March 19, 2025, 4:03 pm


নিজস্ব প্রতিবেদক

Published:
2024-02-06 21:00:27 BdST

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দুই মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এরই অংশ হিসেবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে যাবেন। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কোন পূর্ণ মন্ত্রী না থাকায় এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নিজেই। কাজেই এই মন্ত্রণালয়ে যাওয়াটি তার রুটিন কাজের অংশ হিসেবে অনেকেই মনে করতে চাইছেন।

তবে, বিশ্লেষকরা বলছেন যে, রমজানের আগে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কাজের গতি আনার জন্য এবং সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যাবেন। এখানে তিনি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং তাদের কাজ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেবেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী যাবেন কৃষি মন্ত্রণালয়ে। সেখানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং তাদেরকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেবেন। 

২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরপরই প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সফর করেছিলেন। তবে সেবার তিনি প্রথম সফর করেছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এবার তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চেয়ে অগ্রাধিকার দিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে। এ থেকে বোঝা যায় যে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি কতটা সক্রিয় এবং সজাগ।

গতকাল সচিবদের সঙ্গে বৈঠকেও দ্রবমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। বাজার মনিটরিংয়ের জন্য শীর্ষ আমলাদের নির্দেশনা এবং পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়াও আসন্ন রমজানে যেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকে সেজন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

র‍্যাব ইতোমধ্যে মজুতদার এবং দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে সরকার দ্রব্যমূল্যের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।

তবে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, শুধু দ্রব্যমূল্য নয় প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণের পর এখন পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সফর করবেন এবং এসব মন্ত্রণালয়গুলোতে কাজের গতি আনার জন্য সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা এবং সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেবেন। 

আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছিল সেই নির্বাচনী ইশতেহারকে লক্ষ্য রেখেই সমস্ত মন্ত্রণালয়কে কাজ করতে হবে। এবং নির্বাচনী ইশতেহারের কথা স্বরণ করে দেওয়া এবং এর আলোকে স্বল্পমেয়াদী, মধ্য মেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেবেন। 

ধারণা করা হচ্ছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং কৃষি মন্ত্রণালয় সফরের পর প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য মন্ত্রণালয়গুলোতেও যাবেন এবং সেইসব মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবহিত হবেন এবং তাদেরকে সুস্পষ্ট পরামর্শ দিবেন।

সরকারের কর্মকর্তারা মনে করেন যে, প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন কাজের গতি আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং তার নির্দেশনার আলোকে কাজ করা অনেক সহজ হয়।

বিশেষ করে এখন যখন দেশে একটি অর্থনৈতিক সংকট দৃশ্যমান, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে, মূদ্রাস্ফীতি বেড়েছে; এরকম পরিস্থিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব।

তবে, সরকারের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলছেন যে, সরকারের প্রথম লক্ষ্য হলো দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ। বিশেষ করে রমজানে যেন পরিস্থিতি কোনভাবেই অবনতি না হয়, সেই বিষয়টির দিকে সরকার নজর দিচ্ছে এবং সে বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমেই সরকার জনআস্থা অর্জন করতে চায়।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.