April 27, 2024, 3:09 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-03-20 10:37:48 BdST

এক ডজন মামলা হচ্ছে বিদায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধেবিএসএমএমইউতে শতকোটি টাকার দুর্নীতি


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদায়ী উপাচার্য ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে দু’শত কোটি টাকারও বেশি দুর্নীতির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। আর এই অভিযোগগুলো নিয়ে এখন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাজ করছে। 

দুর্নীতি দমন কমিশন ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিদায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকমের অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণ জানতে পেরেছে। এই সমস্ত অভিযোগগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্মোহভাবে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আর এর ফলে অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ একাধিক দুর্নীতির মামলায় ফেঁসে যাচ্ছেন। উপাচার্যের দায়িত্ব শেষ করার পরপরই তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনের বারান্দায় ছোটাছুটি করতে হবে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। 

উল্লেখ্য, অনেক যোগ্য ব্যক্তি থাকার পরও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কনক কান্তি বড়ুয়ার পর উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ডা. শারফুদ্দিন আহমেদকে। ডা. শারফুদ্দিন আহমেদকে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া ছিল একটি চমক। প্রধানমন্ত্রী তাকে এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন যেন তিনি নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন এবং বিএসএমএমইউ’কে চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি সেন্টার এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তুলবেন।

কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে এসমস্ত অভিযোগের প্রায় পুরোটাই বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আসতে থাকে। একসময় বিএসএমএমইউ-এর দুর্নীতি এবং অনিয়মে প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ড বিরক্ত হন। দু’টি সংস্থাকে এই বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। দু’টি সংস্থা তদন্ত করে দেখে যে, শারফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ বাজারে রয়েছে বাস্তবে অভিযোগ তার চেয়ে বেশি। 

তার বিরুদ্ধে প্রধান পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে একটি হল নিয়োগ বাণিজ্য। টাকা ছাড়া বিএসএমএমইউ-তে কোন নিয়োগ হত না। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন কেনাকাটায় তার বাণিজ্য। তৃতীয়ত, পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাণিজ্য, চতুর্থত, শারফুদ্দিন আহমেদ একটি নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলেছেন, যে বাহিনী উপাচার্যের নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদাবাজি করত। পঞ্চমত, অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতা। 

এই অভিযোগগুলোর ব্যাপারে যখন দু’টি তদন্তকারী সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রদান করেন তখন প্রধানমন্ত্রী এসমস্ত অভিযোগগুলো তদন্ত করে যথাযথ বিহীত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপর থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন শারফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ‘স্যাডো ইনকোয়ারী’ বা ‘ছায়া তদন্ত’ করছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই তদন্তের মাধ্যমে ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের বিভিন্ন অভিযোগ গুলোকে সন্নিবেশিত করা হচ্ছে। 

২৮ মার্চ শারফুদ্দিন আহমেদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পর দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে ডাকতে পারে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

তার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে এখন প্রতিনিয়তই অভিযোগ দাখিল করা হচ্ছে। বিশেষ করে এড-হক ভাবে যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তাদের কাছ থেকে কি পরিমাণ অর্থ নেওয়া হয়েছে এবং কি পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ইত্যাদি বিস্তারিত অভিযোগ এখন দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা হচ্ছে। 

বিদায়ী উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ একরকম তোপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব থেকে বিদায় নিচ্ছেন। তার জায়গায় নতুন উপাচার্য হিসেবে ইতোমধ্যে সরকার নিয়োগ দিয়েছেন ডা. দ্বীন মোহাম্মদ নূরুল হককে। ডা. দ্বীন মোহাম্মদ আগামী ২৮ মার্চ অপরাহ্ণে বিএসএমএমইউ-এর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।       

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা