবে না। দুই সপ্তাহ আগে এই পরিবর্তন এনেছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ।

ছয় মাস আগে চালু করা নতুন নিয়ম অনুযায়ী একজন ব্যক্তি সব ধরনের সঞ্চয়পত্র মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবেন। তবে যেকোনো একটি স্কিমে ৩০ লাখ টাকার বেশি কিনতে পারবেন না।

এর অতিরিক্ত যৌথ নামে আরো ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে। অর্থাৎ সবমিলিয়ে এক কোটি টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে।

সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যবস্থা চালু হবার আগে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে আলাদাভাবে বিনিয়োগ করা যেত।

কারণ কেউ যদি ক্রয়ের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করতো তাহলে সেটি চিহ্নিত করার উপায় ছিল না। কিন্তু এখন সেটি করা যাবে না।

পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রে মুনাফার উপর উৎসে কর দিতে হবে ৫ শতাংশ। এর বেশি সঞ্চয়পত্র থাকলে উৎসে ১০ শতাংশ কর দিতে হবে।

প্রায় দুই বছর আগে এই পরিবর্তন এসেছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে এ খাত থেকে আরো বেশি টাকা সংগ্রহ করা এবং সঞ্চয়পত্র ক্রয় কিছুটা হলেও নিরুৎসাহিত করা। 

ব্যাংক হিসেব ছাড়া সঞ্চয়পত্র কেনা যায় না । দুই বছর আগে এই নিয়ম চালু হয়েছে। সঞ্চয়পত্রের মুনাফা এবং মেয়াদ শেষে বিনিয়োগের মূল টাকা সংশ্লিষ্ট ক্রেতার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি চলে যায়।

সঞ্চয়পত্রের ধরন

বাংলাদেশে বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এগুলো হচ্ছে:

পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফা-ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র

পাঁচ বছর মেয়াদি এবং তিন মাস অন্তর মুনাফা-ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র সব শ্রেণী ও পেশার নাগরিক ক্রয় করতে পারবেন।

অন্যদিকে পরিবার সঞ্চয়পত্র সবার জন্য নয়। ১৮ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সী যে কোন নারী এটি কিনতে পারবেন। তবে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী পুরুষ কিংবা যেসব পুরুষের বয়স ৬৫ বছর এবং তার চেয়ে বেশি তারা পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন।

পেনশনার সঞ্চয়পত্রও সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পেনশনার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা এটি ক্রয় করতে পারবেন।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা