April 19, 2024, 5:15 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2022-11-24 16:00:53 BdST

এবার অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার


বর্তমান সরকার বিদেশে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের জন্য নানারকম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু এসমস্ত উদ্যোগে সাড়া দেয়নি পাচারকারীরা। পাঁচ মাস আগে সরকারের পক্ষ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার জন্য দায়মুক্তির ঘোষণা করা হয়। এবং বলা হয়েছিল ৭ শতাংশ কর দিয়ে যদি কেউ পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনেন তাহলে তাকে কোন প্রশ্ন বা আইনগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে না। কিন্তু পাঁচ মাসে একজনও এই সুযোগ গ্রহণ করেনি। বরং যারা পাচার করেছেন তারা আরও বেশি নিজেদেরকে সুরক্ষিত করার চেষ্টা করছে।

এরকম পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মুখে সরকার পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকার সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ইতোমধ্যে আটটি দেশের সঙ্গে সরকার সমঝোতা করার চেষ্টা করছে এবং সে কাজ বহু দূর এগিয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। যদি পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের জন্য সমঝোতাটি চূড়ান্ত হয় তাহলে পরে ওই দেশগুলো পাচারকৃত অর্থ ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বলে জানা গেছে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে একইভাবে যারা অর্থ পাচার করেছে তাদের তালিকা এবং তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিশেষ করে যে সমস্ত আমলারা বিদেশের বাড়ি বানিয়েছেন, ব্যবসা বানিয়েছেন, যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা ওভার ইনভয়েসের মাধ্যমে টাকা পাচার করেছে এবং রাজনীতিবিদদের মধ্যে যারা যারা বিদেশে টাকা পাচার করেছেন তাদের একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। 

একাধিক সূত্র বলছে যে, এই তালিকা তৈরি করা খুব কঠিন কাজ নয়। কারণ কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে কোন কোন আমলার বাড়িঘর রয়েছে সে ব্যাপারটি তাদের জানা। এবং এই সমস্ত ব্যক্তিদের ব্যাপারেও প্রাপ্ত অভিযোগগুলো সরকার তদন্ত করবে। এবং তদন্তে যদি দেখা যায় যে, সত্যি সত্যি তারা সেখানে সম্পদ বাড়িয়েছেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকার আর কার্পণ্য করবে না। এ ব্যাপারে কোনো রকম ছাড় দেওয়া হবে না বলে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র বলছে যারা ওভার ইনভয়েসের মাধ্যমে টাকা পাচার করেছেন বা এলসি খুলে সেই মালামাল না এনে ওই টাকা বিদেশে গচ্ছিত রেখেছেন তাদের চিহ্নিত করা খুব সহজ। এরকম বেশ কিছু ব্যবসায়ীদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবং এই তালিকা অনুযায়ী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ খুবই সহজ বলে জানা গেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ওভার ইনভয়েসের মাধ্যমে টাকাগুলো এবং এলসি খুলে যে মালামাল আনেনি সেই টাকা ফেরত না আনবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের নতুন এলসি করতে দেয়া হবে না। এবং বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ওপর আরও নানারকম বিধিনিষেধ আরোপ করবে বলে জানা গেছে। 

এছাড়াও যে সমস্ত রাজনীতিবিদ টাকা পাচার করেছে তাদেরকে চূড়ান্ত বার্তা দেয়া হবে। এবং এই সমস্ত রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে যে, পাচার করা অর্থ উদ্ধারে তারা কঠোর অবস্থানে যাবে এবং এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ ইতোমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চপর্যায় কথা বলেছেন। এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করেছেন। এবং এক্ষেত্রে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তারা সুযোগ গ্রহণ করেনি। এখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই কাজটি করছে এবং খুব শীঘ্রই পাচারকারীদের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে। এবং তাদেরকে একটি সামাজিক প্রতিরোধের মুখোমুখি দাঁড় করানো হবে বলে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা