বিশেষ প্রতিবেদক
Published:2024-10-07 17:19:12 BdST
হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজে নব্য স্বৈরাচারের আবির্ভাব
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে বাংলাদেশে পতন হয়েছে ১৬ বছর দেশ শাসন করা আওয়ামী লীগের। ফ্যাসিস্ট কায়দায় সরকার পরিচালনার কারনে দেশ থেকে রীতিমতো বিতাড়িত হয়েছেন শেখ হাসিনা এবং তার দোসররা। দেশে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে ঠিকই কিন্তু শিক্ষার্থীদের বিচরণক্ষেত্র কিছু শিক্ষাঙ্গনে এই মহান বিপ্লবের সুফল এখনও দৃশ্যমান নয়। কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগের মতোই স্বৈরাচারী কায়দায় পরিচালিত হচ্ছে। এরকমই একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে রাজধানী ঢাকার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ।
রাজধানীর শান্তিনগরে অবস্থিত হাবীবুল্লাহ বাহার ইউনিভার্সিটি কলেজ। একটু কম খরচে ডিগ্রি ও স্নাতক শেষ করার জন্য স্বল্প মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা সাধারণত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন। দেশের শিক্ষাঙ্গণে এই কলেজ কমবেশি অনেকের কাছেই জানাশোনা। কিন্তু এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িতদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে সাম্প্রতিক নানা ইস্যুতে।
সম্প্রতি স্থানীয় কয়েকজন গন্যমান্য ব্যক্তি, শিক্ষক এবং সাধারন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগ পর্যালোচনা এবং প্রাথমিক অনুসন্ধানে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজে নানা অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহারের তথ্য উন্মোচিত হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজে ঝেকে বসেছেন এক নব্য স্বৈরাচার। এই নব্য স্বৈরাচারের নাম প্রফেসর ড. তৌফিকুল ইসলাম (মিথিল)। তিনি অত্র কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি এবং একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
তিনি গত ২৫/০৯/২০২৪ ইং তারিখে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজে এসে শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন এবং আচমকা শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এসময় শিক্ষকরা তাকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেসরকারী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের বিধিবিধান সম্পর্কে বিস্তারিত জানালে তাদের কোন কথার কর্ণপাত না করে নির্বাচন করার জন্য স্বৈরাচারী কায়দায় চাপ প্রয়োগ করেন। এর প্রতিবাদ করলে এই নব্য স্বৈরাচার সম্মানিত এই সকল সিনিয়র শিক্ষকদের প্রচন্ড ধমক দিয়ে এবং অপমান ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কক্ষ থেকে বের হতে বাধ্য করেন। একপর্যায়ে কোন প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে তার গ্রামের স্কুলের সহপাঠী এবং এই কলেজেরই নন এমপিও শিক্ষক জনাব সাইফুর রহমান ভূইয়া, যিনি শিক্ষক তালিকায় ১২ নাম্বারে থাকা সত্ত্বেও তাকে ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ বানিয়েছেন। এখন তাকেই আবার ভোটের নামে সেই স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার হুবহু পদাংক অনুসরণ করে শিক্ষক প্রতিনিধি বানান।
ড. তৌফিকুল ইসলাম (মিথিল) তার ইচ্ছামত ব্যালট পেপার তৈরী করে কোন প্রকার নির্বাচনী বোর্ড গঠন না করে, কোন প্রিসাইডং অফিসার নিয়োগ না দিয়ে, কোন প্রকার নির্বাচনী শিডিউল ঘোষণা না করে, প্রার্থীদের নিকট থেকে কোন প্রকার নমিনেশন পেপার না নিয়ে এবং প্রচারের সুযোগ না দিয়ে মাত্র ১ (এক) ঘন্টার মৌখিক নির্দেশে একটা প্রহসনের ডামি নির্বাচনের নাটক মঞ্চস্থ করেন। যা কেবলমাত্র হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজই নয়, সারা বাংলাদেশেই নজিরবিহীন।
দেশের এই বৈপ্লবিক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সম্ভবত হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনই প্রথম যেখানে নজিরবিহীন অনিয়ম এবং ভোটাধিকার হরনের মাধ্যমে ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার করা হয়েছে।
হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে পরিবর্তিত নতুন এই বাংলাদেশে প্রথম নির্বাচনেই এই নব্য স্বৈরাচার ড. তৌফিকুল ইসলাম (মিথিল) ভোটারদের কোন প্রকার সুযোগ না দিয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার মত শিক্ষকদের টুটি চেপে ধরে জঘণ্য কায়দায় একটা চরম ঘৃণ্য নজির স্থাপন করলেন।
মোদ্দাকথা ড. তৌফিকুল ইসলাম (মিথিল) অনেকটা আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাস্তানদের মতো আগ্রাসী আচরণ করে দ্রুতগতিতে তার নির্বাচন নামক প্রহসন সম্পন্ন করেন।
'দি ফিন্যান্স টুডে'র এই প্রতিবেদকের মাধ্যমে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সাধারণ শিক্ষকগন এবং সাবেক ও বর্তমান সাধারন শিক্ষার্থীরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট অনতিবিলম্বে এই ঘৃণ্য নির্বাচন বাতিলসহ সমালোচিত নব্য ফ্যাসিস্টকে প্রত্যাহার করে একজন সজ্জ্বন, মার্জিত, সুশিক্ষায় শিক্ষিত এবং সর্বমহলে গ্রহনযোগ্য কাউকে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন প্রদানের জোর দাবি জানিয়েছে। অন্যথায় অত্র কলেজের শিক্ষক কর্মচারী, ছাত্র/ছাত্রী এবং ঢাকা-৮ রমনা খিলগাঁও, শাহজাহানপুর এলাকার আপামর জনগন দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.