September 22, 2025, 4:10 am


ড. মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন এমবিই

Published:
2025-09-22 01:50:04 BdST

জামাত এক বৈচিত্রময় ও রহস্যময় চরিত্রের রাজনৈতিক দল


পাকিস্তানী স্বৈরশাসকদের সকল বৈষম্য ও নিপীড়নকে উপেক্ষা করে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর “বাংলাদেশ” রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন।

অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে “জামায়াতে ইসলামী” পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনী গঠন করে বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে সমর্থনকারীদের নির্মমভাবে হত্যা করে কিংবা হত্যা করতে সহযোগিতা করে।

যেহেতু 'জামায়াতে ইসলামী' পাকিস্তান জামায়াতের একটি শাখা ছিল, তাই তারা বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকে বাধাগ্রস্ত করে ধর্মের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের অখণ্ডতাকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধ পরিকর ছিল।

স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হলে ১৯৭২ সালে রচিত সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠন নিষিদ্ধ করা হয় (অনুচ্ছেদ নং-৩৮)। সেসময় আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক পাঁচটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়।

পরবর্তীতে, জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহন করে ১৯৭৮ সালে সংবিধানের ৩৮ নং অনুচ্ছেদে সংশোধনী (দ্বিতীয় ঘোষণাপত্র-পঞ্চদশ সংশোধন) আনেন, যা সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বৈধতা পায়। ফলে এদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করার পথ সুগম হয়।

জিয়াউর রহমানের বদান্যতায় দালাল আইন বাতিল হলে ১১ হাজার রাজাকার জেল থেকে ছাড়া পায় এবং গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপরই ১৯৭৯ সালে “জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ” এর আত্মপ্রকাশ ঘটে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামাত সবসময় বৈচিত্র্যময় চরিত্রের দল হিসেবে আলোচিত। বহুমুখী ষড়যন্ত্র, গোপন আঁতাত এবং রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের কৌশল; এসব দিক থেকে জামায়াতকে আজও ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা হয়।

এই দলটি আন্ডারগ্রাউন্ডের রাজনীতি খুব ভালো বোঝে। তারা একবার বিএনপি, আবার একবার আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করে সব সময় রাজনৈতিক ফায়দা নিয়েছে।

অতীতের বেঈমানি ও দ্বিচারিতা

জামায়াতে ইসলামীর নতুন নেতৃত্ব অনেক স্বার্থপর ও স্বার্থান্বেষী। বিগত দিনে, ১৯৮৬ সালে এরশাদের সঙ্গে জামাতের সখ্যতা ছিল। ১৯৮৬ সালে সিদ্ধান্ত হয় সকল দল নির্বাচন বর্জন করবে। সেদিন শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে লালদীঘির ময়দানে ঘোষণা দিয়েছিলেন, "যারা এরশাদের অধীনে নির্বাচনে যাবে, তারা হবে জাতীয় বেইমান।" কিন্তু জামাত ও আওয়ামী লীগ আবারও ‘র’-এর প্ররোচনায় ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জাতীয় বেইমান হিসেবে নিজেরাই আখ্যায়িত হয়। আর এখন সেই জামাত বলে, জাতীয় পার্টি ফ্যাসিবাদের দোসর। তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে।

তারা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ১৯৯১ সালে মৌখিক জোটে আসে এবং ১৮টি আসন পায়। ক্ষমতার গন্ধ ঐ সময় থেকেই তাদের পেয়ে বসে। পরে 'র'-এর (RAW) খপ্পরে পড়ে ১৯৯৬ সালে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের সাথে যুগপৎ আন্দোলন করে। জেনারেল নাসিমের ষড়যন্ত্রে ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসে।

আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা পেতে ব্যর্থ হয়ে জামায়াত পুনরায় বিএনপির সাথে আঁতাত করে। এই সময়ে তারা শুরু করে আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলন। প্রাথমিকভাবে সফল না হলেও ২০০১ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে গনরায় অনুমান করে এবং বেগম খালেদা জিয়ার বদান্যতায় জোট গঠন করে দলটি ক্ষমতায় আসে।

ক্ষমতার স্বাদ আস্বাদন ও স্বার্থসিদ্ধি 

২০০১ সালে বিএনপির সাথে সরকার গঠন করে এই সুযোগসন্ধানী দলটির ২ জন শীর্ষনেতা মন্ত্রীত্ব বাগিয়ে নেন। মন্ত্রী হয়েই তাদের ক্ষমতার লোভ পেয়ে বসে।  বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েই তারা ইসলামী ভাবধারা তথা শরিয়াভিত্তিতে পরিচালিত অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি, এনজিও, ব্যাংক ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স তাদের নেতা-কর্মীদের প্রদান করেছিলেন যারা পরবর্তীতে মাঠপর্যায়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ধর্মান্ধতা তৈরি করে।

এছাড়া তৎকালীন সময়ের নানা ঘটনা ইঙ্গিত দেয় যে, ধর্মভিত্তিক এই রাজনৈতিক দলটি অত্যন্ত চতুরতার সাথে এবং সুপরিকল্পিতভাবে ব্যাপক স্বজনপ্রীতি করেছে।

অতীত ইতিহাস বলে এরা দলকানা। প্রকাশ্যে সবাইকে বুঝিয়েছে যে দুই শীর্ষ নেতা মন্ত্রীসভায় থাকলেও তারা সরকার ও বিএনপির কাছ থেকে তেমন কোন সুযোগ সুবিধা নিচ্ছে না কিন্তু ভেতরে ভেতরে তারা দলের জন্য ব্যাপক কাজ করেছে।

বিএনপি বুঝতেই পারেনি তাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে কিভাবে এই দলটি নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে নিয়েছে। সত্যিকার অর্থে এই সময় সাংগঠনিকভাবে তারা অত্যন্ত সফল হয়েছিলো দলের ভিত্তি মাঠ পর্যায়ে শক্ত করতে। অন্যদিকে, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার উদারতা ও সরলতার সুযোগ নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধেই তারা সোচ্চার ছিল বিভিন্ন ইস্যুতে।

১/১১ এবং গোপন আঁতাত

১/১১'র পুরো ষড়যন্ত্র সফল হয়েছিলো মূলত 'র'-এর (RAW) সাথে জামাতের হাত মেলানোর কারণেই।

২০০৭ সালের ১/১১ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়। এই সময়ে বিএনপি বড় ধরনের রাজনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হলেও জামায়াতে ইসলামীর কোন মন্ত্রী, এমপি বা শীর্ষ কোন নেতা গ্রেফতার হয়নি এবং দলের উপর কোন আঁচড়ও লাগেনি। তারা সদর্পে দাবিয়ে বেরিয়েছে পুরো দেশ।

তখন তারা ইনিয়ে বিনিয়ে বলেছে যে, বিএনপি একটি দুর্নীতিপরায়ণ রাজনৈতিক দল এবং দলটির অধিকাংশ মন্ত্রী এমপি ও নেতাকর্মীরা দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী। আর তাদের দুইজন মন্ত্রী কোনো অন্যায় বা দুর্নীতি করেনি।

অনেক গবেষক মনে করেন, বিদেশি প্রভাব ও বিশেষ করে আঞ্চলিক গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে আঁতাতের কারণে জামায়াত পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হয়েছিল। তারপরও বিএনপি জামায়াতকে অনেক ছাড় দিয়েছে।

২০০৮ সালের নির্বাচনে এই জামায়াতে ইসলামীই বেগম খালেদা জিয়াকে ভুল বুঝিয়ে এবং জোর করে বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসে মূলত শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসানোর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র সফল করতে। বিএনপির সাথে জামাতের এই বিশ্বাসঘাতকতাই পরে ফ্যাসিবাদের পথকে সুগম করেছিলো। তার ফলাফল এক বর্ণাঢ্য ইতিহাস। 

যুদ্ধাপরাধের বিচার ও বিভাজন

জামায়াতে ইসলামী চারদলীয় জোটের অংশ হিসেবে ২০০১ সাল থেকে ২০১৪ সালের নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে খুবই তৎপর ছিল। 

২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ তাদের, অর্থাৎ বিরোধী জোটের ওপর প্রচুর দমন-পীড়ন ও নির্যাতন করে, যা ছিল অপ্রত্যাশিত। এই অবস্থা দেখে জামাত না পেরে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর (RAW) মধ্যস্থতায় গোপনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আবার আঁতাত করে। কিন্তু বিএনপির নেতাদের তা বুঝতে অনেক দেরি হযয়ে যায়। তখনো বিএনপি জামাতের প্রতি দুর্বল মনোভাব নিয়ে চারদলীয় জোটের অটুট বন্ধন প্রকাশ করে। অন্যদিকে, জামাত আওয়ামী লীগের সঙ্গে গোপন সন্ধিতে লিপ্ত হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের ভারতীয় ‘র’-এর মিশন থেকে সরে আসেনি। 

এরপর শুরু হয় জামাতের প্রভাবশালী নেতাদের যুদ্ধাপরাধের বিচার। গড়ে ওঠে বিশেষ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল। একে একে বাঘা বাঘা সব নেতার ফাঁসির আদেশ হয় এবং কার্যকর করা হয় ফাঁসি। যুদ্ধাপরাধের মামলায় জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিচার ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া ছিল দলটির ইতিহাসে এক বড় ধাক্কা। কিন্তু আধুনিক জামাত তখন প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে বলতে থাকে, তাদের ফাঁসি দিলে বা বিচার কার্যকর হলে জামাতকে আর কেউ যুদ্ধাপরাধীর তকমা দিতে পারবে না।

"ফাঁসি হলে ফাঁসি হয়ে যাক" এমন দাবি করে তারা অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মকে এটি বুঝাতে সক্ষম হয় যে, যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে এখন আর জড়িত নয় জামাত বা জামাতের নতুন প্রজন্ম।

সেই প্রেক্ষাপটেই জামায়াতে ইসলামী ভেঙে গঠিত হয় এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টি। জামায়াতে ইসলামীর মতো সুসংগঠিত একটি দলের এই অপ্রত্যাশিত ভাঙ্গনের বিষয়ে গভীর অনুসন্ধান করতে গিয়ে একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, যুদ্ধাপরাধের মামলায় জামাতের তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিচার ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার নেপথ্যে ছিল দলটির সৌদিপন্থী ও পাকিস্তানপন্থী নেতৃত্বের বিরোধ।

এবি পার্টির শীর্ষ নেতাদের মতে, সৌদিপন্থী নেতৃত্ব দলের পাকিস্তানপন্থী প্রবীণ নেতাদের মৃত্যুদণ্ড ঠেকাতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। প্রবীণ নেতারা জেলখানায় বসে ফাঁসির আগে-পরে এই বিষয়ে অনেক আক্ষেপ করেছিলেন জামাতের ওপর।

শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর থেকেই দলে কোনঠাসা হয়ে পড়ে পাকিস্তানপন্থীরা। যার ফলে দেখা দেয় ভাঙ্গন। তবে ধারনা করা হয় যে, বৃহত্তর স্বার্থে এই বিরোধ পরবর্তীতে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে নিষ্পত্তি করা হয়।

সুযোগ পেয়েই পুনরায় স্বরূপে আত্মপ্রকাশ

১/১১'র কুশীলবদের সাথে এদের সখ্যতা ছিল অনেক গভীর। তারপর শুরু হলো ফ্যাসিবাদের ১৭ বছরের দুঃশাসনের ইতিহাস। সুখে-দুঃখে তারা (জামাত) বিএনপির সাথে ছিল এবং বিএনপিও তাদের আগলে রেখেছিল। কিন্তু ফ্যাসিবাদের বহু প্রতীক্ষিত পতনের পর তারা আবার ফিরে এলো তাদের আসল রূপে। এই মুহুর্তে তাদের অলীক স্বপ্ন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া। সব বাদ দিয়ে যে কোন মূল্যে ক্ষমতা তাদের চাই।

পিআর পদ্ধতি ঘিরে বহুমুখী ষড়যন্ত্র

এখন তারা আবার নিয়ে এলো ধার করা পিআর (PR)। আসলে তাদের সঠিক কোনো আসন নেই। কোন কোন আসনে নিজেদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে, জোট করলে কয়টি আসনে মনোনয়ন পাবে এবং কোন কোন আসনে নিশ্চিতভাবে জিতবে তার সঠিক কোনো হিসাব এখনও তারা মেলাতে পারছে না। কারণ স্বাধীনতার পর তারা এককভাবে কখনও কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। তাই তাদের কাছে সঠিক কোনো পরিসংখ্যানও নেই। কিন্তু তাদের (জামাতের) প্রতিটি আসনেই ছড়ানো-ছিটানো অনেক ভোট আছে। তবে এককভাবে কোনো আসন পাওয়ার মতো পরিসংখ্যান তাদের নেই। নির্দিষ্ট কোনো আসন না থাকায় তারা এখন পিআর পদ্ধতিতে (PR) নির্বাচন করার জন্য মরিয়া।

এই ধার করা পিআর একদিন জামাতের জন্য বুমেরাং হবে, এটা জামাত নিজেও বোঝে। তাই বর্তমান দুর্বল অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এবং অসাংবিধানিক সরকারকে ক্ষমতায় আনার জন্য এসব ফাজলামো শুরু করেছে। এই অসাংবিধানিক সরকার দীর্ঘায়িত হলে জামাতের জন্য ভালো। কারণ তারা অতীতেও এসব কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনের পরই মূলত জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে। যে কোন উপায়েই হোক না কেন, জামায়াতে ইসলামীই একমাত্র সংগঠন যারা প্রত্যক্ষভাবে ৩০০ আসনে নির্বাচন না করেও বিভিন্নভাবে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করেছে। তাই তারা বহুমুখী ষড়যন্ত্র করে। নীল নকশার নির্বাচন, প্রহসন ও অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে মরিয়া এরা।

আমরা যদি পিআর (PR) পদ্ধতির জন্য নেপালের দিকে তাকাই, তাহলে দেখতে পাচ্ছি যে, এই পদ্ধতির কারণেই নেপালে আজ গৃহযুদ্ধ। কারণ পিআর পদ্ধতিতে সবাই সমান সুযোগ চায়। কিন্তু কেউ কম বা বেশি হলে স্বজনপ্রীতির আড়ালে অনেক অকথ্য সমস্যার উদ্ভব হয় এবং একটি স্বাধীন দেশ দাউ দাউ করে জ্বলে পিআরের আগুনে। তাই আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের ছোট দেশগুলোতে পিআর কোনোভাবেই মানানসই বা উপযোগী নয়। কারণ আমরা এখনো গণতন্ত্রকে ভালোভাবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারিনি। কীভাবে আমরা পিআরকে আলিঙ্গন করব আর জামাতকে এই পিআরের কুফল ভোগ করতে দেব?

পিআর (PR) পদ্ধতি সম্পর্কে আমাদের বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ, শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত কেউই জানে না এই পদ্ধতি কীভাবে কাজ করে এবং এর সুফল কুফলই বা কী।

লেখক একজন মানবাধিকার সংগঠক, কলামিস্ট, আন্তর্জাতিক গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে অবস্থিত নিউ হোপ গ্লোবালের চেয়ারম্যান।

সম্পাদনায় শাহীন আবদুল বারী ও সামিউর রহমান লিপু

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.