April 28, 2024, 2:37 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-03-13 12:04:23 BdST

যেভাবে জলদস্যুরা বাংলাদেশি জাহাজ নিয়ন্ত্রণে নেয়


এক যুগ পর আবার সোমালীয় জলদস্যুদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’। মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে প্রায় অর্ধশত সশস্ত্র জলদস্যু। জাহাজের ২৩ বাংলাদেশি নাবিককেও জিম্মি করে রেখেছে তারা।

জলসদ্যুরা জাহাজটি নিয়ন্ত্রণের পর বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ খান অডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। জাহাজটির মালিকপক্ষের কাছে পাঠানো ওই অডিও বার্তায় উঠে এসেছে দস্যুরা কীভাবে জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

অডিও বার্তায় জাহাজটির প্রধান কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ খান বলেন, ‘জাহাজে তখন সকাল সাড়ে ১০টা। গ্রিনিচ মান সময় ৭টা ৩০ মিনিট (বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টা)। এই সময় একটা হাই স্পিডবোট আমাদের দিকে আসতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে আল্যার্ম দিই। আমরা সবাই ব্রিজে গেলাম। ক্যাপ্টেন স্যার আর জাহাজের দ্বিতীয় কর্মকর্তা ব্রিজে ছিলেন তখন। আমরা এসওএস (জীবন বাঁচানোর জরুরি বার্তা) করলাম। ইউকে এমটিওতে (যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন) যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। তারা ফোন রিসিভ করেনি। এরপর ওরা (জলদস্যুরা) চলে এল।’

অডিও বার্তায় আতিক উল্লাহ খান বলেন, ‘তারা (জলদস্যুরা) ক্যাপ্টেন স্যার ও দ্বিতীয় কর্মকর্তাকে ঘিরে ফেলল। আমাদের ডাকল। আমরা সবাই এলাম। এ সময় কিছু গোলাগুলি করল। সবাই ভয় পেয়েছিলাম। সবাই ব্রিজে বসে ছিল। তবে কারও গায়ে হাত দেয়নি। এ সময় একটা স্পিডবোটে আরও কয়েকজন চলে এল। এভাবে ১৫-২০ জন এল জাহাজটিতে। কতক্ষণ পর একটি বড় ফিশিং ভেসেল (মাছ ধরার নৌযান) এল। ওটা ছিল ইরানের মালিকানাধীন মাছ ধরার জাহাজ, যেটিকে এক মাস আগে তারা জিম্মি করেছিল। মাছ ধরার জাহাজটি দিয়ে তারা সাগরে জাহাজ খুঁজতেছিল। এখন ওই মাছ ধরার জাহাজ ছেড়ে দেবে। তবে সেটির জ্বালানি ফুরিয়ে গেছে। এখন আমাদের থেকে ডিজেল নিচ্ছে। আমাদের জাহাজটি থামিয়েছে তারা। জাহাজের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আমাদেরও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’

অডিও বার্তায় আকুতি জানিয়ে জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমাদের পরিবারকে একটু দেখবেন। সান্ত্বনা জানাবেন।’

অডিও বার্তার বিষয়ে কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অডিও বার্তা জাহাজের প্রধান কর্মকর্তার। তারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। নাবিকদের সুরক্ষাই তাদের সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার।’

বাংলাদেশি জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়া নিয়ে যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন (ইউকে এমটিও) তাদের ওয়েবসাইট ও এক্সে (সাবেক টুইটারে) বার্তা প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়, সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে এ ঘটনা ঘটেছে। দুটি নৌযানে (একটি বড় ও অপরটি ছোট) চড়ে জাহাজটির কাছাকাছি এসে জলদস্যুরা সেটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।

মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় জাহাজটিতে উঠে নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি। জাহাজটি চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা