February 23, 2025, 8:47 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2025-02-22 21:41:57 BdST

ফ্যাসিস্ট ও খুনি শেখ হাসিনার দোসরইএমএফের আবেদ আলী ও ইকবাল বাহার গংদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে সর্বমহলে


বাংলাদেশের বিগত বেশ কয়েকটি জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে আলোচিত ২টি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা 'সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন' এবং 'ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম'। নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী অন্যান্য সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কেউই এই ২টি সংস্থা সম্পর্কে কিছুই জানতো না।

নামে 'সার্ক' শব্দটি থাকলেও 'সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা বা সার্কের কোনো সম্পর্কই নেই। এমনকি নিজের লেখা বইয়ে সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনকে 'একটি ভুয়া সংগঠন' বলে উল্লেখ করেছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ৩১ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সংস্থা ২টি বলেছিল, 'একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অতীতের চেয়ে অনেকাংশে ভালো, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে।'

'সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন' এবং 'ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম'—২টি সংস্থার সঙ্গেই জড়িত আছেন মোহাম্মদ আবেদ আলী। তিনি যথাক্রমে একটির মহাসচিব এবং অন্যটির চেয়ারম্যান।

পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের দোসর প্রেতাত্মা ধান্দাবাজ মাওলানা মোহাম্মদ আবেদ আলী ও ইকবাল বাহার গংদের কুখ্যাত ভুঁইফোড় সংগঠন ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএমএফ) এবং সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন ছিল আদতে ধান্দাবাজদের আখড়া।

বিগত সতেরো বছর স্বৈরাচারী খুনি শেখ হাসিনার সরকার বিরোধী সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে দমন পীড়ন, নির্যাতন-নিপীড়ন এবং তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য এহেন কোন কৌশল ও কু-কাজ নাই যা তারা করে নাই। বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর টুটি চেপে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। শুধুমাত্র ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী খুনি শেখ হাসিনার সমর্থন ও গুনগান যারা করতেন তারা ব্যতীত অন্য সকল গণতান্ত্রিক সংগঠনগুলোর রাজনৈতিক কার্যালয় ও অফিসগুলো ছিল তালাবদ্ধ এবং অবরুদ্ধ।

সরকারের নির্দেশে ডিবি, এসবি, পুলিশ প্রশাসন ও ডিজেএফআই এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে সমস্ত সংগঠনগুলোর মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিল আবেদ আলীর ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম ও সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম। তারা ছিল আওয়ামী লীগের সকল কু-কর্মের সহযোগী ও ভাড়াটে দালাল। অন্য যারাই প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিল তাদের ভাগ্যে জুটে ছিল গুম, খুন ও রিমান্ডের নামে লোমহর্ষক অত্যাচার, নির্যাতন।

গণতন্ত্রের হত্যাকারী স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সরকারের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করণের আজ্ঞাবহ দালাল ও এজেন্ট ছিল আবেদ আলী ও ইকবাল বাহার গংদের ভূয়া ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএমএফ)।একতরফা অবৈধ ও ভুয়া ডামি নির্বাচনের সহযোগিতায় ইএমএফ এর চেয়ারম্যান মাওলানা মোহাম্মদ আবেদ আলী, পরিচালক ইকবাল বাহার, ডাঃ আযাদুল হক, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোঃ শাহনেওয়াজ, ডুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হাবিবুর রহমান, বুয়েটের প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আব্দুল জব্বার খান, ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের অফিসার ও ইএমএফ পরিচালক মোঃ তানভীরুল ইসলামরা অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছিল। এরা মূলত ছিল সরকারের অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দেয়ার জন্য দেশ ও বিদেশের মিডিয়ায় প্রেস কনফারেন্স ও বিদেশী ভুয়া পর্যবেক্ষক এনে তাদেরকে দিয়ে নির্বাচন নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও গ্ৰহনযোগ্য হয়েছে তা তুলে ধরার জন্য প্রচার প্রচারনার এজেন্ট।

২০১৮ সালের নির্বাচনের মাত্র ৩ মাস পূর্বে কুখ্যাত ভুয়া ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম (ইএম এফ) সরকারের বিশেষ পরিকল্পনা ও সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারের নীল নকশা অনুযায়ী আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনারদের সহযোগিতায় নিবন্ধন নিয়ে আবেদ আলী ও ইকবাল বাহার গংদের ইএমএফ টিম সরকারের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়।

২০১৮ সালের নির্বাচন সহ প্রতিটি নির্বাচন নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে ইএমএফ ও সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের ব্যানার থেকে বারবার প্রেস কনফারেন্স করে দেশ-বিদেশের মিডিয়ার সামনে তুলে ধরা হয়েছিল।

ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের সকল মন্ত্রী-এমপি এবং সরকারের শরিক বাম ঘরানর রাজনৈতিক নেতাদের সাথে ছিল তাদের দহরম মহরম সম্পর্ক। এই সম্পর্কের জোরেই ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের আবেদ আলী ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা দেশের সকল জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে সরকারের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে জাতীয় প্রেসক্লাব সহ বিভিন্ন স্থানে প্রেস কনফারেন্স করে নির্লজ্জের মত মিথ্যাচারের বুলি আওড়িয়ে নির্বাচনগুলোর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতার বৈধতা দিয়েছিল।

কুখ্যাত আবেদ আলী ও ইকবাল বাহার গংদের টিম আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনুষ্ঠিত প্রতিটি ভোট চুরির উৎসবকে বিধিসম্মত করতে এহেন কোন চেষ্টা নাই যা তারা করে নাই।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নীরবতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ এবং নির্বাচন কমিশনের সাথে যুক্ত হওয়ার জোর চেষ্টা ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছে এই গোষ্ঠী।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন থেকে জোর দাবি উঠছে তথাকথিত ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের আবেদ আলী ও তার সাঙ্গোপাঙ্গদের আইনের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার।

ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের আবেদ আলী ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা দেশের সকল জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে সরকারের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে জাতীয় প্রেসক্লাব সহ বিভিন্ন স্থানে প্রেস কনফারেন্স করে নির্লজ্জের মত মিথ্যাচারের বুলি আওড়িয়ে নির্বাচনগুলোর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতার বৈধতা দিয়েছিল।

বিগত স্বৈরাচারী খুনি শেখ হাসিনার প্রেতাত্মা দেশের নির্বাচনী সকল অপকর্মের দোসর ইএমএফ চেয়ারম্যান মাওলানা আবেদ আলী ও ইকবাল বাহার সহ ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সকল পরিচালক ও মুখপাত্রদের পালিয়ে যাওয়ার আগেই গ্রেফতার ও তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ব্যবস্থা করার দাবি উঠছে সর্বমহলে।

(চলমান)--------------

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.