June 23, 2024, 9:36 am


নিজস্ব প্রতিবেদক

Published:
2024-06-14 15:30:16 BdST

যে ভুলে কোরবানির গোশত খাওয়া হারাম হয়ে যায়


কোরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই কোরবানি করতে হয়। অন্যকোনো উদ্দেশ্যে কোরবানি করলে তা কবুল হয় না। ১০ জিলহজ ফজরের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে কারো নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব।

কোরবানির পশু জবাই করার সময় হলো ১০ জিলহজ ঈদুল আজহার নামাজ সম্পন্ন করার পর থেকে ১২ জিলহজ মাগরিবের আগ পর্যন্ত। জিলহজ মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পর কোরবানি করা শুদ্ধ নয়। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/২৯৬)

কেউ কোরবানির পশু যথাসময়ে জবাই না করলে তথা নির্দিষ্ট তিনদিনের (জিলহজের ১০, ১১, ১২ তারিখের) পরে জবাই করলে সেই গোশত নিজে রেখে দিতে পারবে না। বরং সব গোশতই সদকা করে দিতে হবে।

এ বিষয়ে ফতোয়ার কিতাবে উল্লেখ রয়েছে— কোরবানির দিনগুলোতে যদি জবাই করতে না পারে তাহলে খরিদকৃত পশুই সদকা করে দিতে হবে। যদি (সময়ের পরে) জবাই করে ফেলে তাহলে পুরো গোশত সদকা করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে গোশতের মূল্য যদি জীবিত পশুর চেয়ে কমে যায় তাহলে যে পরিমাণ মূল্য হ্রাস পেল তা-ও সদকা করতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০২, আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৩২০-৩২১)

কোরবানি ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও কেউ যদি পশু ক্রয় না করে থাকে এবং কোরবানি না করে থাকে, তাহলে তার ওপর কোরবানির যোগ্য একটি ছাগলের মূল্য সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব। যথাসময়ে কোরবানি না করার কারণে তাওবা-ইস্তেগফারও করবে। (ফতোয়া তাতারখানিয়া: ১৭/৪২৩; রদ্দুল মুহতার: ৬/৩২১; তুহফাতুল ফুকাহা: ৩/৮৩; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০২)

অতএব কোরবানি করতে হবে নির্দিষ্টি সময়ের (জিলহজের ১০, ১১, ১২ তারিখের) মধ্যে। যথাসময়ে কোরবানি করলে জবাইকৃত পশুর গোশত খাওয়াকে আল্লাহ তাআলা অবৈধ করেননি। কোরবানির গোশত বিতরণের উত্তম পদ্ধতি হলো— এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া। অবশ্য পুরো মাংস যদি কেউ নিজে রেখে দেয়, তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২২৪; আলমগিরি: ৫/৩০০)

আবার ইচ্ছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ বা আল্লাহর নাম না নিয়ে জবাই করলেও গোশত হারাম হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
আর তোমরা তা থেকে আহার করো না, যার ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়নি এবং নিশ্চয় তা গর্হিত।’ (সুরা আনআম: ১২১)

পশুর খাদ্যনালী, কণ্ঠনালী না কাটলেও ওই পশুর গোশত হারাম হয়ে যায়। পশু জবাইয়ের সঠিক পদ্ধতি হলো, জবাই করার সময় চারটি রগ কাটতে হবে। সে চারটি রগ হচ্ছে, শ্বাস নালী, খাদ্যনালী এবং শ্বাস নালীর দুই পার্শ্বের দুটি মোটা রগ। কোনো কারণে চারটি রগ না কেটে তিনটি কাটলে গোশত খাওয়া বৈধ হবে। কিন্তু তিনটির কম কাটলে সেই পশু বা পাখি মৃত বলে গণ্য হবে এবং তা খাওয়া বৈধ হবে না। কোরবানি শুদ্ধ হবে না। তবে যেকোনো তিনটি রগ কাটা গেলে কোরবানি শুদ্ধ হবে। (বেহেশতি জেওর, পৃষ্ঠা-৩৭৫; হেদায়া: ৪/৪৩৭)

এক্ষেত্রে আলেমদের পরামর্শ হলো- পশু নিজ হাতে জবাই করা উত্তম। যদি নিজে জবাই করতে না পারে তবে অন্যের দ্বারা জবাই করাবে। এই অবস্থায় নিজে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম। (ফাতাওয়ায়ে শামি: ৫/২৭২)

উল্লেখ্য, কেবল সোনা-রুপা থাকলেই কোরবানি ফরজ হয় না। বরং নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর বেশি যদি কারো অতিরিক্ত স্থাবর সম্পত্তি থাকে যার মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য হয়, তাহলে ওই ব্যক্তির উপর কোরবানি ওয়াজিব। (ফতোয়ায়ে শামি: ৯/৪৫৩; খোলাসাতুল ফতোয়া: ৩/৩০৯; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/১৯৬)

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা