April 27, 2024, 4:41 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-03-21 07:16:12 BdST

সাবেক ১২ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু হচ্ছে?


আওয়ামী লীগ সরকার টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতা গ্রহণ করছে। গত ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে। এর আগে তিন মেয়াদে যারা বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রী ছিলেন এবং সরকারের ভিতর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের অনেকেরই দায়িত্ব পালনের সময়টি স্বচ্ছতার ছিল না। তারা নিজেদেরকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে পারেননি। আর এই কারণেই তাদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

গত তিন মেয়াদে এরকম অন্তত ১২ জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এই দুর্নীতির অভিযোগ এখন বিভিন্ন সংস্থাগুলো তদন্ত করছে। 

বর্তমান সরকার তার নির্বাচনী ইস্তেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি ঘোষণা করেছে। এই নীতির আওতায় দুর্নীতিবাজ যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আর এই কারণেই সাবেক এই সব মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগগুলো নতুন করে খতিয়ে দেখা শুরু হচ্ছে। এই অভিযোগ তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

যে এক ডজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে ২০০৯ থেকে ২০১৪ মেয়াদে মন্ত্রী ছিলেন এরকম অন্তত চার জন মন্ত্রী রয়েছেন। এই চারজন মন্ত্রীর মধ্যে আবার দুজন ২০১৪ থেকে ২০১৮ মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ২০১৪ থেকে ২০১৮ মন্ত্রিসভায় মোট চারজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে এবং সেটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এছাড়া ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সময়ে যে সমস্ত মন্ত্রীরা ছিলেন, তাদের চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে।

সর্বশেষ মন্ত্রিসভায় যারা ছিলেন, তাদের মধ্যে একজন অত্যন্ত ক্লিন ইমেজের মন্ত্রী ছিলেন। বিদেশে তার বিপুল সম্পদের তথ্য সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। আর এই সম্পদ তিনি বৈধ পথে উপার্জন করেছেন, দেশ থেকে পাচার করেননি এ বক্তব্য রেখে ওই সাবেক মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ব্যাপারে সরকারকে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই বিষয়টি নিয়ে সরকার এখন নীরবে তদন্ত করছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এছাড়াও ২০১৪ ও ১৮ মেয়াদে প্রতিমন্ত্রী থেকে ২০১৮ সালে পূর্ণমন্ত্রী হওয়া আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এবং তার পুত্রের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ আছে। মন্ত্রণালয়ে থাকা অবস্থায় মন্ত্রণালয়ের কাজ এবং মন্ত্রণালয়ের বাইরে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অভিযোগ রয়েছে। ওই মন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকায় একটি ভূমি অধিগ্রহণে মূল্যস্ফীতির ঘটনায় এখন তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মন্ত্রী, পুত্র এবং তার সাবেক এপিএস এর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এই তদন্তে একাধিক বিষয় সামনে এসেছে। এছাড়াও ২০০৯ সালের মন্ত্রিসভায় একজন গুরুত্বপূর্ণ পেশাজীবী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকারি কেনাকাটায় বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছিল। ওই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আগে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করেছিল, সেই তদন্ত এখন পুনরায় শুরু করা হয়েছে। ওই সময় গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগে দায়িত্বে থাকা একজন প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ এখন তদন্তের আওতায় পড়েছে।

২০১৪ থেকে ২০১৮ সালে যারা মন্ত্রী ছিলেন তাদের মধ্যে দুজন প্রভাবশালী হেভিওয়েট মন্ত্রীর মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি এখন তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মোট ১২ জন সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এরকম দুর্নীতির অভিযোগ এখন তদন্ত চলছে।

তদন্ত শেষে বুঝা যাবে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো আদৌ সত্যি নাকি এই অভিযোগগুলো নেহাতে তাদের বিরুদ্ধে ঈর্ষা পরায়ণ হয়ে করা হয়েছে। তবে দুর্নীতি দশন কমিশনের এবাধিক সূত্র বলছে, নির্মোহ ভাবে তদন্ত করা হবে এবং সরকার এব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি অনুসরণ করছে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা