May 3, 2024, 12:27 am


বিশেষ প্রতিবেদন:

Published:
2024-03-07 12:05:57 BdST

গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তরে আধিপত্য বিস্তার করে আছে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটনবনিযুক্ত সচিব কে প্রথম থেকেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনে উদ্যোগী করতে হবে


গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নব নিযুক্ত সচিব নবীরুল ইসলাম । জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব থেকে পদোন্নতি দিয়ে সচিব পদে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পদায়ন করার পর গণপূর্ত অধিদপ্তর, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও গৃহায়ন অধিদপ্তর জুড়ে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয় । কারণ বর্তমান সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের আগামী ৯ মার্চ তার চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ শেষ হবে। অবসরে যাওয়ার ৩দিন পূর্বে বর্তমান সচিবের ফ্রান্স যাত্রা নিয়ে ও হচ্ছে ব্যাপক আলোচনা। এ বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন অবসরে যাওয়ার ৩ দিন পূর্বে তার বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়া ঠিক হয়নি।গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াসিউদ্দিন “বিল্ডিংস এন্ড ক্লাইমেট গ্লোবাল ফোরাম” শীর্ষক সম্মেলনের যোগ দিতে ফ্রান্সে গিয়েছে। ৭ ও ৮ মার্চ ফ্রান্স সরকার ও জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) আয়োজনের প্যারিসে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

নতুন গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব একজন সাহিত্য ও সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিত্ব। তিনি একজন কবি হিসেবে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে।

এদিকে মন্ত্রণালয় ও তার অধিদপ্তর সমূহে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও সিন্ডিকেটের সদস্যদের মাঝে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে। দীর্ঘদিন যাবৎ গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর মাঝে এক ধরনের চাপা বিরোধ কাজ করছে বলে গণমাধ্যমকে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়ে আসছে। অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট প্রকৌশলীগন সচিব ও প্রধান প্রকৌশলীর মাঝে দুরত্ব বলয় সৃষ্টির অসুস্থ প্রতিযোগিতা অধিদপ্তরের মাঝে কাজকর্মে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর একটি গ্রুপ পুরো অধিদপ্তরকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। উক্ত সিন্ডিকেটই মূলত প্রধান প্রকৌশলী ও সচিবের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিল তৎপর রয়েছে।

সরকারের চলতি মেয়াদে অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী গ্রুপ ও ঠিকাদার সিন্ডিকেট ব্যাপক চাপের মধ্যে পড়ে। উক্ত সিন্ডিকেট মন্ত্রী নিকট নিজেদের ক্ষমতাধর প্রমাণ করার জন্য ও ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণপূর্ত অধিদপ্তরে সিন্ডিকেট ভেঁঙ্গে দেয়ার কোন বিকল্প নাই। বিগত ৫ বছরে কোন কোন ঠিকাদার ও প্রকৌশলীগন গণপূর্ত অধিদপ্তরে আধিপত্য বিস্তার করে এসেছে তার তালিকা প্রণয়ন করে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। এছাড়াও দীর্ঘদিন যাবৎ একই চেয়ারে নির্বাহী প্রকৌশলী ও তত্ত্ববধায়ক ও প্রকৌশলীগণ দায়িত্ব পালন করার কারনে দুর্নীতির শিকড় গেড়ে বসে আছে। সরকারী চাকুরী বিধিমালা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৩ বছর একজন কর্মকর্তা এক চেয়ারে থাকার নিয়ম থাকলেও সর্বোচ্চ ৬ /৭ বছর পর্যন্ত একেক জন নির্বাহী প্রকৌশলী গুরুত্বপূর্ন জায়গায় পোস্টিং নিয়ে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে সিভিল ও ই-এম বিভাগগুলো।

কোন কোন প্রকৌশলী শত কোটি টাকার নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ রয়েছে। দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীগন এটাকে স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত করেছে।
মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ জমা পড়লেও ক্ষমতাধর সিন্ডিকেট তা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিচ্ছে। গণমাধ্যমে তথ্য প্রমাণ সহ ব্যাপক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও মন্ত্রণালয় অধিকাংশ প্রতিবেদন আমলে নিচ্ছে না। কারণ “সর্ষের মধ্যেই রয়েছে ভূত”

প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে ঘোষনা তা বাস্তবায়ন করতে হলে মেধাবী ও যোগ্যতা সম্পন্ন কর্মকর্তাদের কাজের মূল্যায়ন করতে হবে। অতি সম্প্রতি গণপূর্তের ই-এম বিভাগ- ৬ এর নির্বাহী প্রকৌশলী বিরুদ্ধে কাজ না করে বিল তুলে নেয়ার একাধিক তথ্য প্রমানসহ সংবাদ প্রকাশিত হলেও উক্ত ই-এম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয় নাই। স্বপদে বহাল রেখে কোন তদন্তই সুফল হয় বয়ে আনবে না।

এছাড়াও ঢাকা মহানগরের গনপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন জোন ও বিভাগ সমূহে একই অভিযোগ বিরাজমান। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় গৃহায়ন অধিদপ্তরে ও একই চিত্র। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত অনেক কর্মকর্তা কে ইদানিং গুরুত্বপূর্ন বিভাগে দায়িত্ব প্রদান করা হচ্ছে। এর ফলে সৎ ও নিষ্ঠাবান প্রকৌশলীগন গুরুত্বপূর্ন জায়গায় পদায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নব নিযুক্ত সচিব বিষয়গুলো গুরুত্ব অনুধাবনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন এমন প্রত্যাশা সকলের।

 

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা