May 19, 2024, 3:09 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-01-06 01:08:38 BdST

পরাজয়ের শঙ্কায় আওয়ামী লীগের অর্ধ শতাধিক প্রার্থী


এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৬২ আসনে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ করেছে। প্রথমে ২৯৮ টি আসনে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ।

এরপর ১৪ দলের শরিকদের জন্য ৭ টি আসন, পরবর্তীতে ২৬ টি আসন জাতীয় পার্টির সাথে সমঝোতা করেছে যেখান থেকে নৌকা প্রতীক তুলে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও শেরিফা কাদেরকে শেষ মুহূর্তে ঢাকার একটি আসন উপহার দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ওই আসন থেকে নৌকা প্রার্থীকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী শাম্মী আহমেদ শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে পারছেন না। ফলে ২৬২ আসনে আওয়ামী লীগকে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে।

তবে এই ২৬২ আসনের মধ্যে অন্তত ৫০ টি আসনে আওয়ামী লীগ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন এবং পরাজয়ের শঙ্কায় আছেন। আর এই সমস্ত পরাজয়ের শঙ্কা সৃষ্টি করেছেন আওয়ামী লীগেরই বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি শেষ পর্যন্ত অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাহলে ৫০ থেকে ৬০ টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বড় ধরনের পরাজয়ের মুখোমুখি হতে পারেন অথবা কঠিন চ্যালেঞ্জ করে তাদেরকে বিজয়ী হতে হবে। এখন দেখার বিষয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কিনা। 

আওয়ামী লীগ সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মধ্যে যে সমস্ত জেলা গুলোতে আছে তার মধ্যে ফরিদপুর অন্যতম। আওয়ামী লীগের প্রাথমিক নির্বাচনী হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ফরিদপুরের ৪ টি আসনের মধ্যে একটি আসনেও আওয়ামী লীগের নিশ্চিত জয়ের কোন সম্ভাবনা নেই। বরং পরাজয়ের শঙ্কা রয়েছে। এই ৪ টি আসনে অন্তত দুটিতে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং নির্বাচনী পরিচালনার কো চেয়ার কাজী জাফরউল্লাহ এবং আওয়ামী লীগের আরেকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে নির্বাচন করছেন।

এছাড়াও গাজীপুরে আওয়ামী লীগের অন্যতম সিনিয়র মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হচ্ছেন স্বতন্ত্র এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে। সেখানে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম আ ক ম মোজাম্মেলের বিদ্রোহী বিরোধী প্রার্থীকে প্রকাশ্য সমর্থন দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

আওয়ামী লীগের আরেকজন প্রভাবশালী নেতা এবং ঢাকা-১ আসনের প্রার্থী সালমান এফ রহমানও জাতীয় পার্টির সালমা ইসলামের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি পড়েছেন। এখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চাঁদপুরের আসন থেকে শিক্ষামন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনিও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি রয়েছেন এবং তিনিও তার আসনে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর স্বতন্ত্র প্রার্থীর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন এবং এই আসনে তৃণমূল বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকারও একজন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন।

শিল্প মন্ত্রী হুমায়ুন মজিদও তার আসনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে। আওয়ামী লীগের আরেক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এডভোকেট শ. ম রেজাউল করিমও তার আসনে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আব্দুল আউয়ালের কাছে এবং আউয়াল এবার নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য সাঈদী কার্ড খেলছেন এবং ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, বেসামরিক বিমান চলাচল প্রতিমন্ত্রী সহ বেশ কিছু মন্ত্রী তাদের স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকায় কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১০৮টি আসনে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী স্বতন্ত্র বিদ্রোহী প্রার্থীরা হয়েছে। এই ১০৮টি আসনের মধ্যে অন্তত ৫০ থেকে ৬০টি আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের জয়ী হওয়ার জন্য কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের ফলাফল কী হয়?

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা