May 14, 2024, 8:41 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-01-01 21:41:09 BdST

বিদায়ী বছরে সেরা চরিত্র২০২৪-এ আলো ছড়াবেন শেখ হাসিনা


সদ্য বিদায়ী বছরে শেখ হাসিনাই ছিলেন সবচেয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তাকে ঘিরেই বছরজুড়ে ছিল বিরোধীদের আন্দোলন আর নানা রকম হুঙ্কার, চোখ রাঙানি এবং সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন। সেই পালে হাওয়া দিয়েছে কোনো কোনো আন্তর্জাতিক মহলও। যা শেখ হাসিনা একাধিকার প্রকাশ্যে বলেছেন।

চলতি বছর যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিবিসির ইয়ালদা হাকিমের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো আমাকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না বলেই বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে একটি নতুন মেরুকরণ হতে যাচ্ছে সেই মেরুকরণও শেখ হাসিনাকে ঘিরেই। 

বিদায়ী বছরে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ছিল উল্লেখ করার মতো। তারা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার মতোও পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।

তবে এ ব্যাপারে শেখ হাসিনা বরাবরের মতোই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নগ্ন হস্তক্ষেপের বিপক্ষে সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। এছাড়াও সারা বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে স্পষ্ট ভাষায় সমালোচনা করেছিলেন। এ রকম পরিস্থিতিতে বিরোধী শিবিরগুলো নিশ্চিত হয়েছিল যে, এবার আর যাই হোক শেখ হাসিনা সরকারের পতন নিশ্চিত। আর এ রকম প্রত্যাশার জায়গা থেকেই বিরোধী শিবির থেকে বারবার সরকার পতনের আল্টিমেটাম দেওয়া হচ্ছিল। সরকারের সময় শেষ বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিল।

অনেকে কূটনীতিক বিশেষজ্ঞও ধারণা করেছিলেন যে, এবার হয়তো শেখ হাসিনা কোনো ভাবেই রক্ষা পাবেন না। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশ সরকারের কিছু নীতি নিয়ে সমালোচনায় মুখরিত ছিল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বিভিন্ন ভাবে বিবৃতি দিতো যা অনেকাংশে বিএনপি সহ বিরোধী শিবিরের অনুকূলে চলে যেত। এ রকম বাস্তবতায় সবার মধ্যে ধারণা জন্ম নেয় যে, বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলের সম্পর্কের হয়তো টানাপোড়েন চলছে কিংবা অদূর ভবিষ্যেতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মহলে একঘরে হয়ে যেতে পারে।

কিন্তু সমস্ত শঙ্কা আর সংশয় বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার সাথে বাংলাদেশের সঙ্গে কারো যে কোনো টানাপোড়েন আদৌ ছিল না সেটি তিনি প্রমাণ করেছেন।

জি-২০ এর সদস্য না হয়েও তিনি এবার সন্মেলনে বিশেষ সম্মান পেয়েছেন। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার সঙ্গে সন্মেলনের ফাঁকে ফাঁকে বৈঠক করেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের ম্যাজিকের গল্প শুনেছেন শেখ হাসিনার কাছ থেকে।

উল্লেখ্য যে, এই সন্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজে শেখ হাসিনার সঙ্গে সেলফি তোলার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং সেলফি তোলেন। যা জো বাইডেনের সঙ্গে শেখ হাসিনার আন্তরিক সম্পর্ককেই নিদের্শ করে বলে অভিমত কূটনীতিক বিশ্লেষকদের।

শেখ হাসিনা সরকারকে নিয়ে যখন বিভিন্ন মহলে নানা রকম মূখরোচক কথা উচ্চারণ হচ্ছিল ঠিক সেই সময়গুলোতে শেখ হাসিনা একাধিক আন্তর্জাতিক ফোরামে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন শুধু বাংলাদেশের উন্নয়নের ম্যাজিকের গল্পগুলো বলতে।

তিনি অক্টোবরে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন এর আমন্ত্রণে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে সফর করেন। গত মে মাসে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাসের আমন্ত্রণে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তর সফর করেন। নির্বাচনী বছরে ইইউ সদর দপ্তর, বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তর এবং জি-২০ সন্মেলনে আমন্ত্রিত হওয়াকে শেখ হাসিনার পার্সোনাল ডিপ্লোমেসির চমক বলেই ব্যাখ্যা করছেন কূটনীতিক বিশ্লেষকরা। 

কূটনীতিক বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, এখানেই শেষ নয়, ২০২৪ সালেও আলোচনায় থাকবেন শেখ হাসিনা। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি শেষ পর্যন্ত অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তাহলে এই নির্বাচনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি যেমন সংকটের মুখে পড়বে না তেমনি বিশ্বে শেখ হাসিনার অবস্থান বিশ্ব নেতা হিসেবে আরও পাকাপোক্ত হবে সেটা বলাই বাহুল্য। সারা বিশ্বে তিনি দ্যুতি ছড়াবেন।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা