December 7, 2025, 4:37 am


শাহীন আবদুল বারী

Published:
2025-12-07 03:44:26 BdST

টাঙ্গাইল-৪ ও ৮ আসন হারাতে পারে বিএনপি


আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের আটটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। এর মধ্যে টাঙ্গাইল-৪ ও ৮ আসনের দুই প্রার্থী লুৎফর রহমান মতিন এবং অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খানের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে।

আযম খান কর্তৃক এক মুক্তিযোদ্ধাকে হুমকি দেয়ার ঘটনা ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন পত্রিকায়ও এই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

অপর প্রার্থী মতিনের বিরুদ্ধে আওয়ামী দোসরদের আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং পতিত সরকার আমলে সম্পৃক্তার অভিযোগ রয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সাবেক এমপি আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর সাথে আতাঁত করে আয়েশী জীবন যাপন করেছেন। সিদ্দিকীর সাথে বিভিন্ন সভা-সমাবেশেও যোগ দেয়ার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যা মতিন বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাবার পর ফেসবুক সহ অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

তবে মতিন এবং আযম খান বিষয়গুলোকে নির্বাচনে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। ফলে বহু প্রত্যাশিত মনোনয়ন পেয়েও স্বস্তিতে নেই মতিন ও আযম। এই বিষয়টি মিডিয়া সহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিএনপির হাইকমান্ড ইতোমধ্যে অবগত হয়েছে বলে জানা গেছে।

টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ককে হুমকি, নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে বক্তব্য প্রদান ও নির্বাচনী এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের পদত্যাগসহ নানা ঘটনায় বিতর্ক ও সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান। বিএনপির শীর্ষ এই নেতার বিতর্কে বিএনপি যেমন বিব্রত হচ্ছে, তেমনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর বিরূপ প্রভাব পড়ার আশংকা করা হচ্ছে। গণমাধ্যমের কাছে দেয়া বক্তব্যে আহমেদ আযম খান বিষয়টিকে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করছেন।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল-৮ সখিপুর-বাসাইল আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান সম্প্রতি টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক আব্দুল খালেক মন্ডলকে মোবাইল ফোনে হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। হুমকির অডিও গত ২০ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ৩ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ডে মুক্তিযোদ্ধাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়, আপনি সখিপুর - বাসাইলে আসুন, পিঠের চামড়া থাকবে না। আযম খান বলেন, আপনি আমার নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্থ করছেন। আপনার সিএস, আর এস দেখতে হবে আমার। এক পর্যায়ে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে খেয়ে ফেলার হুমকিও দেয়া হয়। তার এই অডিও  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমত ভাইরাল হয়ে যায়। এই ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে মারাত্মক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

সম্প্রতি, মুক্তিযোদ্ধারা সখিপুর তালতলা চত্বরে একটি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। একই দিনে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সমাবেশে যোগ দিয়ে এতে একাত্মতা প্রকাশ করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। ভুয়াপুরেও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন মুক্তিযোদ্ধারা।  

এদিকে ঘটনার পর সখিপুর কলেজের সামনে এক নির্বাচনী পথসভায় আহমেদ আযম খান ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ করেছেন বলে দাবি করেন। এসময় তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পশ্চিমাঞ্চলে যুদ্ধ করেছেন এবং বাসাইল অঞ্চলের একজন সংগঠক ছিলেন তিনি। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সারাজীবন মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করার কথা জানান পথসভায়। তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আযম বিরোধীরা রীতিমতো এই নিয়ে ট্রল শুরু করে। নিজ দলের নেতাকর্মীরাও তাকে নিয়ে সমালোচনা শুরু করে।

সখিপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সাজাহান সাজু (সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত) এক ভিডিও বার্তায় আহমেদ আযমকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মন্তব্য করেন। এতে তিনি বলেন, আহমেদ আযম খান মুক্তিযোদ্ধা, এটা আমরা কোন কাগজে কলমে পাই নাই, দেখি নাই, শুনিও নাই। মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় তার নাম নাই, এটার কোন  ইতিহাসও নাই।

সখিপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অপর এক ভিডিও বার্তায় প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আহমেদ আযমের মুখে বহুবার শুনেছি, তিনি নিজেই বলেছেন তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেননি। এই ভুয়া দাবি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মান খাটো করে।

মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে বিতর্কের ঝড় থামতে না থামতেই সখিপুরে বিএনপি থেকে পদত্যাগের হিড়িক পড়ে যায়। অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খানের বিরুদ্ধে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন, স্বেচ্ছাচারিতা ও দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিমাতাসুলভ আচরনের অভিযোগ এনে সখিপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাজাহান সাজু ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল বাসেদ মাষ্টারসহ ১১ জন নেতা বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগ করেন ওলামা দলের ২২ জন নেতাকর্মী। মোট তেত্রিশ নেতাকর্মীর বিএনপি থেকে পদত্যাগের এই ঘটনা টাঙ্গাইলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। একইদিনে বিএনপি থেকে এভাবে পদত্যাগের নজির খুব কম বলে মনে করছেন অনেকে।

এই বিষয়টিকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক ছুটে যান সখিপুরে। স্থানীয় বিএনপি কার্যালয়ে জরুরী মতবিনিময় সভা করেন তারা। এসময় জেলার সভপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন ও সাধারন সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, বিএনপি সাগরের মত একটি দল। এখান থেকে দু’এক বালতি পানি চলে গেলে কিছুই হবেনা। আগামী নির্বাচনে আযম খানের সুনিশ্চিত বিজয় দেখে ষড়যন্ত্রকারীরা পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটাচ্ছে। তবে কোন ষড়যন্ত্রই সফল হবেনা। অদ্যাবধি চারজনের পদত্যাগপত্র গ্রহন করা হয়েছে বলেও জানান তারা।

এই ব্যপারে টাঙ্গাইল- ৮ সখীপুর-বাসাইল আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান গণমাধ্যমকে বলেন- আমার বিরুদ্ধে, বিএনপি'র বিরুদ্ধে ও ধানের শীষের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে।  তবে জনগণ এবার ঐক্যবদ্ধ আছে, কোন ষড়যন্ত্রই ধানের শীষের বিজয় ঠেকাতে পারবে না।

এদিকে বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। তারা বলছেন, দায়িত্বশীল নেতাদের  বিতর্কিত মন্তব্যে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।  

টাঙ্গাইলের আটটি আসনে বিএনপি প্রাথমিকভাবে প্রার্থীদের মনোনয়ন ঘোষনা করেছে। এসব আসনের দু-একটি ছাড়া বাকি আসনগুলোতে প্রতিদিনই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছে মনোনয়ন বঞ্চিতরা। কালিহাতী ও মধুপুরে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। আর সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ সিদ্দিকী কারামুক্ত হবার পর পাল্টে গেছে টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতি আসনের চিত্র। এই আসনে লতিফ সিদ্দিকী এবং লুৎফর রহমান মতিন একে অপরের পরিপূরক।

২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোজহারুল ইসলাম ঠান্ডু পরাজিত হয় লতিফ সিদ্দিকীর কাছে। লতিফ সিদ্দিকীকে এই নির্বাচনে কঠিনতম সহযোগিতা করেন বর্তমানে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত লুৎফর রহমান মতিন। যা বিএনপির গোয়েন্দা রিপোর্টে আসেনি। উপরন্তু অভিযোগ আছে, ঢাকা থেকে বিএনপির পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা কালিহাতীর বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কথা না বলে, মতিনের আতিথেয়তায় দুপুরে ভুরি ভোজ করেন। যা কালিহাতী জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। সরেজমিনে কালিহাতিতে গিয়ে বিএনপির তৃনমুল ত্যাগী নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।

ওয়াকিবহাল সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়া হয়েছে লুৎফর রহমান মতিনকে। তাকে মনোনয়ন দেয়ার পর থেকেই কালিহাতীতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কারন আওয়ামী লীগের বিগত সাড়ে ১৫ বছর তিনি বিএনপি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন। নেতাকর্মীদের সাথে কোন যোগাযোগ রাখেননি। অনেকটা প্রকাশ্যেই বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন লুৎফর রহমান মতিন। উল্টো তিনি আওয়ামী লীগের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তোলেন। শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকী ও শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন করেছেন এমন অভিযোগও রয়েছে। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ আওয়ামী নেতাকর্মীদের সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মতিনের ঘনিষ্ঠ ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি হত্যা মামলার আসামিরাও মতিনের সভা-সমাবেশে যোগ দিচ্ছে। বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা মতিনের সাথে না থাকায় হত্যা মামলায় অভিযুক্ত নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মী সহ বিভিন্ন মামলার আসামিদের নিয়ে সভা ও মিছিল করে দল ভারি করছেন মতিন। এসব কারনে বিএনপির তৃনমুল নেতাকর্মীরা তাকে মনোনয়ন দেয়ার বিষয়টি মোটেও মেনে নিতে পারছেনা।

কালিহাতীর সাধারন মানুষ ও বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই আসনে সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর বড় একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে। তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হলে আওয়ামী লীগের ভোটের বড় একটা অংশ তার পক্ষে যাবে। এই অবস্থায় বিএনপির প্রার্থী মতিনের পক্ষে জয়ী হওয়াটা কঠিন হয়ে পড়বে।

এদিকে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সগ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু এই আসনে দলের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এরপর তিনি ব্যাপক শোডাউন করছেন। নেতাকর্মীদের ধারনা, তিনিও কালিহাতীর ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের বদলে সুবিধাবাদী নেতাদের প্রতিষ্ঠিত করছেন। ফলে সকল মনোনয়ন প্রত্যাশী তার বিরুদ্ধেও অবস্থান নেন।

শীর্ষ নেতাদের এমন অবস্থানে মাঠে টিটুর অবস্থান নড়েবড়ে হয়ে যায়। তাছাড়া ৫ আগষ্টের পর বিভিন্ন বালু মহাল নিয়ন্ত্রন নেয়াসহ দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠে টিটুর অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন টিটু। এসব কারনে দলের হাইকমান্ড তাকেও মনোনয়ন দেয়নি-এমন কথা মানুষের মুখে মুখে। এই অবস্থায় কালিহাতি আসনে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে উত্তোরন এবং আসন পুনরুদ্ধারে মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হালিম মিয়াকে মনোনয়ন দেবার দাবি উঠেছে।

একজন সৎ ও ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হালিম মিয়ার কালিহাতিতে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু দলের স্বার্থে হাই কমান্ডের নির্দেশে ঐক্যফন্টের কারণে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের গত ১৭ বছর তিনি আইনশৃংখলা বাহিনীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে কালিহাতীর নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন। এলাকায় দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করেছেন। কালিহাতীতে তৃণমূল নেতাকর্মী এবং বঞ্চিত ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ঢাকায় যখন কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা রাস্তায় বের হতে পারেননি, তখনও মুক্তিযোদ্ধার ব্যানারে শহীদ জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যেতেন কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে। ইঞ্জিনিয়ার হালিম বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে তাঁর পরিবার নানাভাবে হুমকির মধ্যে পড়েছে। চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পরিবারের প্রতিটি সদস্য। ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত সহধর্মিণীকে মুমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে রেখেই চলে যেতেন বিএনপির কর্মসূচিতে। দলের প্রতি আস্থা ও অবিচল থেকে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন হালিম মিয়া।

এই ব্যপারে কালিহাতীর মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ইঞ্জিনিয়ার হালিমকে যোগ্য বিবেচনা করেই ২০১৮ সালে দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। পরে হাইকমান্ডের নির্দেশে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান হালিম মিয়া।

মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির পর্যবেক্ষক দল সঠিকভাবে অনুসন্ধান করেনি। যদি গুরুত্ব ও দায়িত্বসহকারে পর্যালোচনা করা হতো তাহলে কালিহাতী-৪ আসন থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হালিমকেই মনোনয়ন দেয়া হতো।

কালিহাতীবাসি বিশ্বাস করে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সঠিক যাচাই-বাছাই করে চুড়ান্ত তালিকায় ইঞ্জিনিয়ার হালিমকেই মনোনয়ন দিবেন।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রাপ্তদের মধ্যে একজন মুক্তিযোদ্ধাও স্থান পাননি। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি পদে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন মুক্তিযোদ্ধা হালিম। যেহেতু বিএনপি মুক্তিযোদ্ধাদের দল এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করতেন; তাই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চুড়ান্ত পর্যায়ে ইঞ্জিনিয়ার হালিমকেই মনোনয়ন দিবেন বলে আস্থা রয়েছে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.