September 21, 2024, 6:50 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-05-18 23:19:37 BdST

নির্বাহী প্রকৌশলী বলছে এখনো টেন্ডারই হয়নি !!গণপূর্তে একই বিল দুইবার! অনুসন্ধানে মিলছে না নথি!


সম্প্রতি গণপূর্ত অধিদপ্তরে 'একই কাজে কয়েকবার বিল তোলা' প্রসঙ্গে একাধিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় যেখানে মিন্টু রোডের একটি সরকারি বাসভবনের সংস্কার কাজের বিল দুইবার করে জমা করা হয়েছে এমন একটি কথা বলা হয়েছে। আরো উল্লেখ করা হয় যে ভবনটির সংস্কার কাজের জন্য প্রাক্কলন ব্যয় অতিরিক্ত ধরা হয়েছে। 

এই বিষয়ে 'দ্যা ফিন্যান্স টুডে'র একটি চৌকস টীম গভীর অনুসন্ধান শুরু করে। দীর্ঘ অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে উক্ত প্রতিবেদনে যে কাজের কথা বলা হয়েছে সেই কাজের কোন দরপত্রই এখন পর্যন্ত আহবান করা হয়নি তাহলে কিভাবে এই কাজের বিল প্রদান করা হলো।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাংলো নং-৯-এর ভবন ও অন্যান্য স্থাপনার মেরামতসহ আনুষঙ্গিক উন্নয়ন কাজের বিল দুবার জমা করা হয়েছে। আর এই কাজের জন্য দায়ী করা হয়েছে উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান এবং উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মিঠুন মিস্ত্রীকে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবনের ছাদের কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট, ভেতর ও বাইরের রংসহ সংস্কার, বাউন্ডারি ওয়াল, পুলিশ ব্যারাক, পশু পালন শেড মেরামতসহ আনুষঙ্গিক কাজের ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ১২৩ টাকা মূল্যমানের একখানা প্রাক্কলন থোক বরাদ্দ থেকে প্রশাসনিক অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দের জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ঢাকা গণপূর্ত সার্কেল-১, ঢাকা দপ্তরে পাঠানো হয়। উল্লেখিত প্রাক্কলনে উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে মো. মনিরুজ্জামান ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হিসেবে মিঠুন মিস্ত্রী স্বাক্ষর করেন।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি প্রাক্কলন উপসহকারী প্রকৌশলী এবং উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রস্তুত করে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে প্রেরণ করেন অনুমোদনের জন্য। নির্বাহী প্রকৌশলী প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দপ্তরে প্রেরণ করেন। যাচাই-বাছাই শেষে উক্ত প্রাক্কলনটি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পুনরায় নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রেরন করেন। অনুমোদিত প্রাক্কলনটি নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে টেন্ডার আহ্বান করা হয় এবং নির্বাহী প্রকৌশলী কর্তৃক  চেক প্রদান করা হয় কাজ শেষে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে মিন্টো রোডের সরকারি বাংলো নং-৯ এ একটি মাত্র দরপত্র আহবান করা হয়েছে। যেখানে একটি মাত্র দরপত্র আহবান করা হয়েছে সেখানে একই কাজে দুবার বিল কিভাবে তোলা হলো এই বিষয়টি ফিন্যান্স রোডের অনুসন্ধানী টিমের কাছে বোধগম্য হয়নি।

এ ব্যাপারে নগর গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'এই জাতীয় কাজের এখনো কোনো টেন্ডারই হয়নি তাহলে কিভাবে বিল করা হলো'।

নগর গণপূর্তের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী স্বর্ণেন্দু শেখর মন্ডল এর নিকট এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমার সময় এই জাতীয় কোন ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া যে কাজের কোন দরপত্রই এখনো আহ্বান করা হয়নি সেই কাজের বিল কিভাবে দেয়া সম্ভব।'

এদিকে একাধিক গনমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলে তদন্ত কমিটি গঠন হয়। তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার আগেই উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামানকে বদলি করা হয় লক্ষ্মীপুর জেলায়। 

এই প্রসঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা