নেহাল আহমেদ, কবি ও সাংবাদিক
Published:2025-10-17 12:54:28 BdST
মিশি সালজং ও গারোদের ওয়াংগালা উৎসব
গারো সম্প্রদায়, যারা ভারতের মেঘালয় ও বাংলাদেশের কিছু অঞ্চলে বাস করে, তাদের সংস্কৃতি ও ধর্ম চিরকালই সমৃদ্ধ। তাদের প্রধান দেবতা মিশি সালজং (Misi Saljong)। গারোরা বিশ্বাস করে, তিনি সৃষ্টিকর্তা ও সর্বশক্তিমান, যিনি মানুষের জীবন, প্রকৃতি এবং ফসলের উন্নতির জন্য আশীর্বাদ দেন।
গারোরা বিশ্বাস করে, শস্য দেবতা 'মিশি সালজং' পৃথিবীতে প্রথম ফসল দিয়েছিলেন এবং তিনি সারাবছর পরিমাণ মতো আলো-বাতাস, রোদ-বৃষ্টি দিয়ে ভালো শস্য ফলাতে সহায়তা করেন। তাই নতুন ফসল ঘরে তোলার সময় 'মিশি সালজং'কে ধন্যবাদ জানাতে উৎসবের আয়োজন করে তারা।
গারোরা প্রকৃতি ও দেবতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। গ্রামের নির্দিষ্ট স্থানকে দেবতার নিবাস হিসেবে মান্য করে সেখানে গান, নৃত্য ও প্রার্থনার মাধ্যমে ভক্তি প্রকাশ করে। মিশি সালজং-এর প্রতি এই ভক্তি তাদের নৈতিকতা, সামাজিক সংহতি ও জীবনমূল্যকে দৃঢ় রাখে।
ওয়ানগালা উৎসব
গারোদের প্রধান উৎসব ওয়ানগালা, যা "শত ড্রামস উৎসব" নামে পরিচিত, মিশি সালজং-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে উদযাপিত হয়। এটি সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম দিন – রুগালা (Rugala): গ্রাম প্রধান (নোকমা) চাল, শাকসবজি ও রাইস বিয়ার (চু) উৎসর্গ করে।
দ্বিতীয় দিন – কাকাট (Kakkat): পুরো সম্প্রদায় নৃত্য, গান ও ড্রাম বাজিয়ে আনন্দ উদযাপন করে।
উৎসবের সময় শতাধিক ড্রামের (ডামা) শব্দে পরিবেশ মুখরিত হয়। পুরুষ ও মহিলারা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে নৃত্য ও গান পরিবেশন করে, যা গারোদের ঐক্য ও সংস্কৃতির প্রতীক।
গারো সম্প্রদায়ের ধর্ম, আচার ও উৎসব মিশি সালজং-এর ভক্তির সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত। ওয়ানগালা উৎসব শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি গারোদের ঐতিহ্য, সামাজিক সংহতি এবং সংস্কৃতির উৎসবমুখর প্রকাশ।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.