April 19, 2024, 7:38 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2022-08-11 07:56:03 BdST

তীব্র হচ্ছে ডিজেলের বৈশ্বিক সরবরাহ সংকট


বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতির আভাস সত্ত্বেও আঞ্চলিক বাজারগুলোয় ডিজেলের সরবরাহ কমছে। আগামী শীতে ব্যাপক চাহিদার মুখে সরবরাহ আরো সংকুচিত হতে পারে। পাশাপাশি রাশিয়া ইউরোপে জ্বালানি তেল সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিলে সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।

এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ডিজেল ও অন্যান্য পেট্রোলিয়াম জ্বালানির (ডিসটিলেট জ্বালানি) মজুদ কমতির দিকে। গ্রীষ্মে যুক্তরাষ্ট্রে স্বাভাবিকভাবেই এসব জ্বালানির মজুদ বাড়েনি। বরং জুনের পর থেকে এক মাসে সর্বোচ্চ পতন দেখা দিয়েছে মজুদে। ৩২ বছরের মধ্যে বছরের এ সময়ে সর্বনিম্ন মজুদ এটি।

ইউরোপে জ্বালানি পণ্যের বাজার আরো সংকোচনের মুখে। কারণ শিল্প খাত ও ইউটিলিটিগুলো প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিবর্তে জ্বালানি তেল ব্যবহারে ঝুঁকছে। রাশিয়া সরবরাহ কমিয়ে দেয়ার পর অঞ্চলটিতে গ্যাসের দাম রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। তাছাড়া রাশিয়াকে ইউরোপে সর্বাধিক গ্যাস সরবরাহ করলেও ইউক্রেনে হামলার পর দেশটিকে নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী বলে মনে করছে না ইউরোপ।

কয়েক মাসের মধ্যে বিশেষ করে গরমের তীব্রতা বাড়তে শুরু করলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ঘাটতি আরো বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা। আগামী বছরের শুরু থেকেই সমুদ্রপথে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর হবে।

চলমান সংকট নিরসনে ইউরোপের পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি ইউরোপে ধীরে ধীরে ডিজেল রফতানি বাড়াচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে যে হারে রফতানি করা হচ্ছে, তার চেয়ে বাড়ানোর সম্ভাবনা নেই। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে ডিজেলের মজুদ মৌসুমি গড়ের তুলনায় অনেক নিচে নেমেছে। পরিশোধন কেন্দ্রগুলো এখনই তাদের সক্ষমতার কাছাকাটি মাত্রায় কার্যক্রম পরিচালনা করতে বাধ্য হচ্ছে।

সম্প্রতি মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২৯ জুলাই শেষ হওয়া সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে ডিসটিলেট জ্বালানির মজুদ ২৪ লাখ ব্যারেল কমেছে। বছরের এ সময়ে পাঁচ বছরের গড়ের তুলনায় মজুদ ২৫ শতাংশ কমেছে।

রয়টার্সের বাজার বিশ্লেষক জন কেম্প বলেন, ২৯ জুলাই শেষ হওয়া সপ্তাহে ডিজেল, হিটিং অয়েলসহ অন্যান্য ডিসটিলেট জ্বালানির মোট মজুদের পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ৯৩ লাখ ব্যারেল। ১৯৯৬ সালের পর মজুদ সর্বনিম্নে অবস্থান করছে।

যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত গ্রীষ্ম মৌসুমে ডিসটিলেট জ্বালানির মজুদ বাড়ে। কারণ এ সময় ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা মেটাতে পরিশোধন কেন্দ্রগুলো অনেক বেশি পরিমাণে গ্যাসোলিন উৎপাদন করে। কিন্তু চলতি পরিস্থিতি উল্টো দিকে মোড় নিয়েছে। এমনকি জুলাইয়ে মজুদ কমে ৩০ লাখে নেমেছে, যা ১৯৯০ সালের পর সর্বনিম্ন।

ইউক্রেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া থেকে সব ধরনের জ্বালানি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ইউরোপের ব্যবসায়ীরা রাশিয়ার বাইরে বিকল্প উৎস থেকে জ্বালানি পণ্য আমদানি করছেন। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠছে যুক্তরাষ্ট্র। জুলাইয়ে দেশটির জ্বালানি রফতানি দৈনিক ১৪ লাখ ব্যারেলে উন্নীত হয়ে, যা পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে বড় একটি অংশ রফতানি করা হয়েছে ইউরোপে।

এদিকে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিলেও তাতে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। বরং জুলাইয়ে দেশটি থেকে ডিজেল আমদানি বেড়েছে। জ্বালানি পণ্যের বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ভরটেক্সার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা