May 19, 2024, 3:09 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-01-06 00:52:45 BdST

ছোট দলের বড় নেতাদের কী হবে?


এবার নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন ছোট দলের বড় নেতারা। ছোট দলের এই বড় নেতারা আসলে নির্বাচনে কী করবেন? তাদেরকে কি প্রভাব বিস্তার করে জিতিয়ে আনা হবে? নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তারা কতটা ভালো করবেন? এই প্রশ্ন এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

নির্বাচনে যেভাবে লড়াই হচ্ছে, সেই লড়াইয়ে ছোট দলের বড় নেতাদের জয় ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ছোট দলের নেতাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং সেখানে নির্বাচনে একটি বড় ধরনের মেরুকরণ ঘটছে। এর ফলে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের মিত্র এবং অন্যান্য ছোট দলের নেতাদের জয় কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।

এবারের নির্বাচনে ১৪ দলের শরিকদের অন্যতম ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বরিশালের একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই আসনে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার অবস্থা ভালো না। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন এবং প্রায় অসহায় অবস্থায় একাকী নির্বাচনী প্রচারণা করছেন রাশেদ খান মেনন। তার কর্মী সমর্থকও উল্লেখযোগ্যভাবে নেই। ফলে এই নির্বাচন বৈতরণী পার হওয়া তার জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

একই অবস্থা ১৪ দলের অন্যতম শরিক জাসদের হাসানুল হক ইনুর। হাসানুল হক ইনু এই নির্বাচনে কুষ্টিয়ার একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং সেখানে আওয়ামী লীগের একটা বড় অংশ তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এই নির্বাচনে যদি শেষ পর্যন্ত ইনু জয়ী হন তাহলে সেটা হবে তার একক জনপ্রিয়তা এবং শক্তিতে। সেটি তিনি পারবেন কিনা তা দেখার বিষয়।

১৪ দলের শরিক ছাড়াও একদা মহাজোটের শরিক বিকল্পধারার মাহী বি চৌধুরীও মুন্সীগঞ্জে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। এই অঞ্চলে আগে চৌধুরী পরিবারের যে ঐতিহ্য এবং আধিপত্য ছিল তা এখন অনেকটাই ম্রিয়মাণ। এই অবস্থায় মাহী বিকল্পধারার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন বৈতরণীতে কতটুকু সাফল্য অর্জন করবেন সেটি নিয়ে অনেকের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী নির্বাচন করছেন টাঙ্গাইল থেকে। এই আসনেও তিনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন এবং এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে তাকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

এবারের নির্বাচনে অনেক বড় আশা দিয়ে শুরু করেছিল তৃণমূল বিএনপি। তৃণমূল বিএনপিতে নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছিল এবং সেই পরিবর্তনের পরে তারা এবার নির্বাচনে বিরোধী দল হতে যাচ্ছে এমন গুঞ্জনও ছিল। কিন্তু নির্বাচনের মাঠে তৃণমূল বিএনপির মাত্র দু জন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে দেখা যাচ্ছে। বাকিরা মিয়্রমাণ, নিষ্ক্রিয়। যে দুজন নেতাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তাদের একজন শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি এবার নির্বাচনে বিজয়ী হবেন এমনও কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু তার দলের যে সাংগঠনিক অবস্থা, এলাকায় যে অবস্থান তাতে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি আদৌ জয়ী হতে পারবেন কি না সে নিয়ে অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। 

তবে বিভিন্ন মহল মনে করছে যে, শমসের মবিনকে জিতিয়ে আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটা চেষ্টা হবে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের অবস্থানকে সম্পূর্ণ অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, কোন প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার দায়িত্ব নেওয়া হবে না।

একই রকম অবস্থা হচ্ছে তৃণমূল বিএনপির আরেক নেতা তৈমুর আলম খন্দকারের ক্ষেত্রে। তিনিও এই নির্বাচনে ভালো করবেন কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে নির্বাচনী এলাকায় তিনি বড় ধরনের একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ সৃষ্টি করতে পেরেছেন।

এছাড়াও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু রাজনৈতিক দলের নেতারা নির্বাচনের মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কী হবে তা ভোটের ফলাফলেই জানা যাবে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা