বিশেষ প্রতিবেদক
Published:2024-11-25 23:25:49 BdST
১০ বছর পর মিললো মুক্তিডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় খালাস পেয়েছেন সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেন
দীর্ঘ ১০ বছর পর দৈনিক ইনকিলাবের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় খালাস পেয়েছেন পত্রিকাটির বিশেষ সংবাদদাতা সাখাওয়াত হোসেন।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নূরে আলম এই আদেশ দেন। সাখাওয়াত হোসেনের খালাসের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ আহমদ গাজী ও শাহ আজিজুর রহমান।
২০১৪ সালের ১৮ আগস্ট ‘প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য এক পুলিশ কর্মকর্তার’ শিরোনামে প্রলয় কুমার জোয়ারদারকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ইনকিলাব পত্রিকায়। পরের দিন ১৯ আগস্ট প্রলয় কুমার প্রকাশিত প্রতিবেদনে ক্ষুব্ধ হয়ে ২০০৬ সালের (সংশোধিত ২০১৩) তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) এবং ধারায় রাজধানীর ওয়ারী থানায় এই মামলা করেন। পরে ১ ফেব্রুয়ারি মামলাটি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত থেকে তথ্য প্রযুক্তি আইনে বিচার করার জন্য সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
মামলার পর রাজধানীর মতিঝিলের আর কে মিশন রোডের ইনকিলাব কার্যালয়ে অভিযান চালায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এ সময় ব্যাপক ভাঙচুর করা হয় এবং বেশ কয়েকটি কম্পিউটার নিয়ে যায় ডিবির অতিউৎসাহী কর্মকর্তারা।
দীর্ঘ সময় পলাতক থেকে সাখাওয়াত হোসেন ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। ওই দিন ট্রাইব্যুনাল জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে ২৫ এপ্রিল ২০১৬ সাখাওয়াত হোসেনকে জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল।
প্রকাশিত সংবাদে যা উল্লেখ করা হয়েছিল
খোদ প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে পুলিশ বাহিনীতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও ওই কর্মকর্তাকে সমীহ করে চলেন। ২৪তম বিসিএসের এই কর্মকর্তা অতিরিক্ত এসপি হয়েও পুলিশ সদর দপ্তরে এআইজি (প্ল্যানিং এন্ড রিসার্চ) এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে চালাচ্ছেন বদলি, শান্তিরক্ষা মিশনে লোক পাঠানো ও নিয়োগ বাণিজ্য। পুলিশে মূর্তিমান আতঙ্ক এ পুলিশ কর্মকর্তার নাম প্রলয় কুমার জোয়ারদার।
পুলিশ সদর দপ্তরে যোগদানের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে পুলিশ বাহিনীর বিতর্কিত ও অযোগ্য পুলিশ কর্মকর্তাদের তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদেও পদায়ন করেছেন। এতে করে পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে মারাত্মক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
প্রলয় কুমার জোয়ারদারের নিয়োগ, বদলি বাণিজ্য ও মিশনে লোক পাঠানোসহ নানা বিষয় তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। এই কর্মকর্তার কারণে ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করে পুলিশের যোগদান করেও শান্তিতে চাকরি করতে পারছেন না অনেক ত্যাগী কর্মকর্তা।
অভিযোগ রয়েছে, নিজের স্বার্থ রক্ষায় পেশাদার অনেক পুলিশ কর্মকর্তাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন প্রলয় কুমার জোয়ারদার।
জুলাই-আগস্ট এ আওয়ামী সরকার বিরোধী ছাত্র-জনতার কঠিন আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট বিগত সরকারের পতনের পর থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদার পলাতক রয়েছেন।
এই পর্যন্ত প্রলয় কুমার জোয়ারদারের বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৯ আগস্ট রাজধানীর লালবাগ থানার হত্যা মামলা নম্বর-৭, ২৮ আগস্ট যাত্রাবাড়ি থানার হত্যা মামলা নম্বর-২৮ এবং ৭ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানার হত্যা মামলা নম্বর-২।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.