September 19, 2024, 10:15 pm


আবু তাহের বাপ্পা

Published:
2019-12-20 04:40:59 BdST

খেলাপি ঋণ কমাতে ভারতীয় মডেল


এফটি বাংলা

বহুদিন থেকে নিম্নমুখী অর্থনৈতিক অবস্থা থেকে উত্তরণের অনেক রকম আলোচনা চলছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো উপায় পাওয়া যায়নি। তারই অংশ হিসেবে ভারতীয় মডেলকে অনুসরণ করার বিষয়েও আলোচনা চলছে উপর মহলে। ভারতের আইসিবি কোড এবং দেউলিয়া আইন বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করা যায় কিনা এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।

সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর ব্যাংকারস সভায় আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে আইনি কাঠামো সংস্কার ছিল অন্যতম। এ বিষয়ে ব্যাংকাররাও ইতিবাচক মতামত দিয়েছেন।

আইন সংস্কারের মধ্যে রয়েছে অর্থঋণ আদালত কর্তৃক দেউলিয়া আইন ঘোষণার বিধান রাখা, বন্ধকি সম্পত্তি সুষ্ঠু নিলাম কার্যক্রমের জন্য উপযুক্ত বিধির আওতায় অ্যাসেট ইকুইটেশন কোম্পানি গঠন করা, ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে উক্তরূপ ঋণ খেলাপি চিহ্নিত করে তাদের শাস্তি বিধান করা, ঋণ আদায়ের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সালিশি কার্যক্রম নিবিড় ও বেগবান করা, সিকিউরিটাইজেশন এবং মার্জারের বিধি প্রণয়নসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সম্প্রতি ভারতের ২৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক একীভূত করে ১২টিতে পরিণত করার ঘোষণা দেন দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। চলতি বছরের ৩০ আগস্ট এ ঘোষণা দেন তিনি। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে আর্থিক জালিয়াতির বিষয়টি ওঠে আসার পরদিনই এমন ঘোষণা দিলেন দেশটির অর্থমন্ত্রী।

ভারতকে অনুসরণ করে দুর্বলমানের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো একে অপরের সঙ্গে মার্জার বা একীভূতকরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশেও।

গত ১ ডিসেম্বর ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, আদায় প্রক্রিয়া জোরদার করতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছে খেলাপি ঋণ বিক্রির চিন্তা করছে সরকার। আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে। যেগুলোর মাধ্যমে আর্থিক খাতের এই বিষফোড়া কমে আসবে বলে ব্যক্ত করেন তিনি।

সূত্র মতে, বর্তমানে বাংলাদেশের দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ ৩ লাখ কোটি টাকার উপরে। কিন্তু কৌশলে এই পরিমাণ কম দেখাতে মরিয়া একটি মহল। তথ্য বলছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকায়। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড।

মাত্র পাঁচ বছর আগেও (২০১৪) খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। এই সময়ের মধ্যে দুর্নীতি এবং অনিয়ম একরকম বৈধতা পেয়ে আকাশ ছুঁয়েছে দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের অংক। এমনটাই মত খাত-সংশ্লিষ্টদের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মোট অবলোপনকৃত ঋণ ৪০ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। বিশেষ সুবিধায় পুনর্গঠিত ঋণের পরিমাণ ১৫ হাজার কোটি টাকা। গত সাড়ে ৪ বছরে ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এছাড়াও বিশেষ সুবিধায় ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট ও ৯ শতাংশ সুদে ঋণ পুনঃতফসিলের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকায়। সবমিলিয়ে ব্যাংকিং খাতের দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ প্রায় ৩ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা।

খেলাপি ঋণ, অবলোপন, পুনর্গঠিত ঋণ এবং পুনঃতফসিল করা ঋণকে একত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভাষায় স্ট্রেসট অ্যাসেট বা দুর্দশাগ্রস্ত ঋণ বলা হয়।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা