April 23, 2024, 7:22 pm


অনলাইন ডেস্ক

Published:
2021-06-07 18:31:40 BdST

পরিবেশ সংরক্ষণে যুব সম্প্রদায়কে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে


পরিবেশ সংরক্ষণে যুব সম্প্রদায়কে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে

রবিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২১ এর ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সংরক্ষণে দেশের সকল স্তরের জনগণ বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রজন্মের সকলের সমবেত এবং শক্তিশালী প্রচেষ্টাই পারে প্রতিবেশকে অক্ষুণ্ন এবং সমৃদ্ধ রেখে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে। হারানো প্রকৃতি ও প্রতিবেশকে পুনরুদ্ধারের মাধ্যমেই আমরা এ ধরিত্রীকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হবো। প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারই আজকের প্রজন্মের একমাত্র অঙ্গীকার হওয়া উচিত।
 
জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির ঘোষণা অনুযায়ী এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘ইকোসিস্টেম রেস্টোরেশন’, 'প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার, হোক সবার অঙ্গীকার' এবং শ্লোগান-‘জয়েন জেনারেশন রেস্টোরেশন’ ;প্রকৃতি সংরক্ষণ করি, প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করি' অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিবেশ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে আমাদের সকলকে বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়কে এখনই এগিয়ে আসতে হবে।
 
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলা, বনসম্পদ উন্নয়ন ও সমুদ্র সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জনগোষ্ঠীর বাস উপযোগী টেকসই পরিবেশ নিশ্চিতকরণে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, শব্দদূষণ, মাটিদূষণসহ সার্বিক পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্লাস্টিক, কঠিন বর্জ্য, রাসায়নিক ও বিপজ্জনক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। নদ-নদী ও জলাশয় দূষণ রোধ, নদী থেকে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধে, বায়ু দূষণকারীদের বিরুদ্ধে, অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে, নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনের বিরদ্ধে, অবৈধভাবে পাহাড় ও টিলা কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রেখেছে। জুলাই ২০১০ হতে  ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশে মোট ৭ হাজার ৭০২টি  দূষণবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ৪১৭ কোটি ৬ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করে ২০২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ বকেয়াসহ আদায় করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গত এক যুগে ৮টি জাতীয় উদ্যান, ১৮টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ৩টি ইকোপার্ক, ১টি উদ্ভিদ উদ্যান, ১টি মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া এবং ২টি বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকাসহ মোট ৩৩টি রক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিরল জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনসের প্রতিবেশ সংরক্ষণে এবং হালদা নদীকে দূষণমুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার কর্তৃক ঘোষিত প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকাসমূহের প্রতিবেশ ব্যবস্থার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় সমাজভিত্তিক অভিযোজন কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে। জলাভূমি ও পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী সৃজন এবং সমুদ্র ও নদী মোহনা এলাকায় জেগে ওঠা নতুন চরসহ সারাদেশে ব্যাপক ভিত্তিতে বনায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০০৯-২০১০ হতে ২০১৯-২০ আর্থিক সাল পর্যন্ত বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্প এবং রাজস্ব বাজেটের আওতায় মোট ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৪২ হেক্টর বনায়ন করা হয় এবং বিক্রয় বিতরণের জন্য ১ হাজার ৪০ লাখ চারা বিতরণ ও রোপণ করা হয়। বনায়ন কার্যক্রম ও বৃক্ষরোপণের ফলে দেশে মোট বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ দেশের মোট আয়তনের ২২.৩৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বৃক্ষরোপণে বিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শনের জন্য বৃক্ষরোপণে  'প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার' এবং  জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য 'বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন' নামে জাতীয় পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়েছে। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক, ট্রেজারার অধ্যাপক ড.কামালউদ্দিন আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) এএসএম মাকসুদ কামাল প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মল্লিক আকরাম হোসেন, অধ্যাপক ড. মো. মুনিরুজ্জামান, মো. মহিউদ্দিন, ড. নিগার সুলতানা ও ড. আল আমিন হক উপস্থিত ছিলেন।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা