April 27, 2024, 2:47 pm


অনলাইন ডেস্ক:

Published:
2024-03-20 10:40:18 BdST

টিআইবি‘সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের তথ্য জমা বাতিল হলে দুর্নীতি বাড়বে’


সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা সংশোধন করে সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এটি সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ উদ্যোগের কঠোর সমালোচনা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের তথ্য জমা বাতিল হলে দেশের প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী জবাবদিহি থেকে দায়মুক্তি পাবে। পাশাপাশি দুর্নীতি সুরক্ষিত ও উৎসাহিত হবে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থাটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বিধান রহিত করে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের খসড়া সংশোধনী যাচাইয়ের পর এটি এখন প্রশাসনিক উন্নয়নবিষয়ক কমিটিতে পাঠানো হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদের হিসাব সরাসরি নিয়মিত জমা ও হালনাগাদের পরিবর্তে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে দেওয়া বার্ষিক আয়কর রিটার্ন থেকে নেওয়ার যে যুক্তি, বাস্তবে তা অর্থহীন। কারণ ‘আয়কর আইন, ২০২৩’ অনুযায়ী তা সম্ভব নয়। আইনের ৩০৯(২) ও ৩০৯(৩) ধারা অনুযায়ী কোনও কর্তৃপক্ষ কোনও সরকারি কর্মচারীকে এই আইনের অধীনে কোনও ট্যাক্স রিটার্ন, অ্যাকাউন্ট বা নথি উপস্থাপন, সাক্ষ্য বা প্রমাণ হিসাবে উপস্থাপনের আদেশ দিতে পারে না। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুর্নীতি বা বৈধ আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ আহরণের অভিযোগে কোনও ব্যক্তির আয়কর বিবরণী আদালতের নির্দেশ ছাড়া দেখতে পারবে না। ফলে জবাবদিহির মুখোমুখি হওয়ার বদলে এই সংশোধনীর মাধ্যমে দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মচারীরা নতুন সুরক্ষা পাবে।
সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বিধি বাতিলে অসাধু সরকারি কর্মকর্তাদের আরও বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হবে বলে উল্লেখ করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, সরকারি চাকরিজীবী (আচরণ) বিধিমালার প্রস্তাবিত সংশোধনী সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার ও শীর্ষ পর্যায়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা ঘোষণার ঠিক উল্টো। প্রথমে প্রতি বছর সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও সরকারি কর্মচারীদের অনীহার মুখে পরে তা শিথিল করে তা পাঁচ বছর পর পর দেওয়ার বিধান করা হয়। সেই বিধানও সঠিকভাবে পালনে অনাগ্রহ ছিল তাদের। চাকরির শুরুতে সম্পদের বিবরণী দিলেও পাঁচ বছর পর পর হিসাব হালনাগাদের বাধ্যবাধকতার গুরুত্বই দেন না সরকারি কর্মচারীরা। এখন এই বাধ্যবাধকতা সরিয়ে দেওয়ার অর্থ প্রকারন্তরে সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে উঠতে উৎসাহ দেওয়া। সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার মতো কোনও বিধান না থাকলে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে নির্ভয়ে দুর্নীতি ও এর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুযোগ বাড়বে। একইসঙ্গে প্রাপ্য সেবা পেতে সরকারি অফিসে ভোগান্তি বাড়বে জনগণের। অবৈধ অর্থ লেনদেন বহুগুণে বাড়বে এবং সুশাসিত সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিতের স্বপ্ন ব্যর্থ হবে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা