March 29, 2024, 7:51 pm


নিজস্ব প্রতিবেদক

Published:
2022-08-06 22:06:57 BdST

দাম বাড়ার পর মধ্যরাতে তেলের পাম্পে হাহাকার


জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার পরপরই বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে ঢাকার কিছু ফিলিং স্টেশন। আর বাকিগুলোতে আগের দামে তেল কেনার চেষ্টার দীর্ঘ লাইন সড়কে গিয়ে ঠেকেছে।

এতে নতুন দর কার্যকরের দুই ঘণ্টা আগে তেল নিতে আসা চালকরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।

শুক্রবার রাত ১০টায় ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন ও কেরোসিনের দাম একলাফে অনেকটা বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার; যা রাত ১২টা থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়।

এ খবর জানাজানি হওয়ার পরপরই কল্যাণপুরের তিনটি ফিলিং স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের লোকজন বাতি নিভিয়ে সব ধরনের তেল বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

ওই এলাকার সাহিল ফিলিং স্টেশন ও সোহরাব ফিলিং স্টেশন বিক্রি বন্ধ করলেও অনেকটা ধীরগতিতে তেল বিক্রির কৌশল নিয়েছে খালেক ফিলিং স্টেশন। এ সময় সেখানে শত শত গাড়ি জড়ো হয়ে থাকতে দেখা যায়।

সাহিল ও সোহরাব ফিলিং স্টেশনের কিছু গ্রাহককে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশে কল করতেও দেখা যায়।

এসময় সাহিল ফিলিং স্টেশনের একজন বিক্রয় কর্মী জানান, পাম্পে কোনো তেল না থাকায় তিনি বিক্রি করতে পারছেন না।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ শুক্রবার দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাত ১০টায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে।

একলাফে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২.৫% বেড়ে হয়েছে প্রতি লিটার ১১৪ টাকা। পেট্রোলের দাম ৫১.১৬% বেড়ে প্রতি লিটারের দাম হয়েছে ১৩০ টাকা। আর অকটেনের দাম বেড়েছে ৫১.৬৮%, প্রতি লিটার কিনতে গুনতে হবে ১৩৫ টাকা।

শুক্রবার মধ্যরাতের পর থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে বলে জানানো হয়।

এর আগে সবশেষ ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর ডিজেল ও করোসিন এবং ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পেট্রোল ও অকটেনের দাম বাড়ানো হয়েছিল।

তেলের দাম বাড়ানোর খবরের পর থেকে ঢাকার সব এলাকার তেলের ফিলিং স্টেশনগুলোতে মোটরবাইকসহ অনেক গাড়িকে ভিড় জমাতে দেখা যায়।

যেসব পাম্প সাধারণত সারারাত খোলা থাকে না সেগুলো তড়িঘড়ি করে আগেভাগেই বন্ধ করে দেয়।

আবার সারারাত খোলা থাকা পাম্পের অনেকগুলোকে তেল দিতে গড়িমসি করতে দেখা যায়।

আর যেগুলো তেল দেওয়া চালু রাখে সেখানে মোটরবাইকসহ অন্য গাড়ির উপচে পড়া ভিড় লেগে যায়।

নাবিস্কোতে সাউদার্ন ফিলিং স্টেশনে বাইকার ও গাড়ির চাপ সামলাতে গিয়ে সিএনজি দেওয়া বন্ধ রাখে।

মহাখালী থেকে নাবিস্কো পর্যন্ত কয়েকটি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। সেগুলোতে তেলের জন্য লম্বা লাইন ও ভিড়ের কারণে ওই সড়কে তীব্র জট লেগেছে। সব ধরনের গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

ঢাকার মত অন্যান্য নগরী ও জেলার ফিলিং স্টেশনগুলোতেও একই চিত্র দেখা গেছে। আগের দামে তেল পেতে রাতেই মোটরবাইক বা গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছেন চালকরা।

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের সব পেট্রোল পাম্পে রাত ১১টার পর থেকে ভিড় বাড়তেই থাকে।

তেল নিতে আসা অনেক চালকের অভিযোগ বিভিন্ন পাম্প খবরটি জানার পর থেকে ঠিকমত তেল দিচ্ছে না।

পাম্প কর্তৃপক্ষ বলছে, হঠাৎ মোটরসাইকেল আরোহীদের উপচে পড়া ভিড় সামাল দিতে হিমসিম খাওয়ায় ভোক্তারা কিছুটা সমস্যায় পড়ছে।

জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুলিয়া ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেল আরোহী আব্দুল রউফ জানান, গাড়িতে তেল না থাকায় পাম্পে এসে ভিড়ের মধ্যে পড়েন তিনি।

আনিছুর রহমান নামে আরেকজন জানান, তেলের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় তেল নিতে মোটরসাইকেল আরোহীদের উপচে পড়া ভিড়। যে যার মত পরছে তেল নিচ্ছে।

পঞ্চগড়ে করতোয়া ফিলিং স্টেশনে আব্দুল হাই নামে একজনের অভিযোগ, সরকারিভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। তাই ১০ টার পর থেকে পাম্প কর্তৃপক্ষ তেল দিতে বাহানা শুরু করেছে। কারণ আগের জমা করা তেল রাত ১২টার পর থেকে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন।

এদিকে জেলার কোথাও কোথাও রাত ১০টার পর থেকে ১০০ টাকার বেশি তেল দেওয়া হচ্ছে না। আবার কিছু এলাকায় পেট্রোল পাম্পগুলো বন্ধ রাখার খবর পাওয়া গেছে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা