April 29, 2024, 12:52 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-03-13 12:18:10 BdST

পাবনায় পেঁয়াজের প্রতি মনে কমেছে দেড় হাজার টাকা


দেশের সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলা পাবনায় ২৪ ঘণ্টায় প্রতিমনে ১ হাজার ২শ থেকে ১ হাজার ৫শ টাকা করে দাম কমেছে।

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার খবরে মঙ্গলবার ও সোমবার জেলার বড় পেঁয়াজের হাটে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা মন দরে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে।

এর আগে প্রতি মন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায়। স্থানীয় পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা স্বীকার করেছেন সিন্ডিকেটই পেঁয়াজের বাজার ওঠানামা করার জন্য দায়ী। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরের পর সিন্ডিকেটের ইশারাতেই হঠাৎ দাম নেমে গেছে।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, দেশের মোট পেঁয়াজ উৎপাদনের ২৬ থেকে ৩০ ভাগ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় পাবনায়। কিন্ত পেঁয়াজের রাজধানী খ্যাত সেই পাবনার হাট বাজারে পেঁয়াজের দাম ওঠানামা করে সিন্ডিকেটের ইশারায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এবছর পেঁয়াজের বাজার সব সময়ই চড়া ছিল। মৌসুমি পেঁয়াজ ওঠার আগে মূলকাটা পেঁয়াজ বাজারে এলে বাজার স্বাভাবিক হয়ে থাকে। কিন্তু এই বছর মূলকাটা পেঁয়াজের দামও ছিল সাধারণ ভোক্তার নাগালের বাইরে। ভোক্তারা অপেক্ষায় ছিলেন, মৌসুমি পেঁয়াজ উঠলে দাম কমবে। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই হালি পেঁয়াজ বা মৌসুমি পেঁয়াজের মনও ৪ হাজার টাকার উপরে বিক্রি হয়। কৃষকরাও বেশি মুনাফার আশায় অপোক্ত পেঁয়াজ খেত থেকে তুলে আনতে শুরু করেন।

বাজার সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, সিন্ডিকেটের কারণেই পেঁয়াজের দাম ওঠানামা করে থাকে। এ মাসের প্রথম দিকে একবার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির কথা প্রচার হলে পেঁয়াজের দাম মন প্রতি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২ শ টাকা কমে গিয়েছিল। দুদিন ওই অবস্থায় থাকার পর, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না হওয়ায় আবার পেঁয়াজের বাজার অস্থিরতা ফিরে আসে।

চলতি সপ্তাহে আবার ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার খবরে পেঁয়াজের বাজার নেমে গেছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে মন প্রতি ১ হাজার ২শ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা।

সোমবার ও মঙ্গলবার দেশের অন্যতম বড় পেঁয়াজের হাট বনগ্রাম, কাশিনাথপুর, পুষ্পপাড়া, সাঁথিয়া এবং সুজানগর হাটে ৩দিন আগে প্রতি মন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৪শ থেকে ২ হাজার ৫ শ টাকা মন দরে। অথচ ৩দিন আগে এসব হাটে প্রতি মন পেঁয়াজ ৪ হাজার ৩শ থেকে ৪ হাজার ৪শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পাবনা বড় বাজারে মঙ্গলবার প্রতি মন পেঁয়াজ ২ হাজার ৪শ থেকে ২ হাজার ৫শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পাবনার ঈশ্বরদীর আওতাপাড়া, সলিমপুরসহ বিভিন্ন স্থানে মৌসুমি নতুন পেঁয়াজ প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছে। পাবনা শহরে খুচরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ মঙ্গলবার বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দেরে।

পাবনা বড় বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, পেঁয়াজের বাজার ওঠানামা করে সিন্ডিকেটের ইশারায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের এতে করার কিছু নেই।

তারা জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখার খবরে সারা দেশে এবং পেঁয়াজের রাজধানীখ্যাত পাবনায় পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে বাড়ে। আবার পেঁয়াজ আমদানির খবরে একইভাবে দাম ১ দিনের ব্যবধানে কমে যায়। এসবই মধ্যস্বত্বভোগী ও সিন্ডিকেটের কারসাজি।

রাজধানী ও অন্য জেলা থেকে মঙ্গলবারও পাইকাররা এসে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ পাবনার হাটবাজার থেকে কিনে নিয়ে যান। কৃষি বিভাগ বলছে, এখনো চাহিদার তুলনায় পাবনায় পেঁয়াজ বেশি রয়েছে। কাজেই এখানে দাম বাড়ার কোনো কারণ নাই।

কৃষকরা জানান, এদিকে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় মাঠপর্যায়ে পেঁয়াজ চাষিরা লাভবান হন না। চাষিরাসহ তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় কৃষকের চেয়ে মধ্যস্বত্বভোগীরা বেশি লাভবান হয়।

কেননা, তারা মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে কম দামে পেঁয়াজ কিনে মজুত করে রেখে পরে বেশি দামে বিক্রি করেন। মৌসুমে ভালো দাম না পাওয়ায় কৃষক হন ক্ষতিগ্রস্ত।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত মৌসুমে জেলার ৯ উপজেলায় পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৭ লাখ ২০ হাজার ৯৮৫ টন। এ বছর আরও ১ লাখ টন বেশি উৎপাদন হয়েছে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা