May 20, 2024, 4:33 pm


Siyam Hoque

Published:
2020-03-09 18:39:42 BdST

শিশু সায়মাকে ধর্ষণ-হত্যায় হারুনের মৃত্যুদণ্ড


রাজধানীর ওয়ারীতে সিলভারডেল স্কুলের নার্সারির ছাত্রী সামিয়া আফরিন সায়মাকে (৭) ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় একমাত্র আসামি হারুন আর রশিদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ১ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী আব্দুল হান্নান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে মামলার একমাত্র আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সায়মার মা সানজিদা আক্তার ও বাবা আব্দুস সালাম। তারা এই রায় দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

সায়মার মা সানজিদা আক্তার বলেন, ‌‘আমার মেয়েকে হত্যায় হারুনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়ায় আমি সন্তুষ্ট। সরকার যেন এ রায় দ্রুত বাস্তবায়ন করে।’

এর আগে গত ৫ মার্চ রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৯ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত। মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ১৪ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

চলতি বছরের ২ জানুয়ারি ঢাকার ১ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী আব্দুল হান্নান আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনের ৬৬ দিনের মাথায় এই মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।

গত বছরের ৫ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ধর্ষক হারুন আর রশিদকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ওয়ারী জোনাল টিম মো. আরজুন।

মামলার একমাত্র আসামি হারুন আর রশিদকে গত ৭ জুলাই তার বাড়ি কুমিল্লার তিতাস থানার ডাবরডাঙ্গা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরের দিন হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারীর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন হারুন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

গত বছরের ৫ জুলাই সন্ধ্যার পর থেকে শিশু সায়মার খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার। আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নবনির্মিত একটি ভবনের নবম তলার খালি ফ্ল্যাটের ভেতর সায়মাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। পরে খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পরের দিন সায়মার বাবা আব্দুস সালাম বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওই ভবনের ছয়তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকত সায়মা। বাবা আব্দুস সালাম নবাবপুরের একজন ব্যবসায়ী। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট সায়মা।

বাবা আব্দুস সালাম বলেন, ‘ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সায়মা তার মাকে বলে, ‘‘আমি ওপরে পাশের ফ্ল্যাটে যাচ্ছি।’’ এরপর থেকে নিখোঁজ হয় সায়মা। অনেক খোঁজাখুঁজির পর নবম তলায় খালি ফ্ল্যাটের ভেতর গলায় রশি দিয়ে বাঁধা ও মুখে রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পাই।’

পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেন, প্রাথমিকভাবে সায়মার শরীরে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। ধর্ষণের পর তাকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। ময়নাতদন্তে তার যৌনাঙ্গে ক্ষতচিহ্ন, মুখে রক্ত ও আঘাতের চিহ্ন এবং ঠোঁটে কামড়ের দাগ দেখা যায়।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা