September 17, 2024, 1:04 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-09-02 10:36:55 BdST

প্রতিনিয়ত নিজ কর্মদক্ষতা ও সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে চলেছেনদুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের চোখের বালি গনপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার


দেশের অবকাঠামোগত খাতের শীর্ষ যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম গণপূর্ত অধিদপ্তর। দেশে মানসম্মত ও দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো নির্মান করে প্রতিনিয়ত উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রেখে চলেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এই ধারাবাহিকতা ও অব্যাহত উন্নয়নের মূল কারিগর গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার।

সব সরকারের আমলেই প্রশাসনের অসৎ, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ ও সুবিধাবাদী ঠিকাদারদের নিয়ে গড়ে উঠা শক্তিশালী সিন্ডিকেটের টার্গেটে থাকে  গনপূর্ত অধিদপ্তর। দুর্নীতি ও অনিয়মের টেন্ডার বাণিজ্য ও ভূয়া বিল তুলে নেওয়ার এই প্রক্রিয়ার নেপথ্য নিয়ন্ত্রক এই শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এই প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে শত শত দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। বিগত সময়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরে সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় যারাই দায়িত্ব পেয়েছেন, তাদের সকলেই আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত থাকতেন। আর তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হতেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান প্রকৌশলী।

তবে এদিক থেকে বিরল গণপূর্ত অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই গনপূর্তের সকল অনিয়ম, দুর্নীতি ও টেন্ডার বানিজ্য অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে নিয়ে এসেছেন বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার ও তার প্রশাসন। সুবিধাবাদীদের লাগাম টেনে ধরতে অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিয়েছেন বিভাগীয় ব্যবস্থা।

এখানেই বেধেছে বিপত্তি। গণপূর্ত অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন যাবৎ অনিয়ম ও দুর্নীতির যে চলমান ট্রেন্ডটি বজায় ছিলো তা ভেস্তে যায় এক শামীম আখতারের কারনে। স্বাভাবিকভাবেই এসব অনিয়মের সাথে যুক্ত একটি বিশেষ সুবিধাবাদী সিন্ডিকেট ও ঠিকাদার গ্রুপের টার্গেটে পরিনত হয়েছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার।

উক্ত গ্রুপ তার ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের নামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তথ্য দেওয়ার নামে ভুল তথ্য দিয়ে আসছে। আর এই সমস্ত প্রকাশিত তথ্য যাচাই-বাচাই করে বহু বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নজিরও রয়েছে।

গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহম্মেদ ও সাবেক গনপূর্ত সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকার এর আমলে কিছু সুবিধাবাদী প্রকৌশলী ও ঠিকাদার মিলে সরকারের পট পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রধান প্রকৌশলীকে সরিয়ে দিয়ে তাদের অনুগত প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগের ব্যাপারে বড় অংকের বাজেট নিয়ে মাঠ নেমেছে।

এই প্রতিষ্ঠানে অতীতে দায়িত্বরত প্রধান প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য গনমাধ্যমে উঠে এসেছে যা রীতিমতো পিলে চমকে উঠার মত। কিন্তু সেই তুলনায় বর্তমান সময়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর অনেকটাই জবাবদিহিতার মধ্যে চলে এসেছে।

বর্তমান প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে একটি গ্রুপ পীর উপাধি দিয়ে তার মুরিদানের মাঝে কাজ বন্টন করেছে বলে যে ধুয়া তুলছে তা বেমানান। রাষ্ট্রের যে কোন নাগরিক বৈধভাবে নিয়মমাফিক কাজ করার অধিকার রাখে। সেক্ষেত্রে তিনি একজন ধর্মভীরু লোক সেই কারনে তাকে অপবাদ দিতে বেশী স্বাচ্ছন্দ অনুভব করছে।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তন একটি রাষ্ট্রের নিয়মিত প্রক্রিয়া। কিন্তু রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ন অনুসঙ্গ বা বিভাগগুলো অপেক্ষাকৃত সৎ ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে পরিচালিত হলে দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প ও নিয়মিত অবকাঠামোগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতএব এখানে সৎ, দূরদর্শী এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত জরুরী। একই সাথে দায়িত্বের ধারাবাহিকতা না থাকলে উন্নয়ন ও অগ্রগতি থেমে যায়।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা চক্রটি আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এরা যখন যে সরকার দায়িত্বে থাকে তাদের তোষামোদি করে টেন্ডার ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বাগিয়ে নিতে ব্যস্ত থাকে। যদি কোন কারনে তা পেতে বেগ পেতে হয় তাহলেই দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের কপালে কালির দাগ লাগাতে চেষ্টা করে থাকে।

একাধিক প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, বর্তমান প্রধান প্রকৌশলীর কর্মদক্ষতা ও সততা বিগত প্রধান প্রকৌশলীদের তুলনায় অনেক ভালো।

শামীম আখতার রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের জন্মগ্রহন করেন। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসিসি, ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) ও পরবর্তীতে বুয়েট থেকে পোষ্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্স বিষয়ে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বিসিএস ১৫ ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা।

তিনি ১৯৯৮ সালে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, ২০০৮ সালে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। কর্মজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সর্বদাই সততা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

২০১৮ সালে বিল্ডিং এন্ড হাউজিং রিসার্চ এর পরিচালক এবং একই প্রতিষ্ঠানে মহা-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০২০ সাল হতে তিনি গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করেন।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা