বিশেষ প্রতিবেদক
Published:2023-04-16 19:25:11 BdST
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালটি নিজেই হৃদরোগে ভুগছে।
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালটি অনিয়ম এবং দুর্নীতিতে ভরপুর। এখানে দীর্ঘ দিন চাকরির সুবাদে কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা হয়ে উঠছে বেপরোয়া। প্রশাসনিক কর্মকর্তা থেকে ওয়ার্ড ভয় সবাই বেপরোয়া। হাসপাতালটি যেনো তাদের পৈতৃক সম্পত্তি। একেকজন হয়ে উঠছে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছের মতো। গড়েছে অর্থ, গাড়ী, বাড়ী, ফ্ল্যাট, নিজ নিজ এলাকায় সম্পদের পাহাড়। এমনই কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নাম চলে আসছে আমাদের প্রতিনিধির হাতে।
এমনই একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহমুদুজ্জামান। তিনি তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী থেকে প্রমোশন পেয়ে হয়েছে পদোন্নতি। তার চালচলনে মনে হচ্ছে তিনি হাসপাতালটির মালিক। এমন কোনো সেক্টর নেই হাসপাতালে যা তার নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। টেন্ডার, কেনাকাটা, উন্নয়ন, নিয়োগ, আউটসোসিং সব ক্ষেত্রে তার কথা মতোই চলে। এজন্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী বলেন হাসপাতাল সরকারি হলেও এর মালিক মাহমুদুজ্জামান।
মাহমুদুজ্জামান এর বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ থাকলেও বিশেষ ক্ষমতাবলে তার ফাইল আলোর মুখ দেখেনি। সেই থেকে মাহমুদুজ্জামান আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠে। তিনি প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছে।
মাহমুদুজ্জামান নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তার বাবা ছিলেন একজন মাদ্রাসার শিক্ষক। সংসারে ভাই বোন ছিলো ৮ জন। তার পিতার সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে দেখে মাহমুদুজ্জামান পড়া লেখা ছেড়ে চাকরির সন্ধানী রাজধানীতে চলে আসে। ভাগ্য ক্রমে চাকরি পেয়ে যায় জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট হাসপাতালে। এর পর আর মাহমুদুজ্জামানকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এর কিছুদিন পর নিজ এলাকার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তৎকালীন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম সাহেব। তার নাম বিক্রি করে পুরো হাসপাতালের কর্তৃত্ব নিয়ে নেন মাহমুদুজ্জামান। এরপর হয়ে যান প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তখনই তার ভাগ্যের চাকা দ্রুতগতিতে অগ্রসর হতে থাকে। তার সহযোগিতায় হাসপাতালের স্টোরের অনেক মালামাল ও সরকারি ঔষধ সবকিছু বাহিরে চলে যেত একটি চক্রের হাতে। সেই চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করতেন মাহমুদুজ্জামান। সেখান থেকে নিয়মিত তিনি কমিশন পেতেন।
ঢাকা শহরে গড়ে তুলেছেন ফ্ল্যাট, বাড়ি, জমি সহ কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স। এছাড়া নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা শহরে ডায়গনিক সেন্টার, মার্কেট, বাড়ি সহ রয়েছে কয়েকশত একর চাষী জমি। উল্লাপাড়ায় নিজ এলাকায় কয়েকশত একর চাষী জমিতে গড়ে তোলেন ইরিধানের ব্লক। তা দেখাশুনা করছে তার আত্মীয় স্বজন।
হাসপাতালের কোনো কর্মচারীর অপরাধ সামনে চলে আসলে তা ধামাচাপা দিতে মাহমুদুজ্জামান সক্রিয় ভুমিকা রাখেন। তেমনি একজন কৃষ্ণপদ দাসের দুর্নীতি ধরা পড়লে তা মাহমুদুজ্জামান মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ধামাচাপা দিতেন। এরকম অনেক কৃষ্ণপদের মত কর্মচারীদের অনিয়ম দুর্নীতিও মাহমুদুজ্জামান দফা রফা করেছেন।
এফটি টীম মাহমুদুজ্জামান এর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়সহ দুর্নীতি দমন কমিশনের আমলে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তার বিষয়ে আমাদের ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হবে।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.