মোঃ মাহাবুবুর রহমান
Published:2025-01-12 12:43:29 BdST
ভ্যাট আদায়ে গোপন সমঝোতার অভিযোগ মতিঝিল ভ্যাট সার্কেল রেঞ্জ-৫ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে
ভ্যাট ও ট্যাক্সে দুর্বিষহ মানুষের জীবন। প্রাত্যহিক প্রতিটি সেবা ও পণ্য ক্রয়ে মানুষ অতিরিক্ত ভ্যাট ও ট্যাক্স দিচ্ছে কিন্তু সে ক্ষেত্রে কি মানুষ তার প্রাপ্য মৌলিক অধিকার গুলো পাচ্ছে? দেশের প্রতিটি মানুষ আজ ভ্যাট ট্যাক্সের যাঁতাকলে পিষ্ঠ। রাষ্ট্রের সাধারন মানুষের জীবন ও মানের উন্নতি না হলেও রাষ্ট্রের অক্সিজেন হিসেবে খ্যাত ভ্যাট ও ট্যাক্স আদায়ের দায়িত্বে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জীবন ও মানের উন্নতি ঠিকই হচ্ছে। কথা হচ্ছিল জামালপুর থেকে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে আসা এক মাধ্যবিত্ত দম্পতির সাথে।
জামালপুর থেকে কমালপুর ট্রেন স্টেশনে নেমে পার্শ্ববর্তী আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য ঘুরে ঘুরে মানসম্মত কোন রুম খালি পাচ্ছেনা উক্ত দম্পত্তি। যে সমস্ত হোটেলে রুম পাচ্ছে তার ভাড়াও অত্যাধিক। অত্যাধিক ভাড়া কেন তা অনুসন্ধান করতে গেলে হোটেল থেকে বলা হচ্ছে ভাড়ার সাথে ১৫% ভ্যাট যুক্ত আছে। কমলাপুর স্টেশনটি ভ্যাট মতিঝিল সার্কেল রেঞ্জ-৫ এর অন্তর্ভুক্ত। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে গ্রাহক তার সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ভ্যাট প্রদান করলেও হোটেল কর্তৃপক্ষ ও ভ্যাট অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে অলিখিত চুক্তির মাধ্যমে ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নাম-কাওয়াস্তে মাসিক হারে ভ্যাট দিয়ে থাকে। অথচ গ্রাহককে প্রতিদিনের সেবার সাথে ভ্যাট ঠিকই প্রদান করতে হয়। ভ্যাটের হার বাড়লে দেশ ও জনগণের লাভের চেয়ে সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানের লাভের হার বেশি হয়ে থাকে। একই সাথে ভ্যাট আদায়কারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পকেট ঠিকই ভারী হয়।অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে কমলাপুর স্টেশনটি দেশের প্রধান রেলস্টেশন। সারা দেশ থেকে যাত্রীরা রেলে ভ্রমনের পর স্টেশনে নেমে পার্শ্ববর্তী হোটেল গুলোতে উঠতে বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।সেই সুযোগটি গ্রহন করে আবাসিক হোটেল ও খাবার হোটেল মালিকগণ।দিনাজপুর থেকে আসা যাত্রী বাবুল, একজন শিক্ষার্থী গণমাধ্যম কর্মীর সাথে আলাপকালে বলেন, কমলাপুর ষ্টেশনে থাকা ও খাওয়া অত্যন্ত ব্যয়বহুল কিন্তু খাদ্য ও সেবার মান অত্যন্ত নিম্নমানের। শুধু তাই নয় এখানকার অনেক আবাসিক হোটেলের পরিবেশের ব্যাপারেও রয়েছে ঘোর আপত্তি।পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করায় যোগ্য নয়।এ ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন ভূক্তভোগী যাত্রী বাবুল।
সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহানুর বেগম
মতিঝিল ভ্যাট সার্কেল রেঞ্জ-৫ এর অন্তর্ভূক্ত এলাকার মধ্যে আবাসিক হোটেল, খাবার হোটেল ছাড়াও শতশত বিলাস বহুল বাস সার্ভিস এর কাউন্টার রয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী কমলাপুর ও মতিঝিল থেকে সারাদেশে যাতায়াত করে থাকে। প্রতিটি যাত্রী তাদের সেবা মুল্যের (টিকিট) এর সাথে ১৫% হারে ভ্যাট প্রদান করে থাকে।২/১টি স্বনামধন্য বাস কোম্পানী ছাড়া অধিকাংশ বাস কোম্পানী মাসিক ভিত্তিতে ভ্যাট অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথে চুক্তি করে নাম কাওয়ান্তে ভ্যাট দিয়ে থাকে।
মতিঝিল ভ্যাট সার্কেল রেঞ্জ-৫ অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহানুর বেগম ও মোঃ আনোয়ার কিবরিয়া উক্ত সার্কেলের ভ্যাট আদায়ের দায়িত্বে রয়েছে । উক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে আলাদা গোপন সখ্যতার মাধ্যমে নাম কাওয়ান্তে ভ্যাট আদায়ের তীব্র অভিযোগ উঠেছে।এ ব্যাপারে ভ্যাট সার্কেলের রাজস্ব কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে বক্তব্য পাওয়া যায়নি। দেশের ও জনগনের ভাগ্যের উন্নতি না হলে ও রাজস্ব কর্মকর্তাদের ভাগ্যের পরির্বতন ঠিকই হয়েছে।এদের প্রতিদিনের জীবন-মান ও তাদের অর্জিত সম্পদ থেকেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়।এদের অঢেল সম্পদের সন্ধান উঠে এসেছে গণমাধ্যম কর্মীর অনুসন্ধানে।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট আদায়ের নামে গোপনে সমঝোতার তথ্য প্রমাণ গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। সরকার যদি এখননি কঠোর না হয় এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করে তাহলে সরকারের ভ্যাট আদায়ের সমস্ত পরিকল্পনাই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.