April 29, 2024, 8:02 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2023-11-12 19:00:01 BdST

নির্বাচনের তারিখ: অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন রাষ্ট্রপতি


নির্বাচন কমিশন স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে দিয়েছে স্বাধীনতা। আর সেই স্বাধীনতার প্রতি সম্মান জানিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির এই ঔদার্য, সংবিধানের প্রতি তার শ্রদ্ধাবোধ এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতার প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি নির্বাচন কমিশনের সকল সদস্যকে মুগ্ধ করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা এ নিয়ে আলোচনা করছেন। 

গত ৯ নভেম্বর মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনের অন্য সদস্যরা। সাধারণত রেওয়াজ হল এই সময় নির্বাচন কমিশনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য কয়েকটি তারিখ বলেন এবং নির্বাচন কমিশন তাদের কমিশনের সভায় এই তারিখগুলির মধ্য থেকে একটি তারিখ বাছাই করে নেয়। অতীতের সবগুলো নির্বাচনে একইরকম ভাবে তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।

গত ৯ নভেম্বর যখন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা সাক্ষাৎ করতে যান, তখনও প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতিকে বলেন, তার পছন্দের কোন তারিখ আছে কি না বা তিনি এই ব্যাপারে কোন পরামর্শ দিতে চান কিনা? সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি হলেন রাষ্ট্রের অভিভাবক এবং প্রথম ব্যক্তি। কাজেই তার ইচ্ছা অনিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ বলে নির্বাচন কমিশনের এই ধরনের একটি রীতি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ছিল। কিন্তু মহামান্য রাষ্ট্রপতি সেই রীতি ভাঙলেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি তাদেরকে জানালেন যে, কমিশন একটি সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। নির্বাচনের তারিখ কীভাবে নির্ধারিত হবে সেটি কমিশনের বৈঠকে হওয়া উচিত। নির্বাচন কমিশন তাদের নির্ধারিত বৈঠকে বসে এই তারিখ চূড়ান্ত করবেন বলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের বলেছে যে, আমার কিছু সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে। আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে একটি নতুন সরকার গঠনসহ নতুন নির্বাচনের সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

তিনি বলেছেন যে, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে আমি প্রত্যাশা করব যে, আপনারা যে তারিখ নির্ধারণ করবেন এই ২৯ জানুয়ারি মাথায় রেখেই করবেন। আমরা যেন কোনও সাংবিধানিক সংকটে না পরি। 

নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল বিভিন্ন সূত্র বলছে, মহামান্য রাষ্ট্রপতির এই দিকনির্দেশনায় তারা মুগ্ধ হয়েছেন। এর আগে কখনোই কোনো রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার ব্যাপারে এতটা উদারতা দেখাননি। 

নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট একজন বলেছেন যে, এর ফলে নির্বাচন কমিশন যে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং তাদের কাজের ব্যাপারে যে কেউ হস্তক্ষেপ করছে না, এটি আরেকবার প্রতিষ্ঠিত হল। শুধু তাই নয়, যারা নির্বাচন কমিশনের স্বাতন্ত্র্য এবং ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তাদের জন্য এটি একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থিত থাকল।

একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, এর ফলে আমরা আরও সাহসের সঙ্গে এবং স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারব।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি আসলে সকলের জন্য একটি অনন্য নজির স্থাপন করলেন। এর ফলে আমাদের জন্য নির্বাচন পরিচালনার কাজটি অনেকটাই সহজ হয়ে গেল। কারণ মহামান্য রাষ্ট্রপতি যেখানে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন, সেখানে আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আর কোন পিছুটান থাকল না।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা