নিজস্ব প্রতিবেদক
Published:2023-08-28 01:54:26 BdST
ভাঙ্গায় রোগীর পেটের ভেতর গজ ও মলমূত্র রেখেই সেলাই!
ভাঙ্গার গ্রীন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়গোনিস্ট সেন্টারের বিরুদ্ধে প্রসূতির পেটের ভিতর গজ ও মলমুত্র রেখে সেভাবে সেলাই করে ছাড়পত্র দিয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন মধ্যপাড়া হাসামদিয়া গ্রামের মাহবুব মিয়ার ছিল তুষার মিয়া।
সিজার করে স্ত্রী সন্তান বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কিছু দিন পরে স্ত্রী অসুস্থবোধ করলে বের হয়ে আসে আসল ঘটনা।
তুষার বলেন, 'গত ২৪/০৩/২০২৩ইং তারিখে ৩.৩০ মিনিটের সময় আমার স্ত্রী মোসাম্মাৎ এ্যামি আক্তারকে ডাঃ তামান্না হাসান ও ডাঃ গোপাল দাসের তত্ত্বাবধানে সিজার করানোর জন্য ভাংগা গ্রীন (প্রাঃ) হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করি। যথাসময়ে আমার স্ত্রীকে তারা সিজার করেন। এসময় আমার একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয় । গত ২৭/০৩/২০২৩ইং তারিখে রোগীকে ছাড়পত্র প্রদান করেন।
তিনি আরও জানান, রোগীকে বাসায় নেওয়ার কিছুদিন পরে হঠাৎ স্ত্রী অসুস্থতাবোধ করলে গ্রীন হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করি এবং রোগীকে পুনরায় হাসপাতালে নিয়ে যাই। তখন পুনরায় বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা নিরিক্ষা করার পর রোগীর সঠিক কোন সমস্যা নির্ণয় করতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তুষারকে জানান তার স্ত্রীর থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিয়েছে। পরে তাদের পরামর্শ ছাড়াও তুষার তার স্ত্রীকে ফরিদপুরে অভিজ্ঞ ডাক্তার দেখান। সেখানেও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা করা হয়।
কিন্তু, সেখানেও রোগীর সঠিক সমস্যা নির্ণয় করতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে, তারা তুষারকে জানান তার স্ত্রীর থাইরয়েডে কোন সমস্যা নেই।
তখন তুষার তার স্ত্রী ও বাচ্চার কথা বিবেচনা করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় (২২/০৮/২৩ইং) তারিখে নিয়ে যান। তারা বেশ কিছু রিপোর্ট করেন এবং হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। তখন ২৩/০৮/২৩ইং তারিখে তুষার তার স্ত্রীকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পরীক্ষা- নিরিক্ষা করেন এবং অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সঠিক সমস্যা সনাক্ত করেন। এসময় রোগীর পেটের ভিতর গজ ও মলমুত্র পাওয়া যায় বলে ডাক্তারগণ নিশ্চিত করেন।
তাদের পরামর্শক্রমে তুষারের স্ত্রীকে পুনরায় অপারেশন করে পেটের ভিতরে থাকা গজ ও মলমূত্র বের করা হয়। এতে তুষার সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে মারাত্নক ক্ষতিগ্রস্ত হন।
এই ঘটনায় গ্রীন হাসপাতালের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় যে, এই জাতীয় রোগীদেরকে যে সকল ডাক্তারদের নাম বলে সিজার করানো হয়, বাস্তবে সেসব চিকিৎসক দ্বারা সিজার না করিয়ে অনভিজ্ঞ ডাক্তার ও নার্স দ্বারা সিজার করানো হয়। যেমনটি তুষারের স্ত্রীর বেলায়ও হয়েছে বলে সকলের ধারনা। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় তুষার সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সঠিক বিচার দাবি করছেন।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.