May 20, 2024, 12:27 pm


বিশেষ প্রতিবেদক:

Published:
2024-05-09 13:00:12 BdST

১৫-২০% কমিশন বানিজ্য ও ভূয়া বিলে কোটি কোটি টাকা লোপাটগনপূর্তের ইএম কারখানা বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী ইউসুফের থাবায় তছনছ


গণপূর্তের ইএম কারখানা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইউসুফ। অত্যন্ত ক্ষমতাধর কর্মকর্তা ইউসুফের বিরুদ্ধে রয়েছে নানাবিধ অনিয়ম, দুর্নীতি,কমিশন,বানিজ্য ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কাজ ভাগাভাগি করে অর্থ লোপাটের অভিযোগ। তিনি অফিসে বসেন না। তার অফিসের কর্মচারীদের একটাই কথা স্যারকে তো আমরাই অফিসে পাই না আপনারা কিভাবে তার দেখা পাবেন। মো: ইউসুফ এর রয়েছে একটি শক্তিশালী আওয়ামী বিরোধী ঠিকাদার সিন্ডিকেট। মূলত: গনপূর্ত অধিদপ্তরে বিএনপি জামাত ঘরনার প্রকৌশলীদের নিয়ে যে সিন্ডিকেট ইউসুফ তার মধ্যে অন্যতম বলে জানা গেছে। নির্দিষ্ট কমিশন ছাড়া তিনি কোন কাজ করেন না তা “দ্য ফিনান্স টুডে” অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে। গনমাধ্যম কে তিনি এড়িয়ে চলেন। তিনি যেহেতু কমিশন ছাড়া কাজ করেন না তাই নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখেন এমন অভিযোগ একাধিক ভুক্তভোগীর। শুধু তাই নয় এ ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে একজন ঠিকাদার পাওনা আদায়ে থানায় অভিযোগ পর্যন্ত দাখিল ও করেছিল । যা গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়ে উঠে এসেছিল। তারপর তড়িঘড়ি করে উক্ত ঠিকাদারের বিল পরিশোধ করেছিল বলে জানা গেছে। অর্থ বছরের শেষের দিকে এখন তিনি তার ১৫-২০% কমিশনের টাকা আদায়ের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কাজ না করে ও পুরো বিল উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ও আছে ইউসুফের বিরুদ্ধে।কাজ না করে বিল উত্তোলনের এ টাকা তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের সাথে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে তা গনমাধ্যমের সংবাদে উঠে আসার পরেও তাকে কেন বদলী করা হয়নি?এ নিয়ে অধিদপ্তর জুড়ে রয়েছে গুঞ্জন। কিসের ক্ষমতায় এবং কার অনুকুল্যে তিনি এতটা ক্ষমতাধর।

ইএম কারখানা বিভাগ একটি অত্যন্ত লোভনীয় পোষ্টিং । এখানে নয় ছয়ের সুয়োগ খুব বেশী। তাই উক্ত স্থানটিতে আসার জন্য তিনি অনেক টাকা বিনিয়োগ ও করেছেন।একাধিক সূত্র তা নিশ্চিত করেছে।

মোঃ ইউসুফ অফিসের বাহিরে বসে তার কমিশন বাণিজ্য চালিয়ে যেতে খুব বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। মোঃ ইউসুফের অনিয়ম ও দুর্নীতির ফিরিস্তি অত্যন্ত বড়। জামাত ঘরনার এই কর্মকর্তা সরকারী অর্থ হাতিয়ে নিতে সিক্তহস্ত। তিনি মূলত: তার সিন্ডিকেটের ঠিকাদারদের দিয়ে কাজ করিয়ে থাকেন। বিস্তারিত পরবর্তী প্রতিবেদনে তার আস্থাভাজন বিহারী কাওসার, নাজমা এন্টারপ্রাইজ এর সাথে যে সখ্যতার প্রমাণ মিলেছে তা প্রকাশ করা হবে। আওয়ামী বিরোধী ঠিকাদাররা তার অত্যন্ত আস্থাভাজন। তার কমিশন বানিজ্যের রেট ১৫-২০%। এমন তথ্য প্রমান ফিন্যান্স টুডের হাতে এসেছে।ভুক্তভোগী একাধিক ঠিকাদারগন নাম প্রকাশ না করার শর্তে গনমাধ্যমের সাথে এ কথা বলেন।আগারগাঁও এ সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ন একটি প্রকল্পে একজন ঠিকাদারের নিকট থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে বিল আটকিয়ে ৩৫ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করেছে। উক্ত ঠিকাদার এখন ও পুরাপুরি বিল তুলতে পারে নাই।আমাদের অনুসন্ধানে তা বেরিয়ে এসেছে।অথচ ২ বছর পূর্বে উক্ত প্রকল্প সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মো: ইউসুফ বর্তমান প্রধান প্রকৌশলীর অত্যন্ত আস্থাভাজন। সাবেক গৃহায়ন ও গনপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর অত্যন্ত আস্থাভাজন একটি নিদিষ্ট সিন্ডিকেট এর সক্রিয় সদস্য মো: ইউসুফ। গনপূর্ত অধিদপ্তরে এতটাই ক্ষমতাধর হয়ে উঠেছে যে তাহারা ধরাকে সরাজ্ঞান করেছে। এছাড়াও ইএম ও সিভিল শাখার একাধিক নির্বাহী প্রকৌশলী কমিশন বানিজ্যের হোতা। এরা অবৈধ অর্থ ও সম্পদ এতটাই বেশী অর্জন করেছে যে কোন আইন ও নীতিমালা এদের স্পর্শ করতে পারে না। এরা দুর্নীতি দমন কমিশন কে পর্যন্ত কেয়ার করে না। এদের একটাই কথা টাকা থাকলে সব ম্যানেজ হয়ে যায়। নামে-বেনামি ইউসুফ ও তার সিন্ডিকেটের অবৈধভাবে অর্জিত কোটি কোটি টাকা সম্পদ ব্যাংক ব্যালেন্স রয়েছে। সিন্ডিকেট সমস্ত নিয়োগ,বদলি, পদায়ন এ নেপথ্য ভূমিকা রাখে। অতি সম্প্রতি সিন্ডিকেটের এক সদস্যের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন হয়েছে। যেখানে তার পদায়ন হওয়ার যোগ্যতাই নাই। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছের কিছু লোকের সাথে ইতোমধ্যে এদের ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রীর কাছের সিন্ডিকেটই আবার ও একই পথে হাঁটছে। শত শত কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে এরা সাপলুডু খেলছে। কমিশনের বিনিময় সিন্ডিকেটের ঠিকাদারদের কাজ দিতে তৎপর। মন্ত্রী এখনই কঠোর না হলে স্বাধীনতার স্বপক্ষের ঠিকাদারগণকে বঞ্চিত হতে হবে।

এই সিন্ডিকেটের একটা বড় গুণ তা হল যখন যে মন্ত্রী, সচিব কিংবা প্রধান প্রকৌশলী আসে তাদের আস্থাভাজন হতে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ রেখে থাকে। বর্তমান গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী একজন অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি। তার নামও এরা ভাঙ্গিয়ে বেড়াচ্ছে। এমন কি তার নিকট আত্মীয়দের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতে এই সিন্ডিকেটের প্রভাবশালী সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত গিয়েছে এমন তথ্য ও পাওয়া গেছে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরে বর্তমান বেশ কয়েকটি সিভিল শাখার টেন্ডার হয়েছে তা নিয়ে চলছে কমিশন বাণিজ্যের রফাদফা। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে আরো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। সিন্ডিকেটের প্রভাবশালী নির্বাহী প্রকৌশলীরা পুরো অধিদপ্তরকে গিলে খেতে চায়। “দ্য ফিন্যান্স টুডে” অনুসন্ধানে দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী ও সিন্ডিকেটদের আমলনামা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশে এদের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে।

 

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা