নিজস্ব প্রতিবেদক
Published:2022-10-31 16:49:14 BdST
দৈনিক ইত্তেফাকের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারাএসডিজি অর্জনে সরকারি ও বেসরকারি খাতকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে
সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বেসরকারি খাতের ভূমিকাকে স্বীকৃতি দেয়ার আহবান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলেছেন, দেশে বেসরকারি খাতের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কোম্পানী সামাজিক দায়বদ্ধতা কমর্সূচির (সিএসআর) আওতায় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এটি এসডিজির উদ্দেশ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত।
তারা মনে করেন এসডিজির সফল অর্জনে সরকারি এবং বেসরকারি খাতকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
রবিবার দৈনিক ইত্তেফাক আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেসরকারি খাতের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
ইত্তেফাক কার্যালয়ের মজিদা বেগম মিলনায়তনে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন দৈনিক ইত্তেফাকের বিশেষ প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি অ্যাফেয়ার্সের মূখ্য সমন্বয়ক সিনিয়র সচিব জুয়েনা আজিজ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, যুগ্ম সচিব (এসডিজি অ্যাফেয়ার্স) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। আলোচক ছিলেন, বিএটি বাংলাদেশের হেড অব এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স শেখ শাবাব আহমেদ, ইউনিলিভারের পরিচালক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশীপ এন্ড কমিউনিকেশন্স) শামীমা আক্তার, সুহানা এন্ড আনিস আহমেদ ফাউন্ডেশনের (এমজিএইচ গ্রুপ) সহকারী পরিচালক বাশিরা হারুন, ইউএনডিপির চীফ টেকনিক্যাল এডভাইজার (স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনাল ক্যাপাসিটি ফর এসডিজিএস) ফখরুল আহসান, গ্লোবাল টেলিভিশনের সিইও এবং এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ.ই. মামুন, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইনুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের পরিচালক মোহাম্মদ শফিকুল আলম জুয়েল, দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনৈতিক সম্পাদক মাঈনুল আলম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব জুয়েনা আজিজ বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে সকলকে সমন্বিত উন্নয়নের আওতায় আনতে হবে। এসডিজিতে যেসকল লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে বাংলাদেশ সেগুলোতে আগে থেকেই কাজ করছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানবতার মুক্তির জন্য কাজ করে গিয়েছিলেন। প্রান্তিক এবং দরিদ্র মানুষের উন্নয়নের জন্য বঙ্গবন্ধুর চাওয়াগুলো এসডিজির মূল বিষয়গুলোর সাথে প্রাসঙ্গিক। এসডিজি বাস্তবায়নে আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কমিটমেন্ট রয়েছে।
তিনি বলেন, এসডিজির ১৭টি লক্ষ্য অর্জনে মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়েছে। একশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করা হচ্ছে।
প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বেসরকারি খাত যাতে তাদের ভূমিকা রাখতে পারে সেলক্ষ্যে সরকার তাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে।
এসডিজি অ্যাফেয়ার্সের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম মূল প্রবন্ধে বলেন, এসডিজির কাজের শুরু আছে শেষ নেই। এসডিজির ১৭টি লক্ষ্য অর্জন শুধু বাংলাদেশ নয়, সবদেশের জন্য চ্যালেঞ্জের। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে। যেসব লক্ষ্য অর্জন সহজ সেইগুলো অর্জনে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। মন্ত্রণায়লয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর মধ্যে কাজের সমন্বয়ের উপর জোর দিচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, এসডিজি অর্জনে বেসরকারি খাতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বেসরকারি খাতকে মুনাফার পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
বিএটি বাংলাদেশের হেড অব এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স শেখ শাবাব আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে আমরা ১১২ বছর ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছি। ব্যবসার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়েও আমরা সচেতন। এজন্য কোম্পানীর পক্ষ থেকে নানা ধরণের সামাজিক কর্মসূচি এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। এসব কর্মসূচি সরাসরি এসডিজির লক্ষ্য পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, বিএটি বাংলাদেশ মনে করে শুধু ব্যবসায় নয়, এর সঙ্গে জনগনের কল্যানও জড়িত। বিএটি বনায়ন, সুপেয় পানি সরবরাহসহ পরিবেশ রক্ষায় বেশকিছু কর্মসূচি পালন করে চলেছে। তার মতে, যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করে তাদের রিপোর্টিং নিশ্চিত করা গেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। এজন্য তিনি একটি পৃথক প্লাটফর্মের কথাও উল্লেখ করেন।
ইউনিলিভারের পরিচালক শামীমা আক্তার বলেন, বাংলাদেশে আমরা ৬০ বছরের বেশি কাজ করছি। ইউনিলিভারের সূচনা হয়েছে সামাজিক কমিটমেন্ট থেকে। ২৮টি ব্র্যান্ডের প্রত্যেকটিরই কমিটমেন্ট আছে।
তিনি বলেন, এসডিজির সঙ্গে পরিবেশের বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইউনিলিভার পরিবেশ রক্ষায় নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে প্ল্যাটিক বর্জ্য অপসারণ। প্রাথমিকভাবে নারায়নগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাথে এই কাজ শুরু হলেও পরে চট্টগ্রাম হয়ে এই কর্মসূচির ব্যাপকতা বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন, ইউনিলিভারে ৪২ শতাংশ নারী আছে। ফ্যাক্টরিতেও নারী আছে। শুধুমাত্র বাজার ব্যবস্থায় ওইভাবে নারীদের সম্পৃক্ত করতে পারেনি। প্রান্তিক পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহন বাড়ানোর চেষ্টা করছি।
সুহানা এন্ড আনিস আহমেদ ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক বাশিরা হারুন বলেন, আমরা বর্তমানে বেশকিছু কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এর মধ্যে খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষার উন্নয়নে জোর দেয়া হচ্ছে। যা এসডিজির বিভিন্ন লক্ষ্যের পরিপূরক। আমরা একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম চাচ্ছি। যেখানে সরকার থেকে নির্দেশনা থাকবে যাতে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহজ হয়।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.