September 21, 2024, 12:43 am


অনলাইন ডেস্ক:

Published:
2024-06-05 18:33:14 BdST

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর কিছু সুবিধার অবসান হবে: প্রধানমন্ত্রী


স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর কিছু অভিঘাত বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সুবিধার অবসান ঘটবে। একই সাথে অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিকাশের মাধ্যমে কিছু বাড়তি সুবিধা তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৫ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য খসরু চৌধুরীর এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা জানান। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তীর্ণ হয়ে উন্নয়নশীল দেশের তালিকাভুক্ত হবে। এটি নিশ্চিতভাবে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের জন্য অন্যতম উল্লেখযোগ্য অর্জন। এলডিসি থেকে উত্তীর্ণ পরবর্তী কিছু অভিঘাত বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সুবিধার অবসান ঘটবে। অপরদিকে একই সাথে অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিকাশের মাধ্যমে কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে সরকার রূপকল্প-২০৪১ এবং এ সংশ্লিষ্ট প্রেক্ষিত পরিকল্পনা-২০৪১ গ্রহণ করে, যেখানে ২০৩১ এর মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া, চরম দারিদ্র্য দূর করা এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদা লাভের পথনকশা নির্ধারণ করেছে। রূপকল্প ২০৪১ তথা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, ২০২১-২০৪১ মোট চারটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে, যার প্রথমটি হলো ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন শেষে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে এবং স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে সরকার ‘৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (জুলাই ২০২০-জুন ২০২৫)’ গ্রহণ করা হয়েছে। এ পরিকল্পনা প্রণয়নে বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর মূল লক্ষ্যসমূহ, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি), চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জসমূহকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কতিপয় কার্যকরী কৌশলেরও সুপারিশ করা হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টকে ধারণ করে দারিদ্র্য নিরসনে প্রণীত মধ্যমেয়াদি এ পরিকল্পনার মূলমন্ত্র হলো, ‘সকলের সাথে সমৃদ্ধির পথে’। ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যে মূল বিষয়সমূহের ওপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে, তা হলো, ত্বরান্বিত সমৃদ্ধি এবং সর্বাধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও দারিদ্র্য হ্রাস করা, একদিকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণজনিত চ্যালেঞ্জ অন্যদিকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনায় সরকার বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানমুখী অবকাঠামো উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ গড়ে তোলা এবং প্রতিবন্ধি ও বয়স্ক জনগোষ্ঠীর টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কার্যকর রাজস্ব ও মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এ কার্যক্রমের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বৃদ্ধি, কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি, প্রবাসী আয় প্রেরণের হার বৃদ্ধি, রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখার জন্য রপ্তানি পণ্য ও রপ্তানি গন্তব্যস্থান বহুমুখীকরণ, বিদ্যমান গন্তব্যে রপ্তানির পরিমাণ বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ আহরণের জন্য স্বয়ংসম্পূর অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছে। এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে এখন থেকেই বিভিন্ন দেশ ও আঞ্চলিক বিশ সহযোগিতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ) এবং দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি ত্বরান্বিত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করছে। এছাড়া বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডাব্লিউটিও), আঙ্কটাড, ইউএনডিপিসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা