September 6, 2025, 12:48 am


নেহাল আহমেদ, রাজবাড়ী

Published:
2025-09-05 22:15:52 BdST

তুমুল সংঘর্ষে নিহত ১, আহত শতাধিকগোয়ালন্দে নুরাল পাগলের দরবারে হামলা ও অগ্নিসংযোগ


রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলের দরবারে তৌহিদী জনতার হামলা, অগ্নিসংযোগ ও পাল্টা সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর উত্তেজিত জনতা দরবার শরীফে হামলা চালায়। এতে আহত হন দুই পক্ষের শতাধিক মানুষ। এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন মোঃ রাসেল মোল্লা (২৮)। তিনি জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের জটু মিস্ত্রিপাড়ার আজাদ মোল্লার ছেলে।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগল নামের এক ব্যক্তির মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় এলাকায় আগুনে পুড়িয়েছে স্থানীয় জনতা। এই ঘটনায় এক সাংবাদিক সহ চার জন আহত খবর পাওয়া গেছে।

আজ শুক্রবার দুপুরে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের ঘোনাপাড়া এলাকার নুরুল হকের বাড়ীতে হামলা চালিয়ে তার বসত ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় স্থানীয় ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির লোকজন। এরপর উত্তেজিত জনতা কবর থেকে তার লাশ উঠিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় এলাকায় নিয়ে এসে আগুন ধরিয়ে দেয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নিজেকে ইমাম মাহদি দাবি করায় তীব্র আন্দোলনের মুখে ১৯৮৫-৮৬ সালে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন নুরুল হক। তিনি আবার তিন-চার বছর পরে ফিরে এসে ইসলাম পরিপন্থী কার্যকলাপ শুরু করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তার উপর ক্ষুদ্ধ ছিল। গত ২৩ আগস্ট নুরুল পাগলের মৃত্যুর পর সৃষ্ট কার্যকলাপে মানুষের ক্ষোভ আরও ঘনীভূত হয়।

মৃত্যুর আগে নুরুল ১২ ফুট উঁচু বেদি তৈরি করেন। সেই বেদির ওপর তাঁকে কবর দেওয়া হয় এবং পবিত্র কাবার আদলে রং করা হয়। এতে ধর্মপ্রাণ মুসলমান বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। উত্তেজনা প্রশমনে প্রশাসন তাঁদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসেছে। আলোচনায় প্রথমে নুরুলের পরিবার এক সপ্তাহ সময় নিলেও এই ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। আজ জুম্মার নামাজের পর গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে উত্তেজিত জনতা তার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তারা পুলিশ এবং গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর চালায়।

এর আগে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গত দুদিন আগে কবর নিচু করা হয় এবং কবরের রংও পরিবর্তন করা হয়, বলে তিনি জানান, তবে আজ জুম্মার নামাজের পর গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একদল উত্তেজিত জনতা নুরু পাগলার বাড়িতে হামলা চালায়। পরবর্তীতে সেখানে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে তার লাশ কবর থেকে তুলে নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, নুরা পাগলার যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এটি প্রতিরোধ করার জন্য গত দুদিন ধরে গোয়ালন্দের বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করে ইসলাম ধর্মাবলীদের গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ আসার জন্য বলা হয়েছে।

এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, দুপুরে ইমাম আকিদা রক্ষাকারী কমিটির ব্যানারে থেকে নুরুল হকের মাজারে হামলা করা হয়। এরপর তার লাশ তুলে নিয়ে যায় উত্তেজিত জনতা।

এই এলাকায় এখন অতিরিক্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব সদস্য মোতায়েন রয়েছে। উত্তেজিত জনতা ওই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট করে। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসে সদস্যরা আগুন নেভানোর কাজ করছে, বলে তিনি জানান।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.