May 1, 2025, 10:57 am


নেহাল আহমেদ, কবি ও সাংবাদিক

Published:
2025-05-01 01:33:09 BdST

শিশুদের শ্রমমুখী নয়


শিশুদের শ্রম মুখী নয় শিক্ষামুখী করা হোক। কোন শিশু শিক্ষার সুযোগ পাবে কোন শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে এটা কারো কাম্য হতে পারেনা। রাষ্ট্র এই দায় এড়াতে পারে না। রাষ্ট্র যদি শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে না পারে তবে সে রাষ্ট্র কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেনা। শিশুরা রাষ্ট্রের সম্পদ।

শিশু শ্রম বন্ধ হোক। শিশুদের সম্পদ হিসাবে গড়ে তোলা হোক। অদূষ্টের দোহাই দিয়ে বা রাজনীতির মারপ্যাচে শিশুদের অধিকার হরণ করা বন্ধ করা হোক। এই সমাজে এই সময়ে শিশু শ্রম একটি রাষ্ট্রীয় ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের সুষ্ঠু বিচক্ষণতার অভাবে ভবিষ্যৎ প্রজম্মের বিরাট একটি অংশ নিজেদের সক্রিয়তা হারাতে বসেছে। বাস্তবতার কাছে হার মানতে হয় দরিদ্র ও অসচ্ছল পরিবারের মানুষদের। পরিবারের সচ্ছলতা আনতে পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে অভিভাবকরা নিজেদের শিশুদের কাজে লাগিয়ে দেন।

শিশুরা কল-কারখানা থেকে শুরু করে পাথর ভাঙা, মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করা, বিভিন্ন হোটেল ও রেস্টুরেন্টসহ গাড়ির গ্যারেজ, দোকানপাটে কাজ করে।

বর্তমানে কৃষি-শিল্প-নির্মাণ খাত, গার্মেন্টসহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে গেছে।সেই সঙ্গে শিশু শ্রমিকের অধিকাংশই কোনো বেতন পান না। শিশুরা কাজ বেশী করলেও শ্রমিকের সমান, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি শ্রম দিয়েও শিশু শ্রমিকরা অন্য শ্রমিকের চেয়ে কম পারিশ্রমিক পাচ্ছেন। ছোট বাচ্চাদের কাজে লাগানোকে শিশুশ্রম বলা হয়। এই কাজটি সাধারণত শিশুদের জন্য অনিরাপদ বা অস্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়। শিশুশ্রমের সবচেয়ে খারাপ রূপগুলি দাসত্বের মতো হতে পারে । অতীতে শিশুশ্রম সাধারণ ছিল। আজ বেশিরভাগ সমাজ শিশুশ্রমকে ভুল বলে মনে করে।

দারিদ্র্যই হল শিশুদের কাজে লাগানোর প্রধান কারণ। পরিবারের অর্থের প্রয়োজন হওয়ায় পরিবারগুলি তাদের সন্তানদের কাজে পাঠায়। কিছু সম্প্রদায়ে শিশুদের কাছ থেকে আশা করা হয় যে তারা তাদের বাবা-মায়ের কাজ শিখবে এবং তাতে অংশগ্রহণ করবে, এমনকি যদি সেই কাজ শারীরিকভাবে পরিশ্রমী বা বিপজ্জনক হয়।

অর্থের অভাবী পরিবার একজন শিশু শ্রমিকের ঝুঁকি পুর্ন কাজে দিতেও দ্বিধা করে না । নিয়োগকর্তারা প্রায়শই প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকদের চেয়ে শিশুদের পছন্দ করেন কারণ তাদের কম মজুরি দেওয়া হয় এবং নিয়ন্ত্রণ করা সহজ।

বহুপূর্বে পৃথিবী থেকে দাসপ্রথা বিলোপ হলেও বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে দাসপ্রথার আধুনিক সংস্করণ মনে করা হচ্ছে শিশু শ্রমিককে। শিশু শ্রমিকরা প্রতিনিয়তই শোষণ, নির্যাতন-নিপীড়ন ও সামাজিক বঞ্চনার শিকার হচ্ছে।

সময় এসেছে শিশু শ্রমিকদের কাজের স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রদান এবং তাদের ওপর থেকে সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং হয়রানি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারনে দরিদ্র পরিবার তাদের সন্তান কে শিশু শ্রমে উৎসাহ দেবে আর মালিকরা শিশু শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন ও মৃত্যুর মিছিল বাড়াতেই থাকবে।আমাদের স্বার্থের স্বীকার হচ্ছে শিশুরা।

শিশুদের নিয়ে সেমিনার হয় সভা হয়। তাদের নিয়ে আইন করা হয়। ঠান্ডা কাঁচ ঘেরা কক্ষে পরিকল্পনা করা হয়। খবরের কাগজে পৃষ্টার পর পৃষ্টা লেখা হয় রঙ্গিন পর্দায় চকচকে চেহারায় শিশুদের নিয়ে দম বন্ধকরা আলোচনা করা হয়। শুধু বাস্তবায়ন হয়না শিশুদের উজ্জল ভবিষ্যৎ।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.