বিশেষ প্রতিবেদক
Published:2024-01-08 15:11:29 BdST
বাংলাদেশে শাখা খুলতে চায় রাশিয়ার এসবার ব্যাংক
রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য আছে এমন বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোকে ব্যাংকিং সেবা দিতে বাংলাদেশে শাখা খোলার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে এসবার ব্যাংক অব রাশিয়া।
এসবার ব্যাংক অব রাশিয়ার এক্সিকিউটিভ বোর্ডের ডেপুটি চেয়ারম্যান আনাতোলি পোপভ কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারকে পাঠানো এক চিঠিতে এই আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে জানা গেছে, রাশিয়া থেকে বাংলাদেশ গম, সার, লোহা, রাসায়নিক পণ্য, প্লাস্টিক, ইস্পাত ইত্যাদি আমদানি করে। আর রাশিয়ায় রপ্তানি করে বাংলাদেশ বস্ত্র পণ্য, চিংড়ি, পাট, সুতা, চামড়া, মোটর যন্ত্রাংশ, হোম টেক্সটাইল, টেরিটাওয়েল, ফুটওয়্যার, সিনথেটিক দড়ি, তৈজসপত্রের মতো পণ্য।
বিপুল বাণিজ্য থাকলেও রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি ব্যাংকিং লেনদেন চালু নেই বাংলাদেশের। রাশিয়ার কোনো ব্যাংক বাংলাদেশে শাখা খুললে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এসবার ব্যাংক অব রাশিয়ার চিঠিতে বলা হয়েছে, উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্য সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় রপ্তানি বাড়াতে ব্যাংক অংশীদার হিসেবে কাজ করতে চায়।
এ ছাড়া চিঠিতে বলা হয়েছে, উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যসহায়তা প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় রপ্তানি বাড়াতে ব্যাংক অংশীদার হিসেবে কাজ করতে চায়।
এ ছাড়া রাশিয়া ও বাংলাদেশের যেসব কোম্পানি উভয় দেশে বিনিয়োগ অথবা ব্যবসা বাড়াতে আগ্রহী তাদের সেবা ও সহায়তা দেবে ব্যাংকটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে লেখা চিঠিতে এসআর ব্যাংক অব রাশিয়ার ডেপুটি চেয়ারম্যান বলেছেন, ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে ভারতের নয়াদিল্লিতে সফলভাবে এসআর ব্যাংকের একটি শাখা পরিচালনা করছে। যা ভারত-রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় সারা বিশ্বে ব্যবসা বাড়াতে মনোনিবেশ করেছে রাশিয়া।
এশিয়া অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশেও ব্যবসা শুরু করতে চায় এসবার ব্যাংক অব রাশিয়া।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানান, দেশে বর্তমানে ৯টি বিদেশি ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের স্ট্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাংক ও এইচএসবিসি ব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রের সিটি ব্যাংক এনএ। ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার উরি ব্যাংক। শ্রীলংকার কর্মাশিয়াল ব্যাংক সিলন পিএলসি। পাকিস্তানের ব্যাংক আল-ফালাহ লিমিটেড, হাবিব ব্যাংক লিমিটেড ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান।
বাংলাদেশ ব্যাংক, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, রাশিয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে দেশটি থেকে বাংলাদেশের আমদানিও। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উভয় দেশের বাণিজ্য শত কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। যার পরিমাণ ছিল ১১১ কোটি ৩৮ লাখ ডলার।
এর পর থেকে প্রতি বছরই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য শত কোটি ডলারের বেশি হচ্ছে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি কমে গেছে ২০ কোটি ডলারের মতো। রাশিয়ার অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে।
বিপুল বাণিজ্য থাকলেও রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি ব্যাংকিং লেনদেন চালু নেই বাংলাদেশের। রাশিয়ার স্পুতনিক ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংকের লেনদেন হবে পাঁচ বছর ধরে এমন আলোচনা থাকলেও কোনো ফলাফল নেই।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.