October 15, 2025, 1:13 am


ড. মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন এমবিই

Published:
2025-10-14 21:15:44 BdST

বঞ্চনার শৃঙ্খলে সিলেট-৩সিলেটে উন্নয়ন স্থবির, জনদুর্ভোগে ফুঁসে উঠছে জনমত


অবহেলা, উন্নয়ন বঞ্চনা আর অব্যবস্থাপনার শিকার সিলেটবাসী। সিলেট অঞ্চলের প্রতি দীর্ঘদিনের এই অবহেলা ও বিমাতাসুলভ আচরণ এখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এক সময়ের প্রাণবন্ত এই অঞ্চল আজ অবকাঠামোগত দুরবস্থা, প্রশাসনিক জটিলতা ও উন্নয়ন স্থবিরতার কারণে ভয়াবহ ভোগান্তিতে নিমজ্জিত।

বিশেষ করে সিলেট-৩ আসনের জনগণ আজ নাগরিক সুবিধা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা—সব ক্ষেত্রেই মারাত্মক সংকটে। 

উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চাইতে সব সময় সিলেট অত্যন্ত অবহেলিত একটি জেলা। সব ক্ষেত্রেই সিলেটের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। বিগত আওয়ামী লীগের ১৫-১৭ বছরের শাসনামলে তো হয়েছেই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও বর্তমানে সেই পথে হাঁটছে। 

বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নজির স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের আগের সকল সরকারপ্রধানই সিলেটে আসতেন ওলি আউলিয়াদের মাজার জিয়ারতের জন্য। কিন্তু বর্তমান সরকারপ্রধান একবারের জন্যও সিলেটে আসেননি। এমনটা বোধহয় বাংলাদেশে আগে কখনও হয়নি।

সিলেটের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ

সিলেটবাসীর অভিযোগ, গত সরকারের সময় থেকে শুরু হওয়া অবহেলা এখন তীব্র আকার ধারণ করেছে। সরকারের অদক্ষতা ও উদাসীনতায় জনরোষ দিন দিন বাড়ছে।

বিদ্যুৎ বিভ্রাট

ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট, রাস্তা-ঘাটের ভয়াবহ অবস্থা এবং নগরীর ভেতরে জলাবদ্ধতা এখন সাধারণ মানুষের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সিলেট জেলার নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যত নেই। পুরোপুরি জাতীয় গ্রিডের ওপর নির্ভর করতে হয়। তার ওপর লো- ভোল্টেজ সমস্যাও যুক্ত হয়েছে। এছাড়া সিলেটে বিদ্যুতের মূল সংযোগে ১৯৬৭ সালের তার এখনও রয়ে গেছে। সামান্য ঝড়বৃষ্টি হলেই দেখা দেয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট। এছাড়া অনেক সময় কোন কারণ ছাড়াই কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ক্ষেত্রে অনেক সময় ট্রান্সফরমারের ফিউজ পুড়ে যাওয়া কিংবা বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে পাখি বসে বৈদ্যুতিক গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে থাকে। সে সময় পুরো সঞ্চালন লাইন বন্ধ রেখে মেরামত কাজ করতে হয় বিধায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িক বন্ধ রাখতে হয় নয়তো ঘোষণা দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখে সংযোগে নতুন তার লাগানো কিংবা সংস্কার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

সিলেট মহানগরীর পাঁচটি বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন ১৩টি সাবস্টেশন অতিরিক্ত চাপে রয়েছে। গরম বাড়লেই ফিউজ ও তার ছিঁড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে, দেখা দেয় ভোল্টেজ ড্রপের সমস্যাও। বর্তমানে তুলনামুলক গরম কমে যাওয়ায় সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও কমেছে বিদ্যুতের চাহিদা। ফলে সরবরাহ অনেকটা স্বাভাবিক। এরপরও বার বার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে একদিকে ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রাহক, অপরদিকে বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার কারণে নষ্ট হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি।

সিলেট বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই-আরেফিন বলেন, ‘আমাদের হাতে বিদ্যুৎ নেই। ঢাকা থেকে যখন-তখন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে পুরো সিস্টেমে ফ্রিকোয়েন্সি ডাউন হয়। ঢাকার সিদ্ধান্ত সিলেটের বাস্তবতায় ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।

সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে স্থবিরতা ও রাস্তা-ঘাটের অবনতি

সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই নাজুক অবস্থায় আছে। সিলেট থেকে ঢাকাগামী ৬ লেন মহাসড়কের কাজের ধীরগতির কারনে সিলেটবাসী সবচেয়ে বেশী দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বর্তমানে সড়কটি এতটাই নাজুক অবস্থায় যে ১৫–১৬ ঘণ্টায়ও ঢাকায় পৌঁছানো যায় না। ফলে রাজধানীর সঙ্গে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রেলপথের অবস্থাও নাজুক। ফলে এই অঞ্চলের যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। এই দুর্ভোগ লাঘবে সরকারেরও তেমন উদ্যোগ নেই।

অন্যদিকে, রাস্তা খারাপ হওয়ায় অন্যান্য জেলা থেকে সিলেটে নিত্যপণ্য আসতে দীর্ঘ সময় লাগে। ফলে দাম অনেক বেড়ে যায়। ফলে এখানকার মানুষদের বাড়তি দামে নিত্যপণ্য কিনতে হচ্ছে।

সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান এই দুর্ভোগ, অনিয়ম ও চরম নৈরাজ্য আজ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। জনগণের মৌলিক অধিকার - সহজ, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল যাতায়াতের অধিকার আজ মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

এই অব্যবস্থাপনা ও অবিচারের প্রতিবাদে এবং একটি যথাযথ উন্নয়নমূলক, স্বচ্ছ ও টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে সিলেটবাসী ফুঁসে উঠছে।

প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে অবহেলা

সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত জেলা হওয়া সত্ত্বেও সরকারি মনোযোগের অভাবে মানুষ নানা সমস্যা ও বঞ্চনায় দিন কাটাচ্ছে। প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা জাতীয় অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখলেও, সিলেটবাসী তার সুফল থেকে বঞ্চিত।

সিলেট বিমানবন্দরে প্রশাসনিক জটিলতা

প্রবাসী-অধ্যুষিত সিলেটের অন্তত ২৫ লাখ মানুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করে। তারা বৈধপথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত প্রবাসীদের সিংহভাগই সিলেট অঞ্চলের বাসিন্দা। মাতৃভূমি ও পরিবার-পরিজনের টানে প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক প্রবাসী দেশে আসেন।

সিলেটের প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাতে বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হয়। অনেক বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোও ওসমানী বিমানবন্দর থেকে অপারেট করার অনুমতি চাইছে।

অতীতে বিভিন্ন সময় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সরাসরি ফ্লাইট চলাচল বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেও সিভিল এভিয়েশনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, ঢাকার কিছুসংখ্যক দুর্নীতিবাজ ট্রাভেলস এজেন্সির মালিক ও হোটেল মালিক মিলে গঠিত সিন্ডিকেট সেই উদ্যোগ সফল হতে দেয়নি। এছাড়া ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সরকারের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে নতুন কোনো এয়ারলাইন্সকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এতে প্রবাসী ও সাধারণ যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সিটি করপোরেশনের ভেতরেও সেবা বঞ্চনা

সিলেট-৩ আসনের একটি অংশ সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হলেও স্থানীয় জনগণ মৌলিক নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। জন্মনিবন্ধন, সুষ্ঠু পানি নিষ্কাশন, রাস্তা মেরামত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক।

স্বাস্থ্য খাতে ভয়াবহ সংকট

সিলেটে স্বাস্থ্যসেবায় ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। সিলেটের কোটি মানুষের একমাত্র ভরসা এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য— এই গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটি এখন নিজেই ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়েছে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা যেখানে সুস্থতার প্রথম শর্ত, সেখানে হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ময়লার স্তূপ। শৌচাগারের সম্মুখভাগে দীর্ঘদিন ধরে প্লাস্টিকের ড্রামে বিষাক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত ময়লার স্তূপ জমিয়ে রাখা হয়েছে।

শুধু ওয়ার্ডের ভেতরেই নয়, হাসপাতালের চারপাশেই ব্যবহৃত ইনজেকশনের অ্যাম্পুল, অপারেশনে ব্যবহৃত গজ-তুলাসহ অন্যান্য চিকিৎসা বর্জ্য যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। তবুও যেন দেখার কেউ নেই।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক, ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী, হাসপাতালের এমন নোংরা পরিবেশের জন্য জনবল সংকটকে দায়ী করেছেন।

তিনি বলেন, ‘সিলেটের একমাত্র ৫০০ শয্যার হাসপাতাল এটি। এখানে যে পরিমাণ জনবল থাকা উচিৎ তার চেয়ে ২৫ ভাগ কম জনবল নিয়ে আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

ডা. চক্রবর্তী আরও উল্লেখ করেন, “রোগীর চাহিদার সঙ্গে জনবলের বিরাট একটা পার্থক্য রয়েছে। এই পার্থক্য নিয়েই আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে চিকিৎসক সংকট।"

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট ৫২৬টি মেডিকেল অফিসারের পদের মধ্যে ৫৮ শতাংশই শূন্য। এছাড়া জুনিয়র কনসালটেন্ট পদেও সংকট বিদ্যমান। বিভাগজুড়ে ২৪১টি অনুমোদিত পদের মধ্যে ১৩১টি পদ ফাঁকা। ফলে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

চিকিৎসক সংকট, ঔষধের অভাব, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং অবহেলার কারণে সরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না। 

সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, “চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি বাস্তব। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বর্তমানে বিসিএস (স্বাস্থ্য) পরীক্ষা চলছে। নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগদান করলে সংকট কিছুটা কমবে।”

সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালের বিরুদ্ধে নোংরা পরিবেশ, রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ, সেবায় অনিয়ম এবং কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতার অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও বহুবার এমন অভিযোগ গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, বারবার এসব ঘটনা সামনে এলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

তরুণ সমাজের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি

পারিবারিক সহিংসতা, অবহেলা, অতিরিক্ত শাসন কিংবা অতিরিক্ত স্বাধীনতা—সবই তরুণদের মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, ভালোবাসা ও স্বীকৃতির খোঁজে অপরাধী চক্রের দিকে ঝুঁকে পড়ে।

এছাড়া তরুণদের বড় একটি অংশ বেকার। উচ্চশিক্ষা শেষ করেও চাকরি না পেয়ে তারা হতাশ হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে, সমাজে ধনী-গরিবের ব্যবধান দিন দিন বাড়ছে। তরুণরা দেখে, কিছু মানুষ অল্প সময়ে বিপুল অর্থ, ক্ষমতা ও প্রভাব অর্জন করছে—প্রায়শই অনৈতিক পথে। এই বাস্তবতা তরুণদের মনে এক ধরনের ক্ষোভ ও ঈর্ষা তৈরি করে। তারা ভাবে, “আমিও যদি শর্টকাট পথে যাই, তাহলে দ্রুত সফল হতে পারবো।”

এই মনোভাবই অনেক সময় তাদেরকে অপরাধের দিকে ঠেলে দেয়—চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, সাইবার অপরাধ, চাঁদাবাজি ইত্যাদি।

সম্প্রতি সিলেটে তরুণদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। এই প্রবণতা শুধু আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি নয় বরং সমাজের ভবিষ্যতের জন্যও এক গভীর অশনি সংকেত। তরুণরা জাতির ভবিষ্যৎ, তাদের হাতে গড়ে ওঠে আগামী দিনের রাষ্ট্র, সমাজ ও সংস্কৃতি। কিন্তু যখন এই শক্তিশালী অংশটি অপরাধের পথে পা বাড়ায়, তখন তা শুধু ব্যক্তিগত বিপর্যয় নয়, বরং একটি বৃহৎ সামাজিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।

চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদকসহ নানা অপরাধে তরুণ সমাজ জড়িয়ে পড়ছে। এলাকাবাসী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন—প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া এই ধারা রোধ করা সম্ভব নয়।

শিক্ষা খাতে স্থবিরতা

নির্বাচনী এলাকার দুটি কলেজের ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলেও এখনো ক্লাস চালু হয়নি। এতে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভয়ভীতি

গত ১৬ বছর ধরে রাজনৈতিক দূর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন ড. মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন এমবিই।

তিনি জানান, তাঁর নির্বাচনী এলাকায় ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে, এবং তাঁর সমর্থকরা প্রচারণায় অংশ নিতে ভয় পাচ্ছেন।

ড. ফয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস করেন — প্রশাসন এসব অপরাধ দমন ও রাজনৈতিক সহিংসতা রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।

তিনি বলেন, “সিলেটের মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হলে উন্নয়ন কার্যক্রমে সমতা আনতে হবে এবং জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।”

জনগণের প্রত্যাশা

সচেতন মহলের মতে, সিলেটের প্রতি অবহেলার চক্র ভেঙে ন্যায়সংগত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয়ভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। প্রবাসী আয়, পর্যটন সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ সিলেটকে এখন প্রয়োজন সত্যিকারের সরকারী অগ্রাধিকার।

লেখক একজন মানবাধিকার সংগঠক, কলামিস্ট, আন্তর্জাতিক গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে অবস্থিত নিউ হোপ গ্লোবালের চেয়ারম্যান

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.