November 16, 2025, 4:19 pm


সামিউর রহমান লিপু

Published:
2025-11-16 12:06:19 BdST

রাজধানী জুড়ে দফায় দফায় ককটেল হামলামালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় ফ্লাইওভারের ঢালে ককটেল বিস্ফোরণ


রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় রাতে ককটেল হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসময় হামলাকারীদের ধরতে বিএনপির এক নেতা এগিয়ে এসে ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায় তারা।

শনিবার রাতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাহাত খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত আনুমানিক ১০:৩৭ মিনিটে চারটি মোটরসাইকেলে করে ৮ জন দুর্বৃত্ত মালিবাগের আবুল হোটেল ট্রাফিক সিগন্যাল অতিক্রম করে মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারে ওঠার ঠিক আগমুহূর্তে এই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

এসময় ফুটপাত দিয়ে দলীয় কর্মীদের সাথে হাটছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর রামপুরা থানাধীন ২৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রুবেল হক বিশু ব্যাপারী। তিনি হামলাকারীদের ধরতে এগিয়ে এসে ধাওয়া দিলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায় তারা। 

এই বিষয়ে জানতে চাইলে রুবেল হক বিশু 'দি ফিন্যান্স টুডে'কে বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই মালিবাগ ও আশেপাশের কয়েকটি এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকেই আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছিলাম।

তিনি বলেন, আজকে রামপুরা ও হাজীপাড়ায় দলীয় কর্মসূচী শেষ করে মালিবাগ কমিউনিটি সেন্টারের বিপরীতে সিএনজি স্ট্যান্ড, কেএফসি মোড়, আনসার ক্যাম্প ও আবুল হোটেলের সামনে অবস্থানরত আমার কর্মীদের সাথে সাক্ষাৎ করে এলাকায় আসি। পরে মধুবাগ এলাকায় ককটেল হামলার খবর পেয়ে কয়েকজন কর্মীদের নিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আবুল হোটেল সিগন্যালে কিছুসময় অবস্থান করে বাসায় ফেরার সময় ৪টি মোটরসাইকেলে করে ৮ জন দুর্বৃত্ত এসে আমার সামনেই প্রথমে ১টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। আরও ১টি ককটেল ছোড়ার সময় আমি ধাওয়া দিলে সন্ত্রাসীরা ফ্লাইওভার দিয়ে উঠে মৌচাকের দিকে পালিয়ে যায়।

আরও পড়ুন: মালিবাগে বিএনপি নেতার ওপর সন্ত্রাসী হামলা

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে মালিবাগে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো সন্ত্রাসীরা। আর তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলো রামপুরা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক মো: আলম এবং কার্যকরী সদস্য মোহসীন। এই দুই ভাইয়ের চাঁদাবাজি ও অত্যাচারে এলাকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলো। ৫ আগষ্টের পর এরা পালিয়ে গেলেও বর্তমানে বিএনপির কিছু আপোষকামী নেতার সাথে আঁতাত করে তারা এলাকায় ফেরার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের পুনর্বাসনের পথে বাধা দেয়ায় এর আগেও বেশ কয়েকবার তারা বহিরাগতদের দ্বারা আমার উপর হামলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এলাকাবাসী আমার সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের রুখে দিয়েছে। বর্তমানে এলাকায় সুবিধা করতে না পেরে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে তারাই এই হামলা চালিয়েছে বলে সন্দেহ করছি।

এদিকে, হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাহাত খান। এসময় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা এসে বিষু ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে হামলাকারীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করেন। পরে মালিবাগের অন্তত তিনটি স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহন তল্লাশী করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। 

এই হামলার আগে শনিবার রাতে রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটেছে।  আগারগাঁওয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), পল্লবী, হাতিরঝিল, মৌচাক ও মিরপুরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মধুবাগে ১টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।

এছাড়াও রাজধানীর মিরপুরে দুই স্থানে চারটি ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। তবে পুলিশের ভাষ্য, এগুলো ককটেল ছিল না, পটকা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে দুষ্কৃতিকারীরা।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পল্লবীর মেট্রো স্টেশন ও রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাগুপ্তা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিরপুর ১২ স্বপ্ননগর আবাসিকের গেটের সাগুপ্তা মোড় এলাকায় দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। অন্যদিকে মিরপুরের পল্লবীতে মেট্রো স্টেশনের নিচে আরও দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.