শাহীন আবদুল বারী
Published:2025-12-06 08:45:03 BdST
টুকু মনোনয়ন পাওয়ায় উৎফুল্ল টাঙ্গাইলবাসী
দীর্ঘদিনের ত্যাগ, নির্যাতন-নিপীড়ন ও জেল-জুলুমের শিকার বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে মনোনয়ন দেয়ায় উৎফুল্ল টাঙ্গাইল-৫ আসনের সর্বস্তরের মানুষ।
গত ৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর টুকুর মনোনয়ন ঘোষণা করেন। এই ঘোষণার খবরে গোটা টাঙ্গাইল জেলার সর্বস্তরের মানুষ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সাথে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতা কামনায় দোয়া করেন।
টুকুর মনোনয়ন পেতে দেরি হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উদ্বিগ্ন ছিলেন। টুকু মনোনয়ন পাওয়ায় টাঙ্গাইলে বিএনপির আটটি আসন পেতে আর বেগ পেতে হবে না বলে বিশ্বাস করছেন জেলাবাসী। কারণ টাঙ্গাইল জেলায় বিএনপির ভঙ্গুর রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে টুকুর সার্বিক প্রচেষ্টায়। টাঙ্গাইলের সাধারণ মানুষের কাছে টুকু শুধু একজন জনপ্রিয় নেতাই নন, তিনি সকলের পরিবারের সদস্য। তাকে ঘিরে টাঙ্গাইলবাসীর অনেক বড় স্বপ্ন। তিনি এমপি হলে মন্ত্রীও হবেন। মুছে যাবে টাঙ্গাইলের মানুষের অভাব-অনটন, দূর হবে বেকারত্ব। টাঙ্গাইল শহর হবে উন্নয়নের রোল মডেল।
তবে বিএনপির কতিপয় নেতা টুকুর মনোনয়নকে মেনে নিতে পারেনি। কারণ তারা জানেন, তাদের চাঁদাবাজি, দখলবাজি, টেন্ডার বাণিজ্য ও পদ বাণিজ্যের দিন শেষ। এজন্য তারা জামায়াতের সাথে আতাত করে টুকুর বিরুদ্ধে এখনও নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এদেরকে প্রতিহত করতে বিএনপির নেতাকর্মীরা তারেক রহমানের শক্ত পদক্ষেপ কামনা করেছেন।
সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বিএনপি তথা সারা বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের গর্ব এবং দুঃসময়ের বন্ধু। টুকু শুধু জাতীয় নেতা নন, তিনি বিএনপির দুঃসময়ের কান্ডারী। বিএনপির রাজপথের লড়াকু যোদ্ধা। টুকু এমপি হলে টাঙ্গাইল হবে উন্নয়নের মডেল শহর। যার আপাদমস্তক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ গড়া। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে মনোনয়ন দিয়ে টাঙ্গাইলের রাজনীতিকে শক্তিশালী করেছেন। টুকু পরিবারের আত্মত্যাগ জিয়া পরিবার মূল্যায়ন করেছে। টাঙ্গাইলের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
কে এই টুকু?
সুলতান সালাউদ্দিন টুকু দলের কঠিন সময়ে ক্যাম্পাসে, রাজপথে রক্তাক্ত হয়েছেন। জেল খেটেছেন, জুলুমের শিকার হয়েছেন। টুকুর গাড়িতে চড়ে যারা রাজনীতির ময়দানে যেতেন, সেই সব ছোট ভাই, বন্ধুরা অনেকেই এবার বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। এসবই হচ্ছে টুকুর পরিশ্রমের ফসল। এরাই বিএনপির দুঃসময়ে টুকুর সহযোদ্ধা হিসেবে রাজপথে দীর্ঘদিনের আন্দোলনের লড়াকু সৈনিক।
সুলতান সালাউদ্দিন টুকু টাঙ্গাইল-৫ (সদর) থেকে মনোনয়ন পাওয়ায় উৎফুল্ল তার সকল যোদ্ধারাও। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু পতিত সরকার আমলে ৩৫০ টি হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। ১২ বার জেলে গিয়ে গড়ে ৫ বছর কারাগারে ছিলেন। একাধিকবার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে টুকুকে মেরে ফেলার। টুকু পরিবারের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠলেও হাসিনার প্রশাসন যন্ত্র টুকুর উপর নির্যাতনের ষ্টীম রোলার চালানো বন্ধ করেনি। টুকু পরিবারের উপর সাড়ে ১৫ বছর ধরে চালানো বর্বর নির্যাতনের বিবরণ শুনলে গাঁ শিউরে উঠবে যে কারো। তবুও টুকু দলের হাল ছাড়েননি। আঁকড়ে ধরে রেখেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ। হুকুম তামিম করেছেন বেগম খালেদা জিয়ার। তিলে তিলে নিজেকে নিঃস্ব করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দলের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রেখেছেন।
বিএনপির বিপ্লবী এই নেতা রাজপথে আন্দোলনে পুলিশের লাঠির আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছেন। টুকু নিজে বক্তব্যে বলতেন, সকালে বাসা থেকে বের হতেন, বিভিন্ন জেলা শহরে মামলার হাজিরা দিয়ে রাতে বাসায় ফিরতেন। আওয়ামী দুঃশাসন আমলে এটাই ছিল টুকুর প্রতিদিনের রুটিন। তারেক রহমান টুকুর মনোনয়ন ঘোষণা দিয়ে তাঁর সর্মথকদের উজ্জীবিত করেছেন। টাঙ্গাইল-৫ আসনের অবহেলিত জনগোষ্ঠীরর মুখে হাসি ফুটেছে। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও রাজনীতির "ড্রাইভিং সিটে" ফিরে এসেছে বিএনপি। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর থেকে বিএনপি ছিল প্রতিকূল পরিস্থিতিতে। বিএনপি যদি অভ্যন্তরীণ ঐক্য ধরে রাখতে পারে, তবেই বিএনপির বিজয় নিশ্চিত। আর কঠিন দুঃসময়ের সময়ের পরীক্ষায় যারা পরিক্ষীত তাদেরকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে মূল্যায়ন করার সময় এসেছে।
রাজনীতির ময়দানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে মাঠের যেসব নেতাকর্মী রাজপথে রক্ত ঝড়িয়েছে, জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তিনি টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। তার জনপ্রিয়তা এবং দলের জন্য যে আত্মত্যাগ সেটির মূল্যায়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে মনোনয়ন দিয়ে করেছেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া টুকুকে নিজের সন্তানের মতো স্নেহ-মায়া করেন। সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর দলের জন্য যে অবদান তা শুধু দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের কাছেও টুকুর গ্রহণযোগ্যতা অপরিসীম।
টাংগাইল-৫ আসনের সর্বস্তরের জনগণ গত ৪ ডিসেম্বর টুকুর মনোনয়ন ঘোষণা শোনার জন্য অধীর আগ্রহে টিভির সামনে বসে ছিলেন। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে, গত বছর ৫ আগস্টের পর টাঙ্গাইলের ভঙ্গুর রাজনীতির হাল ধরেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তিনি দলের জন্য, ধানের শীষ প্রতীকের সাথে যারা আছেন তাদেরকে একত্রিত করতে সক্ষম হয়েছেন। এটি সম্ভব হয়েছে টুকুর মেধা, পরিশ্রম ও সাংগঠনিক যোগ্যতার ভিত্তিতে।
টাঙ্গাইল-৫ আসনে টুকুর বিপরীতে যারা অবস্থান নিয়ে নির্বাচন করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী দোসরদের শেল্টার দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তারা মামলা বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের সুযোগ গ্রহণ করেছে। টুকু তাঁর বিনয়ী আচরণ ও ধৈর্যের সাথে তাদেরকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। যে কারণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। বিএনপির হাইকমান্ড বিষয়গুলো সঠিক তদন্ত করে সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এটাই টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের দাবি। টুকুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, দলের জন্য আত্মত্যাগ এবং সাংগঠনিক দক্ষতাকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যথাযথ মূল্যায়ন করে টাঙ্গাইল ৫ আসনে মনোনয়ন দিয়ে সর্বস্তরের জনগণের কাছে টুকুর গ্রহণযোগ্যতার মর্যাদা রেখেছেন।
আওয়ামী দুঃশাসনে নিষ্পেষিত, নির্যাতিত ও জেল-জুলুমের শিকার বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু
আওয়ামী সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে ৩৫০ টি মিথ্যা মামলা ও ১২ বার জেল খেটেছেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের জাতাকলে টুকুর জীবন থেকে হারিয়ে গেছে ৫টি বছর। টুকুর সহধর্মিনী সায়মা পারভীন সিম্মি প্রশাসনের ধারে ধারে ঘুরেও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সন্তান ও স্বজনদের নিয়ে অর্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। তাঁর আর্ত চিৎকারে আআকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠলেও সিম্মির আর্তনাদে সাড়া দেয়নি হাসিনার প্রশাসন যন্ত্র। টুকুকে জেলের বাইরে ও ভেতরে কয়েকবার মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। টুকুর বড় ভাই সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম পিন্টু বিনা অপরাধে কারাগারে ছিলেন প্রায় ১৭ বছর। পরিবারের অন্য সব ভাইদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল জঙ্গির সাথে সম্পৃক্ত সাজানো মামলা। এই পরিবারটিকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে নানা বানোয়াট, মিথ্যাচার ও নির্যাতন করেছে পতিত সরকার। টুকু পরিবারের উপর স্পর্শকাতর নির্যাতন চালানো হয়েছে তা । শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ ধরে রাখতে, পরিবারের মায়া ত্যাগ করে জীবনের প্রায় সবটুকু সময় ব্যায় করে যাচ্ছেন দলের জন্য।
হাসিনা সরকারের অন্যায়,অবিচার প্রতিহত করতে গিয়ে পুলিশের লাঠির আঘাতে অসংখ্যবার রাজপথে রক্তাক্ত হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। রাজপথে আন্দোলনের সময় গাড়ির গ্লাস ভেঙে রক্তাক্ত অবস্থায় টেনে হিছড়ে বের করে টুকুকে মিন্টু রোড়ে নিয়ে চোখ বেধে নির্মমভাবে পিটিয়েছে হাসিনার পুলিশ বাহিনী। মিডিয়ায় সবচেয়ে বেশি শিরোনাম হয়েছেন বিএনপির নির্যাতিত নেতা টুকু।
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া টুকুর সাহস, শক্তি, মেধা, ধৈর্য ও সাংগঠনিক দক্ষতার প্রশংসা করতেন প্রায় সময়। টুকুকে মূল্যায়ন করে ২০২৪ সালে বিএনপির প্রচার সম্পাদক এর দায়িত্ব দেন তারেক রহমান। টুকুর রাজনৈতিক এবং নৈতিক আচরণের কারণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত বিশ্বস্ত হয়ে উঠেন। বিএনপির কঠিন সময়ে মাঠের নেতাদের মধ্যে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু অন্যতম।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কাছে জনপ্রিয় নেতা টুকু
সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টায় তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। টাঙ্গাইল-৫ আসনে জনপ্রিয়তায় টুকু এগিয়ে। টাঙ্গাইলে ভঙ্গুর রাজনীতিতে টুকুর সার্বিক চেষ্টায় সর্বস্তরের জনগণ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে এক সুন্দরময় অবস্থা ফিরে এসেছে। কতিপয় স্থানীয় শীর্ষনেতা টুকুর রাজনৈতিক গঠনমূলক কর্মকান্ড দেখে হতাশায় ভুগছেন। ওই সকল নেতারা ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে গিয়ে দলের ক্ষতিসাধনে লিপ্ত রয়েছে। তাদের মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র গণমাধ্যমসহ দলের হাইকমান্ড অবগত আছেন। বিএনপির জাতীয় পর্যায়ের নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু মেধা, কৌশল ও ধৈর্যের সাথে সবকিছু মোকাবেলা করে এগিয়ে যাচ্ছেন। দল ও নেতাকর্মীদের স্বার্থে একের পর ষড়যন্ত্র প্রতিহত করছেন। অপরদিকে মিথ্যা প্রচারনা আর অপবাদের আশ্রয় যারা নিয়েছেন তাদের জনপ্রিয়তাতেই ধস নেমেছে। দলের নেতাকর্মীসহ জনবিচ্ছিন্নতায় ক্রমেই ছিটকে পড়ছেন তারা।
টাঙ্গাইল-৫ আসনের জনমানুষের কাছে সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর গ্রহনযোগ্যতার অন্যতম কারণ হচ্ছে, তিনি এমপি না হয়েই বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করতে সক্ষম হয়েছেন। বিশেষ করে সদর উপজেলার বিশাল চরাঞ্চলের উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। ইতিমধ্যে টুকুর আন্তরিক চেষ্টা ও তদবিরের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ শুরু হবার পথে। তাঁর বিনয়ী আচরণ টাঙ্গাইল সদরের মানুষের কাছে প্রশংসার পাশাপাশি গ্রহন যোগ্যতা পেয়েছে।
টাঙ্গাইলে গত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী দুঃশাসন ও নির্যাতন
সারাদেশে দলমত নির্বিশেষে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের নির্যাতনের যে তান্ডব চলেছে, টাঙ্গাইলেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বিএনপি-জামায়াতসহ ভিন্নমতের মানুষের বিরুদ্ধে মামলা, হত্যা, গুম এবং তাদের জমিজমা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল ছিল অনেকটা নিত্যদিনের ঘটনা। আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন আর অত্যাচারের ভয়াবহ চিত্র, বলে শেষ করা যাবেনা। জেলা শহর থেকে তৃনমুল পর্যায়ে একই কায়দায় চলেছে নির্যাতন।
সাড়ে ১৫ বছরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২৮১ টি মামলায় অন্তত নয় হাজার নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়। টাঙ্গাইল থেকে বিএনপি নিধন করতে নেয়া হয় বিশেষ পরিকল্পনা। এর অংশ হিসেবে হাফডজন নেতাকর্মীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। কতজন নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরন করেছেন তার হিসাব নেই। বিএনপি নেতাকর্মীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করা হয়। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়ে অনেকে দেশত্যাগ করেন।
টাঙ্গাইলে গণহারে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পান আওয়ামী নেতাকর্মী ও সন্ত্রাসীরা। ফ্যাসিষ্ট হাসিনার পুলিশের গুলিতে জুলাই অভ্যুথানে টাঙ্গাইলের নয়জন ছাত্রজনতা নিহত হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টাঙ্গাইলে আহত হয়েছে দুইশ’ ৭০ জন। যাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু সব কিছুকে সামলিয়ে বিএনপিকে একটি শক্তিশালী জায়গায় দাড় করিয়েছেন।
এদিকে, বিএনপির যে সব শীর্ষনেতা আওয়ামী লীগের দোসরদের শেল্টার দিচ্ছে তাদের মুখোমুখি শত্রুতে পরিনত হয়েছেন টুকু। টাঙ্গাইলে বিএনপির রাজনীতিতে টুকুর বিকল্প নেই বলে দাবি করেন তৃণমূলের ত্যাগি নেতাকর্মীরা।
টুকু পরিবারের উপর জুলুম- নির্যাতন
টাঙ্গাইলের একজন সৎ, সজ্জন ও সাদাসিধে নেতা টুকুর বড়ো ভাই, জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। তাকে ফাঁসানো হয় ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়। টাঙ্গাইল থেকে বিএনপি নিধন পরিকল্পনার অংশ ছিলো হাসিনা সরকারের। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হত্যা মামলায় আব্দুস সালাম পিন্টুর দুই ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন ও রাতুল বাবুকেও আসামী করা হয়। হাসিনার আদালতে সালাম পিন্টু ও মাওলানা তাজউদ্দিনের ফাঁসির আদেশ আর রাতুল বাবুর যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়। আব্দুস সালাম পিন্টু এই মামলায় ১৭ বছর কারাবরণ করেন। তার দুই ভাই ছিলেন গত ১৭ বছর পলাতক।
সালাম পিন্টুর আরেক ভাই ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কৃষিবিদ শামছুল আলম তোফা একাধিক মামলার আসামী হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। বর্তমানে তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন।
আব্দুস সালাম পিন্টুর আরেক ভাই বিএনপির প্রচার সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরে ৩৫০ মামলায় আসামী হন টুকু। তিনি ১২ বার গ্রেফতার হয়ে গড়ে ৫ বছর কারাভোগ করেন। রিমান্ডের নামে টুকুর উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন।
সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আমাদের পরিবারকে টার্গেট করেছিল। মূলত বিএনপিকে ধ্বংসের জন্য এই লক্ষ্য ছিল। তবে আমরা তাতে দমিনি। নিশ্চিত মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে জাতীয়তাবাদি ঝান্ডা বহন করেছি। এখন টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের কাজ করছি। যদি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাকে নমিনেশন দিয়ে এমপি হওয়ার সুযোগ করে দিলেন। যদি আমার উপর আল্লাহর রহমত থাকে তাহলে টাঙ্গাইলকে বদলে দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
টুকুর জনপ্রিয়তা ও সদরে উন্নয়নের ছোঁয়া
টাঙ্গাইল- ৫ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু নিজেকে সাধারন মানুষের কাছে তুলে ধরতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ফলে ইতিমধ্যে নির্বাচনী এলাকার মানুষের কাছে টুকু একটি জনপ্রিয় নাম। টুকুর ব্যাক্তিগত উদ্যোগ ও তদবিরে বিশেষ করে বিশাল চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মন্দিরের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে।
মাহমুদ নগর ইউনিয়নের বহুলী ও মাকোরকোল মধ্য দিয়ে ধলেশ্বরী নদীর উপর প্রায় এক কিলোমিটার একটি ব্রীজ নির্মাণের জন্য এলজিইডি থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে টুকুর চেষ্টার কারণে। বর্ষাকালে নদীটি পানিতে পরিপূর্ন থাকে এবং শুষ্ক মৌসুমে নদীর তলদেশে ১/২ ফিট পানি থাকে। প্রায় অধিকাংশ অংশে বালি জমে থাকে। অধিকাংশ মানুষ প্রতিদিন ইঞ্জিন চালিত খেয়া নৌকায় নদী পাড় হয়ে টাঙ্গাইল সদরে আসা যাওয়া করে থাকে। শুষ্ক মৌসুমে ঘোড়ার গাড়ি, অটোরিকসা ও পায়ে হেঁটে ওই এলাকার আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ নদী পাড়া-পাড় হয়।
মেজর জেনারেল হাসান মাহমুদ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালিন সময়ে টাঙ্গাইল সদর হতে ধলেশ্বরী নদীর পর্ব পাড় পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মান করেছিলেন। কিন্তু ব্রীজটি নির্মান করতে পাড়েননি। তাই টাঙ্গাইল পশ্চিম পাড় সহ চৌহালী উপজেলার মানুষের প্রানের দাবি ধলেশ্বরী নদীতে একটি আরসিসি ব্রীজ নির্মান হোক। প্রায় ৭০০ মিটার এই ব্রীজের একটি ছাড়পত্র ইতোমধ্যে বিআইডব্লিউটিএ থেকে এলজিইডিতে পাঠানো হয়েছে। খুব দ্রুত একনেকের সভায় ব্রীজের নির্মাণ কাজটি অনুমোদন পাবে। আর এর নেপথ্যে রয়েছে সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর অক্লান্ত চেষ্টা।
চরাঞ্চলের মানুষ ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশিদ জানান, মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসানের পর বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর উপর ভরসা রাখছে। তিনি ইতোমধ্যে চর অঞ্চলের মানুষের পাশে বিভিন্নভাবে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সুপারিশে ৮টি রাস্তার কাজ পাশ হয়েছে, যা নির্বাচনের আগেই সম্পন্ন হবে বলে আমরা চর এলাকার মানুষ জানতে পেরেছি। এছাড়াও মসজিদ ও মাদ্রাসা সহ বহু সামাজিক কর্মকান্ডে তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এমপি হলে মন্ত্রীও হবেন বলে টাঙ্গাইলবাসী আশা ব্যক্ত করেছেন।
রাজধানীর নিকটতম ঢাকা বিভাগের অন্যতম আসন হচ্ছে টাঙ্গাইল-৫ (সদর উপজেলা)। একটি পৌরসভা ও ১২ টি ইউনিয়ন নিয়ে এই আসন। বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর তাদের রাজত্ব ধরে রেখেছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনার পতনের পর এই আসনে রাজনৈতিক পেক্ষাপট আমুল পরির্বতন এসেছে। ফলে এই জনগুরুত্বপূর্ণ আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চায় বিএনপি।
দীর্ঘদিন ধরে সুলতান সালাউদ্দিন পুকুর পক্ষে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক ছানু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান খান শফিক, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য সৈয়দ শহীদুল আলম টিটু, জেলা মহিলা দলের সভাপতি মমতাজ ও জেলা যুবদলের আহবায়ক খন্দকার রাশেদুল ইসলাম রাশেদসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নে সকাল থেকে মধ্যেরাত পর্যন্ত গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলা নেতৃবৃন্দ বলেন, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু একজন সৎ, ত্যাগী ও পতিত শেখ হাসিনা সরকারের জেল-জুলুম, নানা হয়রানিকে অপেক্ষা করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হয়ে ছাত্রজীবন থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি টাঙ্গাইলেই বড় হয়েছেন এবং ছাত্রদলের রাজনীতি শুরু করেন। তিনি টাঙ্গাইল সদরের প্রতিটি মানুষের সঙ্গে মিশে গেছেন। তাই এ আসনে টুকুকেই মানুষ চায়।
নেতাকর্মীরা আরো জানান, তিনি এলাকার অসহায় দরিদ্রের আর্থিক, মসজিদ-মাদরাসা, মন্দিরসহ বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করছেন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার আগেই তিনি এলাকার রাস্তা-ঘাট সংস্কার করছেন। যা অন্যান্য এমপি প্রার্থীরা সেটা করেনি। তাই দল সুলতান সালাউদ্দিন টুকু টাঙ্গাইল সদর আসন থেকে ধানের প্রতীকে জনগণের বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন বলে প্রত্যাশা তাদের।
তরুণ ভোটাররা জানান, সালাউদ্দিন টুকু তরুন প্রজন্মেও কাছে একজন আস্থাভাজন হিসেবে আবির্ভুত হয়েছেন। তরুন সমাজকে তিনি স্বপ্ন দেখাতে সক্ষম হয়েছেন খেলাধুল ও সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য থাকলে সমাজে ভাল মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ইতিমধ্যে টাঙ্গাইলে ব্যপক কর্মসুচি হাতে নিয়েছেন।
মনোনয়ন পাওয়ার পর সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, জিয়া পরিবার আমার উপর আস্থা রাখার জন্য। সর্বোপরি আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া সুস্থ হয় আমাদের মাঝে ফিরে আল্লাহর কাছে এই দোয়া করি।
আগামীতে টাঙ্গাইল সদরে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই। সেই সঙ্গে এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের কোন আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমি যদি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে, টাঙ্গাইল সদর কে সন্ত্রাস চাঁদাবাদ ও মাদকমুক্ত হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সেই সঙ্গে উন্নয়নের রোল মডেল করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই। জনগন যদি আমার উপর তাদের আস্থা রাখে আমি অবশ্যই উন্নয়নের মাধ্যমে এর প্রতিদান দেব ইনশাআল্লাহ।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.
