February 23, 2025, 12:17 am


রেজাউল করিম চৌধুরী

Published:
2024-12-12 20:22:42 BdST

রিজিওনাল হিউম্যানিটারিয়ান পার্টনারশীপ সপ্তাহ উপলক্ষে ব্যাংককে নাগরিক সমাজের আলোচনাপ্রত্যাবাসন পূর্ব রোহিঙ্গাদের মানবিক অধিকার নিশ্চিতের দাবি


বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্ব দিতে হবে। নাগরিক সমাজের এই বিষয়ে সরকারের সাথে ইতিবাচক সম্পৃক্ততা থাকতে হবে যার মধ্যে থাকবে রোহিঙ্গাদের শরনার্থী মর্যাদা প্রদান করা।

শরনার্থী মর্যাদা প্রদান সহসাই সম্ভব না হলে তাদের অন্ততপক্ষে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ দেয়া, আয়বর্ধনমূলক কাজে নিযুক্ত করা, সর্বত্র চলাচলের অনুমতি প্রদান, ব্যাংক হিসাব খোলার অনুমতি এবং সহজেই লাগানো ও খোলা যায় এমন আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে দেয়া উচিৎ।

আজ রিজিওনাল হিউম্যানিটারিয়ান পার্টনারশীপ উইক-২০২৪ উপলক্ষে ব্যাংককে কোস্ট ফাউন্ডেশন ও কক্সবাজার সিএসও-এনজিও ফোরাম আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তারা এসব দাবি তোলেন।

এশিয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং বিশ্বের অন্যান্য অংশের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১৫০ জন অংশগ্রহণকারী এই আলোচনায় অংশ নেন এবং তাদের প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত কিভাবে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি একটি টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং কার্যকর করা যায় সেই বিষয়ে আলোকপাত করেন।

“রোহিঙ্গা কমিউনিটি রাইটস্ এন্ড মোবিলাইজিং সিভিল সোসাইটি ইন দ্যা এশিয়া-প্যাসিফিক ফর এ ডুরেবল সলিউশন” শীর্ষক সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী এবং এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন একই প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম পরিচালক মোঃ ইকবাল উদ্দিন।

বিশিষ্ট বক্তাদের মধ্যে ছিলেন এশিয়-প্যাসিফিক রিফিউজি রাইটস নেটওয়ার্ক থেকে হাফসার তমিজউদ্দিন; ফ্রি রোহিঙ্গা কোযালিশন থেকে নে সান লুইন; পিস পয়েন্ট মায়ানমার থেকে হটেট স্বে; অল ইন্ডিয়া ডিজাস্টার ম্যানেজম্যান্ট ইন্সটিটিউট থেকে মিহির আর ভাট; উদ্বাস্তু বিশেষজ্ঞ গওহর নঈম ওয়ারা এবং ইউএনএইচসিআর এশিয় আঞ্চলিক অফিসের প্রতিনিধি।

মূল বক্তব্যে মো. ইকবাল উদ্দিন বলেন, ঐতিহাসিকভাবে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং ১৯৮২ সালের পর তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। রোহিঙ্গা সংকট একটি আঞ্চলিক সমস্যা হলেও এর সমাধান মিয়ানমারের হাতেই।

রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটিতে সাড়াদান কর্মসূচির জন্য বাংলাদেশ সরকারকে বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রদান মানবিক সাড়াদানের ক্ষেত্রে একটি নেতিবাচক উদাহরণ তৈরি করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

হাফসার তমিজউদ্দিন বলেন, আসিয়ান দেশগুলোকে রোহিঙ্গাদের রিফিউজি হিসেবে মর্যাদা দিতে হবে এবং তাদেরকে শিক্ষাসহ অন্যান্য সুযোগগুলো প্রদান করতে হবে যাতে তারা বোঝা না হয়ে যায়।

নে সান লুইন বলেন মায়ানমার জান্তাকে তার অপরাধের জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

হটেট স্বে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের রিফিউজি মর্যাদা প্রদান করার দাবি জানান এবং তাদের নিরাপদ অভিবাসনের জন্য সংযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্বের সাথে কাজ করার আহ্বান জানান।

মিহির আর ভাট বলেন, এই ধরণের অমানবিকতা কখনই দীর্ঘস্থায়ী হতে দেয়া যায় না। পার্শদেশগুলোকে রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে হবে এবং আমাদেরকে সে জন্য কাজ করতে হবে।

গওহর নঈম ওয়ারা প্রশ্ন তোলেন যে কেন বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে রিফিউজি মর্যাদা প্রদান করছে না। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি এবং স্থানীয় সরবরাহকারী হতে রোহিঙ্গাদের জন্য মালামাল ক্রয়ের প্রতি তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

ইউএনএইচসিআর ব্যাংকক প্রতিনিধি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং যুদ্ধের কারণে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মায়ানমারে একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের সকলকে সে পরিবেশ তৈরির জন্য কাজ করতে হবে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.