May 18, 2024, 7:33 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2023-07-30 14:15:50 BdST

ডুবছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরমাঠ পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের ভয়াল থাবা


১৯৫৬ সালে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি (এফপিএবি)। ১৯৬০ সালের দিকে পরিবার পরিকল্পনা সেবাটি সরকারি হাসপাতালভিত্তিক এবং ১৯৬৫ সালে মাঠপর্যায়ে সেবা প্রদান শুরু হয়। স্বাধীনতার পর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর গঠন করেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর থেকে অত্যন্ত সুনাম এবং গৌরবের সাথে দেশের স্বাস্থ্য খাতে অবদান রেখে চলছিল পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। মাঝে কিছুদিন সাময়িক ছন্দপতন ঘটলেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলো এই সেবাভিত্তিক সংস্থাটি। তবে মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তির ভয়াল থাবায় রীতিমতো ডুবতে বসেছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর।

জনসংখ্যার হার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা এবং সে লক্ষে ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রসমূহ পরিচালনা করতেই মূলত গঠন করা হয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। এর বাইরেও অসংখ্য কাজ রয়েছে এ কর্তৃপক্ষের।

বস্তুত তা জানা থাকলেও কার্যত হচ্ছে তার উল্টো। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এখন অনিয়ম-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত লুটতরাজদের আঁতুড় ঘর বলেও দাবি করছে অধিদপ্তরটির একাধিক সূত্র।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে অদৃশ্য ইশারায় চলছে নিয়োগ, বদলি আর পদোন্নতির তুঘলকি কারবার। আর এই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট।

এই সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে সচিব ও মহাপরিচালক এদের কাছে অসহায়। কখনো কখনো সচিব, মহাপরিচালকের দাপ্তরিক সিদ্ধান্ত পর্যন্ত কার্যকর হতে দেয়া হয় না।

এই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য থামাতে অধিদপ্তরের অনীহায় আজ সংশ্লিষ্টদের মাঝে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। যার কোনো উত্তরও মিলছে না। এছাড়াও বিভিন্ন অজুহাতে অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রহস্যজনক নীরবতার ভূমিকায় অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টদের মাঝে বিরাজ করছে ক্ষোভ।

ভোগ-বিলাস আর বিত্ত-বৈভব যাদের কাছে একদিন অলীক মনে হতো প্রতিষ্ঠানটির সেই তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরাই এখন ঘুমাচ্ছেন টাকার বিছানায়। রাজধানীসহ নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে গড়েছেন টাকার পাহাড়। ব্যক্তিগত দামি গাড়ি হাঁকিয়ে আসেন অফিসে। মাসে মাসে বিদেশে গিয়ে প্রমোদ ভ্রমণ না করলে তাদের নাকি পেটের ভাতই হজম হয় না এখন।

চোখের সামনে এতসব অনিয়ম হলেও রহস্যজনক কারণে অবৈধ পন্থায় অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলা এসব কর্মচারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা তো নিচ্ছেই না উপরন্তু এদের বাঁচাতে সব অনিয়ম ও অভিযোগের বিষয়টি এড়িয়ে চলেছে সুকৌশলে।
এসব কর্মচারীর খুঁটির জোর এতটাই বেশি যে, নানা সময় তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত শুরু হলেও তারা ঊর্ধ্বতনদের ম্যানেজ করে তা ঝুলিয়ে দিতেও সক্ষম হন। অনেক ক্ষেত্রে তদন্ত রিপোর্টই গায়েব করে ফেলেন তারা।

এই সিন্ডিকেটটি মূলত পরিচালিত হচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নেতৃত্বে। এরা সাধারণত নেপথ্যে ভূমিকা পালন করে থাকে। আর মূল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এই অধিদপ্তরের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মধ্যকার কৌশলী সমন্বয়ের মাধ্যমে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেটের মধ্যে রয়েছেন খান মোঃ রেজাউল করিম, আব্দুল মান্নান, মতিউর রহমান, মাহাবুবুল আলম, সাবেক পরিচালক রত্না তালুকদার, জাকিয়া সহ অধিদপ্তরের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা। আর এদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন সদ্য বদলীকৃত মহাপরিচালকের একান্ত সহকারী এনামুল হক।      

এই সিন্ডিকেটের কর্মচারী অংশের নেতৃত্বে রয়েছে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কর্মচারী কল্যান সমিতির স্ব-ঘোষিত সভাপতি মোঃ কায়সার হোসেন, কার্যকরী সভাপতি এ কে এম সাইয়েদুল আবরার, মহাসচিব মোঃ মাজহারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো; শওকত আলী। আর এদেরকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে থাকে বাজেটের আজিজুর রহমান ও প্রশাসনের অফিস সহকারী সারোয়ার হোসেন। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের লজিস্টিক এবং উপকরণ সরবরাহ ও নিয়ন্ত্রণ শাখার কিছু অসাধু কর্মকর্তা এদের সাথে যুক্ত রয়েছে। আর এদের প্রধান অর্থ যোগানদাতা হিসেবে রয়েছে বিগত ৫ বছরে শত শত কোটি টাকার টেন্ডার বানিজ্যের মূল হোতারা। এদের সাথে দুস্কৃতীকারী ক্যাডার হিসেবে রয়েছে কয়েকজন ছোট বড় ঠিকাদার। সব মিলিয়ে এ যেন এক দুর্নীতির মহা সাম্রাজ্য। 

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে এই সিন্ডিকেটের জাল সারা দেশব্যাপী বিস্তৃত। এদের নেটওয়ার্ক অনেক শক্তিশালী। এই সিন্ডিকেট দিনে দিনে লুটতরাজের আখড়ায় পরিণত করছে পুরো অধিদপ্তরকে! স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আনুমানিক ৬০ হাজার সাধারন কর্মকর্তা ও কর্মচারী হাতে গোনা এই কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে কার্যত জিম্মি হয়ে আছে। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। 

উল্লেখ্য, মাঠপর্যায় হতে টাকা সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে, টাকা প্রদান করতে দেরি করলে এবং চুক্তি অনুযায়ী না প্রদান করলে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লেনদেন সংক্রান্ত কিছু অডিও রেকর্ড 'দ্যা ফিন্যান্স টুডে'র বিশেষ অনুসন্ধানী টীমের কাছে এসে পৌছেছে।

এসকল কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের কারণে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সুনাম ক্ষুন্ন হতে হতে তলানিতে এসে ঠেকেছে।

সম্প্রতি 'দ্যা ফিন্যান্স টুডে'র বিশেষ অনুসন্ধানী টীম সারাদেশে এই সিন্ডিকেটের প্রভাবশালী বেশ কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে গোপন অনুসন্ধান চালিয়ে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করেছে। আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদনে সেসব বিষয়ে আলোকপাত করা হবে।

জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে যেকোন প্রকার বরাদ্দ বা কেনাকাটা অথবা বদলী বা পদোন্নতির ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের সদস্যরা ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে থাকে। শুধু তাই নয়, মাঠ পর্যায়ে সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত যেকোন সুবিধা বা ভাতা পেতেও এই সিন্ডিকেটকে দিতে হয় ঘুষ। আর এভাবে এই সিন্ডিকেট মাঠ পর্যায় থেকে শুধুমাত্র উৎকোচ গ্রহন করেই হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে সমিতি গঠনের পর হতেই সমিতির শীর্ষ দুই নেতা কায়সার-মাজহার নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারীদের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। দুইজনই অর্থ ইউনিটের ফিল্ড সার্ভিস শাখায় কর্মরত থাকায় সারাদেশে আর্থিক দায়িত্বের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা সংগ্রহ করে থাকেন।

এতে করে মাঠ প্রশাসনের ভেতরে রয়েছে চরম অসন্তোষ। এর প্রভাবে মাঠ পর্যায়ে সরকারের কার্যক্রমে বিরাজ করছে স্থবিরতা।

একাধিক সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ২০১১ সাল হতে তৃনমূলে দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে সরকার মোটরসাইকেল বরাদ্দ দেয়। এই মোটরসাইকেল বরাদ্দের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি হয় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে। জানা গেছে, এসব মোটরসাইকেল বরাদ্দ এবং তা রেজিস্ট্রেশনের জন্য মোটরসাইকেল প্রতি বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কর্মচারী কল্যান সমিতির সভাপতি মোঃ কায়সার হোসেন এবং মহাসচিব মোঃ মাজহারুল ইসলাম ১০ হাজার টাকা করে গ্রহণ করে। এই পর্যন্ত ৪৮০টি উপজেলায় মোটর সাইকেল বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এতে কায়সার ও মাজহারের সংগ্রহ ৪৮০০০০০ (আটচল্লিশ লক্ষ টাকা)।

প্রথম পর্যায়ে জেলা প্রতি ২/৩ টি মোটর সাইকেল বরাদ্দের জন্য আসে। অর্পযাপ্ত বরাদ্দ আসায় কোন উপজেলা হতে চাহিদা দিলে জানিয়ে দেওয়া হয় আপনাকে দেওয়া যাবে না। এটি অন্য উপজেলার জন্য বরাদ্দ; অর্থাৎ মোটর সাইকেলগুলো পর্যায়ক্রমে বরাদ্দ হওয়ায় আগে ঘুষ প্রদান না করলে অন্য উপজেলায় দিয়ে দেওয়া হবে মর্মে সংশ্লিষ্ট উপজেলাকে জানায়। তখন বাধ্য হয়ে তারা ঘুষ প্রদান করে।

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নয়ন খাতের ফার্নিচার বরাদ্দ দেওয়ার জন্য ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে প্রদান না করলে তারা দুইজন কোন উপজেলায় বরাদ্দ প্রদান করেনা। জানিয়ে দেয় টাকা নেই, কারন উন্নয়নখাতে পর্যাপ্ত বাজেট থাকেনা, তাই যারা ঘুষ প্রদান করে শুধুমাত্র তাদেরই ফার্নিচার বরাদ্দ প্রদান করা হয়।

মেইল ব্যাগ, এ্যাপ্রোন ও ছাতা ক্রয়ের জন্য মাঠ পর্যায়ে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তা অপ্রতুল হওয়ায় বরাদ্দপ্রাপ্ত উপজেলায় বলা হয় আপনারা বরাদ্দের টাকা তুলে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেন, ব্যাগ, এ্যাপ্রোন এবং ছাতা আমরা সরবরাহ করব। এইভাবে কায়সার এবং মাজহার নিজেরাই ঠিকাদার সেজে নিম্নমানের ছাতা, এ্যাপ্রোন এবং ব্যাগ সরবরাহ করে সম্পদের পাহাড় গড়েছে।

যদি তাদের কাছ থেকে ছাতা, এ্যাপ্রোন ও ব্যাগ সংগ্রহ করা না হয় তাহলে পরবর্তীতে তাদেরকে বরাদ্দ প্রদান করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে থাকে।

ভূমি উন্নয়ন করের টাকা উপজেলায় দেয়ার ক্ষেত্রেও ঘুষ ছাড়া দেওয়া হয় না। ঘুষ না দিলে বরাদ্দ নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে উপজেলা প্রতি ৫ থেকে ১২ হাজার টাকা গ্রহণ করে থাকে স্ব-ঘোষিত সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক।

পরিবহন ব্যয় এবং স্যাটেলাইট ক্লিনিক খাতে এইদুই ব্যক্তিকে চাহিদা মোতাবেক ঘুষ প্রদান না করলে বরাদ্দ পাওয়া যায় না। উন্নয়ন বরাদ্দ হওয়ায় ও বরাদ্দ কম থাকায় যারা ঘুষ প্রদান করে তাদেরকে বরাদ্দ প্রদান করা হয় এবং যারা ঘুষ প্রদান করে না এদেরকে বরাদ্দ প্রদান করা হয় না।

নৌকা ভ্রমন ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে রয়েছে বড় ধরনের অনিয়ম। ঘুষ প্রদান না করলে নৌকা পরিবহন ভাড়া প্রদান করা হয় না। এ ক্ষেত্রে যে সমস্ত এলাকায় কর্মচারীরা নৌকায় ভ্রমন করে বা দূরদুরান্তে যাওয়া আসা করে, সে সমস্ত এলাকায় অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন হলেও উপজেলা প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ প্রদান না করলে মাজাহার বরাদ্দ প্রদান করে না।

বকেয়া বেতন ভাতা, ভ্রমনভাতা ও রাজস্বখাতের ক্ষেত্রে রয়েছে বড় ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি। রাজস্ব বিভাগের ফার্নিচার ক্রয়ের জন্য সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য আজিজুর রহমানকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করতে হয়। আজিজুর রহমানের বিকাশ নাম্বার ০১৭৮০১৭৬৬৬৯ যেটি সবসময় বন্ধ থাকে। সে টাকা উত্তোলন করে আবার মোবাইলটি বন্ধ করে রাখে। সূক্ষ্মভাবে এই নাম্বারের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে থাকে।

রাজস্ব খাতে স্থায়ী পদ্ধতি গ্রহিতাকে যে পরিমাণ ভাতা প্রদান করা হয় সেখানেও গ্রাহক প্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা না দিলে বরাদ্দ প্রদান করা হয় না।

কম্পিউটার যন্ত্রপাতি খাতে বরাদ্দের প্রয়োজন হলে ঘুষ ছাড়া বরাদ্দ প্রদান করা হয় না।
কর্মচারীদের লাম্প গ্রান্ট প্রয়োজন হলে বরাদ্দের জন্য আজিজ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহন করে থাকে।

তিন বছর পরপর কর্মচারীদের শান্তি বিনোদন ভাতা নিতে গেলে পড়তে হয় বিড়াম্বনায়। এক্ষেত্রে উপজেলা প্রতি আজিজুর রহমানকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা প্রদান না করলে পাওয়া যায় না বরাদ্দ।

অনিয়ম ও দূনীতিতে সিদ্ধহস্ত এই সিন্ডিকেটের আরেক সক্রিয় সদস্য বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কর্মচারী কল্যান সমিতির সহ-সভাপতি মো; শওকত আলী।

শৃঙ্খলা শাখায় কর্মরত হওয়ায়, শওকত আলী সারাদেশের প্রায় ২৮ হাজার কর্মচারীর ফাইল নিয়ন্ত্রন করে থাকে। এক্ষেত্রে কোন একটি অভিযোগ আসলে শুরু হয় তার খেলা। তিলকে তাল বানিয়ে জনপ্রতি দুই লক্ষ থেকে তিন লক্ষ টাকা গ্রহন করে থাকে। জনাব শওকত হোসেন কায়সার ও মাজহার এর কমিটির সহ-সভাপতি হওয়ায় প্রচন্ড প্রভাব বিস্তার করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে নির্বাচন না হওয়ায় তারা অনিয়ম ও দূনীতির জন্য স্ব-ঘোষিত নেতা সেজে বসে আছে। খবর নিয়ে জানা যায় নির্বাচন হলে ভোট শূন্য হয়ে যাবে তাই তারা নির্বাচনে আসতে চায় না। তদুপরি জনাব মোঃ মাজাহার হোসেন প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করে এবং বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার নিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে থাকে।

পিছিয়ে নেই প্রশাসন ইউনিটের কায়সার ও মাজহারের আরেক সহযোগী অফিস সহকারী সারোয়ার হোসেন। অধিদপ্তরের সকল ষ্টাফ এবং গুরুত্বপূর্ন কর্মচারীদের ফাইল তার কাছে থাকায় যাবতীয় বদলী, স্থায়ী করন ও অন্যান্য কাজের জন্য ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না।

কায়সার ও মাজহারের সহযোগিতায় বদলী ও নিয়োগ বানিজ্য করে সারোয়ার হোসেন হাতিয়ে নিয়েছে কোটি টাকা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভূক্তভোগী কর্মচারী জানান, এই পর্যন্ত কায়সার, মাজহার ও শওকত এর কাছে কোন একজন কর্মচারী সহযোগীতা চেয়েছেন এবং তা পেয়েছেন এমন নজির নেই। শুধুমাত্র একটি সাইনবোর্ড ব্যবহার করার জন্য তারা সমিতি করে। এই সাইনবোর্ড ব্যবহার করেই তারা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ নিয়োগ বানিজ্য করে এসেছে।     

বিপুল অংকের অর্থের বিনিময়ে এই নিয়োগ বানিজ্য পরিচালনা করেছেন নিয়োগ পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভাগীয় নির্বাচন কমিটির সভাপতি ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) খান মো. রেজাউল করিমের নেতৃত্বে প্রশাসন ইউনিটের সিন্ডিকেট। আর এই কাজে নেপথ্যে মাস্টারমাইন্ড ছিলেন বহুল আলোচিত ইকোনমিক ক্যাডারের কর্মকর্তা আরিফুর রহমান শেখ। তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এপিএস থাকাকালীন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে নিয়োগ বানিজ্যের এই ছক আঁকেন। 

নিয়োগ বানিজ্যে সিদ্ধহস্ত বলে বিবেচিত খান মোঃ রেজাউল করিমকে অধিদপ্তরের অন্য উইং থেকে এনে পরিচালক (প্রশাসন) পদে বসানো হয়। এই কাজে অন্যতম সহযোগী ছিলেন স্বাস্থ্যখাতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসা বেঙ্গল সায়েন্টিফিক এন্ড সার্জিকেল কোম্পানির স্বতাধিকারী জাহের উদ্দিন সরকার। মোটা অংকের টাকা এই বদলীর পিছনে খরচ করা হয় যার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এই জাহের উদ্দিন সরকার।

নিয়োগ পরীক্ষায় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ও বিভাগীয় নির্বাচন কমিটির সভাপতি খান মো. রেজাউল করিম এবং অধিদপ্তরের কয়েকজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট ৪৬ জেলার বিভিন্ন পরীক্ষার্থীদের থেকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেন করেছেন।

অভিযোগ উঠেছে, এই চক্র প্রতি পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে দুই থেকে ৩ লক্ষ করে টাকা নিয়েছে। এছাড়াও এমন অনেক প্রার্থী রয়েছে যাদেরকে চুড়ান্ত নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা লেনদেন করা হয়েছে। চুড়ান্ত নিয়োগের আশ্বাস দেওয়া প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।

বিশ্বস্ত সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, একটি নিয়োগ পরীক্ষায় ১০৮০ জন চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে ৯৭২ জনকে অর্থের বিনিময়ে পাশ করিয়ে দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি পরীক্ষার্থী পরীক্ষার খাতা টাকার বিনিময়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের মাধ্যমে ওয়েমার বা টিক চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে আনুমানিক ৭-১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

অধিদপ্তরের বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরা চেক করলে দেখা যাবে কায়সার, মাজহার, অটো সাইদুর, আবরার ও শওকত আলী প্রায়শই নিয়োগের লিষ্ট নিয়ে ঘুরাঘুরি করে। এরা সবাই মিলে নিয়োগের তালিকা তৈরি করে। পরবর্তীতে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করিয়ে দেয়ার বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ টাকা মাঠপর্যায় থেকে সংগ্রহ করে অধিদপ্তরের উক্ত প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের কাছে প্রদান করে।

এই বিষয়ে পরিবার কল্যাণ অধিদপ্তরে এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব বরাবর অভিযোগ করা হয়। তথ্যপ্রমাণসহ দুর্নীতি দমন কমিশনেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এতোসব অভিযোগ আর অনিয়ম ও অসংখ্য গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরও এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? এই প্রশ্ন এখন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সকলের মুখে মুখে বিরাজমান।  

সম্প্রতি এই বিষয়ে 'দি ফিন্যান্স টুডে'তে একাধিক অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এসব তথ্যবহুল প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর এই সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরতে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব আজিজুর রহমান কঠোর অবস্থান গ্রহন করেছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন অভিযোগ আমলে নিয়ে একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নজরদারি শুরু করেছেন। পাশাপাশি কাউকে কাউকে শাস্তিমূলক বদলীও করেছেন। একই সংগে কারো কারো বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

এর ফলে অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের মধ্যে বর্তমানে বিরাজ করছে বদলী আতংক। এমনকি অনেকে চাকুরী হারানোর শংকায় দিন কাটাচ্ছেন।

এই আলোচিত সিন্ডিকেটের প্রভাবশালী কয়েকজন কর্মকর্তা সম্প্রতি বদলী হলেও নিয়োগের অর্থ সংগ্রহকারী বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কর্মচারী কল্যান সমিতির স্ব-ঘোষিত সভাপতি মোঃ কায়সার হোসেন, কার্যকরী সভাপতি এ কে এম সাইয়েদুল আবরার, মহাসচিব মোঃ মাজহারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো; শওকত আলী সহ অন্যান্য নেতারা বহাল তবিয়তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর।

সমিতির সদস্যদের নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির কারনে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুরো প্রশাসনে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। কিন্তু মাঠ পর্যায় হতে হাজার কোটি টাকা আত্নসাতকারী এ চক্রটি বহাল তবিয়তেই আছে।

অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন যাবৎ একই চেয়ারে বসে থেকে সিন্ডিকেটের সদস্যরা শিকড় গেড়ে বসেছে। মজার ব্যাপার হলো, দীর্ঘ ১০-১৫ বছর ধরে এদের কেউ বদলী করতে পারছে না। উচ্চ মহল থেকে কোনো কারনে এদের বদলী করা হলেও নিজেদের স্বার্থের কারনে পুনরায় তাদের পূর্বের পদে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। এই বদলীও হয় শুধুমাত্র ঢাকার এক সেকশন থেকে অন্য সেকশনে। অধিদপ্তরের বাইরে এদের বদলী হয় না।

একাধিক ভুক্তভোগী 'দ্যা ফিন্যান্স টুডে'কে জানায়, এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের অধিদপ্তরের বাইরে বদলী না করার কারনে আনুমানিক ৬০ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীদের চাকুরী জীবন এদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে।

প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও এই সিন্ডিকেটের কাছে অসহায়। প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বাধ্য হয়েই এদের সাথে তাল মিলিয়ে গোজামিল দিয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত করছে।

এই অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে অদৃশ্য ইশারায় চলছে টেন্ডার বানিজ্যের তুঘলকি কারবার। কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন এবং কর্মকর্তাদের একটি অংশ মিলে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে গড়ে তুলেছে টেন্ডার বানিজ্যের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের সাথে যুক্ত অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। এদের টেন্ডার বানিজ্যের ডালপালা এখন দেশব্যাপী বিস্তৃত।

অধিকাংশ সময়ে এই সিন্ডিকেট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করেই নানা উপায়ে টেন্ডার বাণিজ্যের ফন্দি-ফিকির করে থাকে। এদের মূল কাজই হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের কেনাকাটার সুযোগ বের করে দরপত্র আহবান করা। আর এই দরপত্রের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দমত প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়ার বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা বাগিয়ে নেয়া।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমল থেকেই এখানে ঘাটে ঘাটে লুটপাটের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা পরিবর্তন হয় কিন্তু লুটেরা সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ হয় না। বরং ঘাপটি মেরে থাকা দুর্নীতিবাজরা নতুন করে লুটপাটের মহোৎসবে মেতে ওঠে। এই অধিদপ্তরে সারা বছরই চলে কেনাকাটার নামে টেন্ডার বাণিজ্য। এক্ষেত্রে লাখ লাখ টাকা লেনদেনের বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট।

এই সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের যাবতীয় টেন্ডার কাজ নিয়ন্ত্রণ করছে। সিন্ডিকেট এতটাই বেপরোয়া যে, নিয়মনীতি—আইনকানুন পরোয়া করে না। ইউনিয়ন পর্যায়ে, পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক, নতুন ভবন নির্মাণ ও মেরামতের কাজে সিডিউলবহির্ভূত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে তদারকি চলে ঢিমেতালে। বিভিন্ন কেনাকাটা, নির্মাণ ও উন্নয়নমূলক কাজে টেন্ডার, পুনঃ টেন্ডার, পরীক্ষা, যাচাই-বাছাইসহ নানা অজুহাতে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণের ব্যাপারেও অভিযোগ আছে।

এখানেই শেষ নয়। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের লজিস্টিক শাখায় চলছে লুটপাটের মহোৎসব।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, লজিস্টিক শাখায় শত শত কোটি টাকার ঔষধ, ইমপ্ল্যান্ট, কনডম, সুখী বড়ি, স্বল্প-মাঝারি-দীর্ঘ মেয়াদী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ইনজেকশন, কপার টি, ওটি টেবিল, ওটি লাইট, জেনারেটর, ল্যাপটপসহ নানারকম যন্ত্রাংশ এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় করে থাকে।

আর এসব সামগ্রী ক্রয়ে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে থাকে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। পাশাপাশি এসব গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী বরাদ্দের ক্ষেত্রেও অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। ঘুষ না পেলে এসব সামগ্রী বরাদ্দ না দিয়ে ফেলে রাখা হয়।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, লজিস্টিক শাখায় প্রায় ২০ লাখ ইনজেকশন, কোটি কোটি টাকার ঔষধ, জন্ম৷ নিয়ন্ত্রণ বড়ি এবং ইনজেকশন এই সিন্ডিকেটের কারনেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাবে।

অন্যদিকে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ক্রয় করার কারনে কিছু কিছু ওটি টেবিল আর লাইট ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে বিভিন্ন ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র এবং মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের লজিস্টিক শাখায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ক্রয়ে যে পরিমান অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে; তা এক কথায় অকল্পনীয়। লজিস্টিক শাখায় চলমান এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে বিস্তারিত পরবর্তী প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হবে।

এদিকে, সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে চলমান নানা অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয়ে 'দ্যা ফিন্যান্স টুডে'তে একের পর এক তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ।

ইতোমধ্যে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের ব্যাপারে প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহন শুরু হয়ে গেছে। আর সরকারের ঊর্ধতন মহলের এই কঠোর অবস্থানের ফলে রীতিমতো আতংকিত দুর্নীতিবাজ চক্রের সবাই। স্বপদে বহাল থাকার জন্য সিন্ডিকেটের সদস্যরা উচ্চ মহলে তদবির ও দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছে।

তবে আশার কথা হচ্ছে, দেরীতে হলেও টনক নড়েছে মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের। বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যাওয়ার আগেই দুর্নীতিবাজ এই চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় পদক্ষেপ নেয়া শুরু হয়েছে। এখন চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়; সেটাই দেখার অপেক্ষায় সবাই।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা