বিশেষ প্রতিনিধি
Published:2024-12-31 16:18:48 BdST
বিআইডব্লিউটিএ’র সিবিএ নেতা ছরোয়ার হোসাইনহত্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে ৫০ কোটি টাকা বাজেট
পতিত সরকারের সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান ও নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর অন্যতম সহযোগী বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সিবিএ নেতা ছরোয়ার হোসাইন এর খুটির জোর কোথায়? তিনি একাধিক হত্যা মামলার আসামি হয়েও গ্রেফতার হচ্ছেন না। পুলিশ তাকে কেন গ্রেফতার করছেনা তা নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’তে নানা প্রশ্নের দানা বেধেঁছে। অভিযোগ উঠেছে, মামলা থেকে রেহাই পেতে অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে তদবিরে নেমেছেন ছরোয়ার হোসাইন। তিনি টাকার বিনিময়ে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলে ভেড়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে জানাগেছে । সম্প্রতি ছরোয়ার টাঙ্গাইল সদরে একটি ধর্মীয় সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতার সাথে ছবি উঠিয়ে প্রশাসন সহ বিভিন্ন মহলে "বিএনপির সিবিএ নেতা" হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। ছরোয়ারের বিরুদ্ধে রাজধানীর মুগদা থানা ও যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা রয়েছে। তারপরও থেমে নেই তার অপতৎপরতা। ছরোয়ার হোসাইন এর বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতার সাথে ছবি, হত্যা মামলার কাগজ এবং অবৈধ সম্পদ ও অগাধ টাকার খবর গোয়েন্দা ডায়রি’র অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ছরোয়ার হোসাইন গত ৫ আগস্ট পতিত সরকারের পক্ষে শত কোটি টাকা নিয়ে মিশনে নামেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের বিপক্ষে। বিআইডব্লিউটিএ ভবনের ৫ তলায় সিবিএ অফিসে বসে লিড দেন ছরোয়ার হোসাইন ও সিবিএ সভাপতি আবুল হোসেন। ৫ আগস্টের পর আবুল হোসেন বিদেশ পালিয়ে গেলেও ছরোয়ার হোসাইন আছেন বহাল তবিয়তে। দুর্ধর্ষ ছরোয়ার এখন ভোল্ট পালটিয়ে বিএনপি পন্থী সিবিএ নেতা সাজাঁর অপচেষ্টায় লিপ্ত। তার অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে, হত্যা মামলা থেকে রেহাই পাওয়া। এজন্য তিনি ৫০ লাখ টাকা বাজেট করেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর জানা গেছে। এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি তিনি টাঙ্গাইল শহরে কাগমাড়ায় (কাইয়্যামাড়া) একটি ধর্ম সভার আয়োজন করেন। সেখানে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির একজন নেতাকে কৌশলে প্রধান অতিথি করা হয়। সভায় যাওয়ার পর বিএনপি নেতা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন। তবে ছরোয়ারের সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে বিএনপির ওই নেতা তাকে যোগাযোগ করতে বারণ করেন বলে জানা গেছে।
টাঙ্গাইল সদরে কাইয্যামারায় সরজমিনে গিয়ে ছরোয়ার হোসাইন এর ক্ষমতার দাপট ও আত্নীয় স্বজনদের চাকরির খবর সহ নানা ধরনের অভিযোগ উঠে আসে গোয়েন্দা ডায়রির অনুসন্ধানে। সেখানে তিনি প্রায় এক বিঘার একটি প্লট কিনে টিন সেট ঘর নির্মাণ করেছেন। ওই বাসায় ছরোয়ারের মা, ভাগ্নি ও বোন বসবাস করেন। এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই সম্পদ করেছেন বিভিন্ন মানুষকে চাকরি দেয়া টাকার বিনিময়ে। চাকরি দিতে ছরোয়ার হোসাইন এর রেড ছিলো ৫ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা। এলাকার মানুষের কাছে ছরোয়ার হোসাইন বিআইডব্লিউটিএ'র ক্ষমতাধর একজন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। পতিত সরকার আমলে প্রতি শুক্রবার ছরোয়ার টাঙ্গাইলের বাসায় যেতেন। সেখানে চাকরি প্রার্থীরা তার বোন জামাইয়ের মাধ্যমে তাকে টাকা দিতেন। টাকার বস্তা নিয়ে ছরোয়ার ঢাকায় ফিরতেন। বোন জামাই ব্যাংকার হওয়ার সুবাদে তার মাধ্যমে বিদেশ টাকা পাচারের অভিযোগ রয়েছে ছরোয়ার হোসাইন এর বিরুদ্ধে। সূত্রমতে, ছরোয়ার হোসাইন বিআইডব্লিউটিএ থেকে তদবির বাণিজ্য করে বিগত ১৫ বছরে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র জমি লিজ, ঘাট ইজারা, চাকরির তদবির এবং টেন্ডার বাণিজ্য করে ছরোয়ার হোসাইন হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যান বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর জানা গেছে। অধিকাংশ টাকা বিদেশ পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ছরোয়ার হোসাইন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান ও নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর অন্যতম সহযোগী থাকার কারনে চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সবাই তার দাদাগিরিতে তটস্থ থাকতেন। টাকার জন্য ছরোয়ার হোসাইন অনেক অফিসারকে বেইজ্জতি করে চাকরি, টেন্ডার, ঘাট ইজারা ও জমি লিজ এর দালালি করে মাসিক ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে গুরুতর অভিযোগ আছে।
ছরোয়ার হোসাইন তার অবৈধ উপায় অর্জিত টাকা নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের এবং প্রশাসনকে ম্যানেজ করার জন্য দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। এজন্য ছরোয়ার হোসাইন অর্ধ কোটি টাকা বাজেট নিয়ে মাঠে নেমেছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় সভায় গিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সাথে ছবি উঠিয়ে তা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ জানা গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র গড ফাদার ছরোয়ার হোসাইন সংস্থাটির এহেন কোন বিভাগ নেই যে, তার পদচারণা ছিলো না। তিনি সব জায়গায় ছিলেন নাটের গুরু। পতিত সরকারের আমলে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ছরোয়ারের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে, তিনি বেনামে জাহাজ ব্যবসায় পুজি বিনিয়োগ করেছেন। ১৭/১৮ টি অ্যাম্বুলেন্স আছে বেনামে। কক্সবাজারের আলোচিত মাদক সম্রাট এমপি বদির সাথেও ছরোয়ার হোসাইন এর ছিলো সখ্যতা। অভিযোগ আছে, বদির সাথে পার্টনারশিপে কক্সবাজারে ছরোয়ারের হোটেল ব্যবসায় শত কোটি টাকা বিনিয়োগ আছে। বদি মাদক ব্যবসায় ছরোয়ার হোসাইন এর অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে প্রকাশ, নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান এবং প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর হার অনুপাতে টাকা কামিয়েছেন সিবিএ নেতা ছরোয়ার হোসাইন। এখনো বিআইডব্লিউটিএ তার প্রভাব কমেনি। আছেন ফুরফুরে মেজাজে। তার সম্পদের পাহাড় সম্পর্কে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, সে বিগত সরকার আমলে চারজন মন্ত্রীর সমান টাকা একাই কামিয়েছেন। জাহাজ ব্যবসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। বিদেশে পাচার করেছেন অধিকাংশ টাকা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে পতিত সরকারের পক্ষে খরচ করেছেন কোটি কোটি টাকা। গত ৫ আগস্ট ভবন থেকে পালিয়ে যান ছরোয়ার। কিন্তু তার অফিসের আলমারিতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা আটকা পড়ে।পরবর্তীতে টাকাগুলো তার এক অনুসারী দিয়ে সরিয়ে নেন। এ পর্যন্ত নয়, ছরোয়ারের বাসায় থাকা কয়েক কোটি টাকা ৫ আগস্ট রাতের অন্ধকারে সরিয়ে ফেলেন বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে।
বিআইডব্লিউটিএ’তে কয়েকজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং এই সিবিএ নেতার যোগসাজশে সংস্থাটির রন্ধে রন্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষও অজ্ঞাত কারনে ছরোয়ার হোসাইন এর অপরাধ ও অপকর্ম ক্ষতিয়ে দেখছেন না। তবে অনেকেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন। ছরোয়ার ঠান্ডা মাথার একজন মানুষ। টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেন না। সব কিছুতেই টাকা আর টাকা। ছরোয়ার সামান্য একজন কর্মচারী হয়ে সিবিএ নেতা হবার সুবাদে রামরাজত্ব কায়েম করে ক্ষমতার দাপটে পতিত সরকারের পূজারীতে মগ্ন ছিলেন।
অবৈধ আয়ের মাধ্যমে ধন-সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে ছরোয়ারের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা চলমান রয়েছে । ইতোমধ্যে দুদক এ বিষয়ে তৎপর হয়ে উঠেছে বলে জানাগেছে। সূত্রমতে, কোটি কোটি টাকা খরচ করে দুদকের অনুসন্ধান টিমকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন ছরোয়ার। তার অর্থ ভান্ডারে শত শত কোটি টাকা রয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর জানাগেছে ।
তিনি পরিবার ও আত্নীয় স্বজনদের চাকরি দিয়ে নিজস্ব বলয় গড়ে তুলে ছিলেন বিআইডব্লিউটিএতে। ছরোয়ার হোসাইন একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। সিবিএ নেতা হবার বদৌলতে অসম্ভবকে সম্ভব করে সংস্থায় একচ্ছত্র কায়েম করেন। তিনি এতোই ক্ষমতাধর যে, শ্যালকের চাকরির বয়স সীমা পেরিয়ে গেলেও তাকেও চাকরি দিতে সক্ষম হয়েছেন। স্ত্রী কামরুন নাহার মলি ট্রেসার পদে চাকরি করেন। কিন্তু স্বামী সিবিএ নেতা হওয়ায় তিনি অফিস না করেই শুধু হাজিরা খাতায় সই করে মাসিক বেতন ভাতা ভোগ করেছেন বছরের পর বছর। তার খুটির জোর খুবই শক্তিশালী। এখনো দাপট কমেনি ছরোয়ারের। তিনি যেসব লোকের চাকরি দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে তাদেরকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মহল। ক্ষমতা বলে প্রমোশন থেকে শুরু করে সবই করেছেন ছরোয়ার হোসাইন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিবিএ’র প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন রফিকুল ইসলাম। তার একনিষ্ঠ সমর্থক ও কর্মী ছিলেন ছরোয়ার। তিনি অবস্বরে যাওয়ার পর সবাইকে ম্যানেজ করে ছরোয়ার হোসাইন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন। আবুল-ছরোয়ার জুটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় প্রায় ১৮শ কর্মচারীর অধিকাংশই তাদের উপর ক্ষুব্ধ। কারণ তাদের দুর্নীতির পরিমাণ এতোই বেশি যে, যা কর্মচারীদের ভাবিয়ে তুলেছেন। তবে উপরের স্যারদের সাথে ছরোয়ার হোসাইনের বেশ সখ্যতা থাকায় দুদক এর মামলা সহ সব অনিয়ম দুর্নীতি করেও বহাল তবিয়তে আছেন। বিআইডব্লিটএ’র কর্মচারীদের প্রশ্ন, একজন সিবিএ নেতার নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা, ধন-সম্পদ এবং ব্যাংক ব্যালেন্স এর অভিযোগ থাকা সত্বেও তিনি আছেন ধরাছোয়ার বাইরে । দুর্নীতিপরায়ণ এই ব্যক্তির নিকট থেকে সাধারণ কর্মচারীরা তেমন কোন লাভবান না হলেও তার আত্মীয়-স্বজনরা সব সুবিধাই ভোগ করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা থাকার পরও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেননা। উপরন্ত ছরোয়ার হোসাইন এর প্রতিনিয়ত ডিমান্ড বাড়ছে।
টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ, বদলি, জমি লিজ এবং ইজারা ঘাট সহ বিভিন্ন তদবিরে সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর ডান হাত ছিলেন এই সিবিএ নেতা। যা প্রতিমন্ত্রী নিজেও অবগত ছিলেন। প্রতিমন্ত্রীর এপিএস আবুল বাশার তাকে সর্বদা সহযোগিতা করতেন। এপিএস বাশার ছরোয়ার হোসাইন এর মাধ্যমে নিজে শত শত কোটি কোটি হাতিয়ে নিয়েছেন। পতিত সরকারের এই সব দোসরদের কারণে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিস্থিতি ও আর্থিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে।
ছরোয়ার হোসাইনের শালি যুক্তরাজ্য প্রবাসী নুরুন্নাহার পারভিনের নামে রাজধানীর খিলগাঁও, চৌধুরীপাড়া, মাটির মসজিদ সংলগ্ন বি- ১০৮ নাম্বার বাড়ির ৭ম তলায় প্রায় কোটি টাকা খরচ ১৬শ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন ছরোয়ার। বর্তমানে স্ব-পরিবারে সেখানেই বসবাস করেন শ্যালিকা। নিজের টাকায় কেনা এই ফ্ল্যাটটি শালিকার টাকায় ক্রয় করা হয়েছে বলে ছরোয়ার হোসাইন এর দাবি। তিনি কেয়ারটেকার হিসেবে থাকেন শুধু। টাংগাইলের কাগমাড়ায় ( কাইয়্যামাড়া) কোটি টাকা খরচ করে জমিও ক্রয় করেছেন । জাহাজ ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন কোটি কোটি টাকা। ছরোয়ারের সাথে বসুন্ধরা গ্রুপের ছিলো সখ্যতা। তাদের বিভিন্ন ব্যবসায় পুজি বিনিয়োগ করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দেলডা গ্রামে ছরোয়ার হোসাইনের বাড়ি। চাকরী দেয়ার সুবাদে আত্নীয় স্বজনদের কাছে অনেক প্রিয় সারোয়ার হোসাইন। তবে চাকরি দেয়ার ক্ষেত্রে নগদ টাকা নিয়েই চাকরি দিয়েছেন বলে জানাগেছে ।সিবিএ নেতা ছরোয়ার হোসেন এর পরিবার ও আত্নীয় স্বজনদের মধ্যে যাদের চাকরি দিয়েছেন তারা হলেন, স্ত্রী কামরুন নাহার মলি, পদবি -ট্রেসার।
আপন ফুফাতো ভাই আব্বাস আলী। আপন মামাতো ভাই আশরাফ। আপন চাচাতো শ্যালক আহসানুল হক কাইয়ুম, পদবি-শুল্ক আদায়কারী।
চাচাতো ভাই শামসুল আলম মনি।,আপন খালু আব্দুল জলিল, পদবী - শুল্ক আদায়কারী।
ভাবি - নাজমা বেগম, পদবি -সহকারি। খালাতো ভাই - আনিসুর রহমান, পদবি -শুল্ক আদায়কারী।
আপন ভাতিজির জামাই - তাইজুল, পদবি -ট্রেসার।
আপন খালাতো ভাই আনু, পদবি -সহকারি। আপন মামা ইউসুফ। চাচাতো শ্যালক কাইয়ুমের স্ত্রী রুমেনা আক্তার, পদবী -নিম্নমান সহকারী।
আপন খালাতো ভাই নজরুল ইসলাম, পদবি -গাড়ি চালক।
চাচাতো ভাই - মোজাফফর হোসেন, পদবি -অফিস সহায়ক। আপন খালাতো ভাতিজা আরশাদ, পদবি -অফিস সহায়ক। আপন ভাতিজা -আতিক হাসান, পদবী -অফিস সহায়ক।
চাচতো ভাতিজা -আতোয়ার রহমান, পদবি - অফিস সহায়ক। ভাতিজা হযরত আলী, পদবী -টার্মিনাল গার্ড। আপন ভাতিজা -জুয়েল রানা, পদবী -টিসি।
ফুফাতো ভাই আজগর, পদবী -নিম্নমান সহকারি। ভাগিনা -আনারুল ইসলাম -রেকর্ড কিপার। ভাতিজা -সোহেল রানা, পদবী -পাইলট। চাচাতো ভাতিজা -আব্দুল মালেক -পদবি- লস্কর। ভাতিজা -হাসান, পদবী -অফিস সহায়ক।
চাচাতো ভাতিজা -হযরত আলী, পদবী- টার্মিনাল গার্ড। চাচাতো ভাতিজা শান্ত, পদবি -লস্কর।
ভাতিজা সবুজ শেখ, পদবী- লস্কর। ভাতিজা মশিউর রহমান, পদবী -গ্রীজার।
ভাতিজা হাফিজুল ইসলাম, পদবী -গ্রীজার। ভাতিজা ইমরান হাসান, পদবী -গ্রীজার। ভাতিজা -আতিকুর রহমান -পদবি -মার্ক ম্যান। ভাতিজা আল আমিন, পদবী মার্ক ম্যান।
ভাতিজা জামাল, পদবী - অফিস সহায়ক। তিনি চেয়ারম্যানের দপ্তরে কর্মরত আছেন। ভাগিনা জিয়াউর রহমান, পদবি - নিম্নমান সহকারী। মামতো ভাইয়ের ছেল - আবদুল্লাহ, (অনিক), পদবি- সহকারী।
মামাতো ভাই আনিছুর রহমান, পদবি- শুল্ক প্রহরী এবং ভাগিনা শামিম, পদবি- ট্রাফিক। তিনি সুপারভাইজার পদে অবৈধভাবে অফিসে নিম্নমান সহকারী ডিউটি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও টাকার বিনিময়ে নোয়াখালী বেল্টের অনেক লোকের চাকরি দিয়েছেন সিবিএ নেতা সারোয়ার হোসেন। সব মিলিয়ে প্রায় দুই শতাধিক লোকের চাকরি হয়েছে এই সিবিএ নেতার হস্তক্ষেপে। তার অনুসারীরা চাকরির বিষয় টি পজেটিভ দেখছেন। তবে এতো গুলো মানুষের চাকরি দিয়ে বিআইডব্লিটিএতে নজির স্থাপন করেছেন সিবিএ নেতা ছরোয়ার হোসাইন। সূত্রমতে, বিআইডব্লিউটিএ-কে ঘিরে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে যে তান্ডব শুরু হয়েছে তার একটি অংশের লিড দিচ্ছেন ছরোয়ার হোসাইন। তিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনেও সক্রিয় ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু সক্রিয় নয় মতিঝিল এলাকায় তার বাহিনী দিয়ে তান্ডব চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ছরোয়ার হোসাইনকে ফোন করে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, ছরোয়ার হোসাইন এর অবৈধ ধন-সম্পদ, ব্যবসা বাণিজ্য ক্ষমতার অপব্যহার সাবেক দুই মন্ত্রীর সাথে সখ্যতা,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে টাকা বিনিয়োগ এবং বিদেশে টাকা পাচারের ফিরিস্তি ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবে।
ছরোয়ার হোসাইন এর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা থেকে জানা যায়, যাত্রাবাড়ী থানা মামলা নাম্বার ৭০৪/২০২৪। গত ৫ আগস্ট এর পর এই হত্যা মামলা টি দায়ের করেন মোঃ আওলাদ হোসেন। ওই মামলার বিআইডব্লিউটিএ'র সিবিএ নেতা ছরোয়ার হোসাইন ১৪৯ নাম্বার আসামি। ছরোয়ার হোসাইন আরেক সিবিএ নেতা আক্তার হোসেন ১৫০ নাম্বার আসামি। পান্না বিশ্বাস ১৫১ নাম্বার আসামি। সনজিব কুমার দাস ১৫২ নাম্বার আসামি। তুষার কান্তি বনিক ১৫৩ নাম্বার আসামি। সৈয়দ মোস্তফা ১৫৪ নাম্বার আসামি। মোঃ কাজি মানিক ১৫৫ নাম্বার আসামি এবং জয়নাল ১৫৬ নাম্বার আসামি। উক্ত ব্যক্তিরা বিআইডব্লিউটিএ’র শ্রমিক লীগের সিবিএ নেতা। মুগদা থানা মামলা নাম্বার ২৯৬/২০২৪। উক্ত হত্যা মামলায় ১৩ নাম্বার আসামি সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান। সিবিএ নেতা ছরোয়ার হোসাইন ১২১ নাম্বার আসামি। ১২২ নাম্বার আসামি আক্তার হোসেন এবং পান্না বিশ্বাস ১২৩ নাম্বার আসামি।
যাত্রাবাড়ী এবং মুগদা থানার ওসির সাথে কথা বলে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলন ঠেকাতে পতিত সরকারের পক্ষে ছাত্র জনতাকে নির্মূল ও হত্যা করার মূল পরিকল্পনার সাথে জড়িত উক্ত আসামিরা। শুধু তাই নয়, সিবিএ নেতা ছরোয়ার হোসাইন, আক্তার হোসেন ও পান্না বিশ্বাস টাকার যোগান দাতা হিসেবে কাজ করেছেন। লাখ লাখ টাকা খরচ করে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছেন। আসামিদেরকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছেনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান এই মামলায় জেল হাজতে আছেন। বাকিদেরকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.