September 20, 2024, 2:45 pm


কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Published:
2024-08-06 13:59:10 BdST

শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে চাননি: সজীব ওয়াজেদ জয়


সদ্য পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে রাজি ছিলেন না বলে জানিয়েছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। সোমবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির সঙ্গে এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে এমনটা দাবি করেন তিনি।

সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশ ত্যাগ করলেন, তিনি কি দেশেই থাকতে পারতেন? তিনি কি তার নেতাকর্মীদের সঙ্গে থাকতে পারতেন এমন প্রশ্নের জবাবে সজীব ওয়াজেদ জয় এনডিটিভিকে জানান, ‘তিনি থাকতে চেয়েছিলেন, মোটেও দেশ ছেড়ে যেতে চাননি। কিন্তু আমরা জোর করেছিলাম যে— এটি তার জন্য নিরাপদ নয়। আমরা প্রথমে তার শারীরিক নিরাপত্তার জন্য উদ্বিগ্ন ছিলাম; তাই আমরা তাকে চলে যেতে রাজি করাই।’

উপস্থাপক জয়কে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি জানেন, আপনার মা এখন নয়া দিল্লিতে। আপনি তার সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন কিংবা আসলে পরিস্থিতিটা এখন কেমন?’

জবাবে জয় বলেন, ‘আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। আপনি দেখতে পাচ্ছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি অরাজক। তিনি ভালো আছেন, কিন্তু খুবই হতাশ। এটা তার জন্য খুবই হতাশাজনক। কারণ বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করা স্বপ্ন ছিল তার। তিনি গত ১৫ বছর ধরে এ জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ থেকে বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখতে তিনি কাজ করেছেন। এসব কিছুর পরও এই কিছু লোক, বিরোধী দল, জঙ্গিরা এখন ক্ষমতা দখল করেছে।’

‘তিনি (শেখ হাসিনা) থাকতে চেয়েছিলেন। তিনি মোটেও দেশ ছেড়ে যেতে চাননি। কিন্তু আমরা জোর দিয়েছিলাম যে দেশ তার জন্য আর নিরাপদ নয়। আমরা প্রথমে তার শারীরিক নিরাপত্তার জন্য উদ্বিগ্ন ছিলাম। তাই আমরা তাকে চলে যেতে রাজি করাই।’

গত জানুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচনে জয় নিয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনা। তবে কোটা সংস্কার ঘিরে জুন মাসে শুরু হওয়া ছাত্র বিক্ষোভ জুলাইয়ের শেষ ও আগস্টের শুরুর দিকে ব্যাপক সরকারবিরোধী আন্দোলন রূপ নিলে মাত্র সাত মাস পরই ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয় শেখ হাসিনা সরকার। শুধু তাই নয়, পদত্যাগের পর ৭৬ বছর বয়সী এই নেত্রী তার ছোট বোন শেখ রেহানাসহ সামরিক হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন। ধারণা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ প্রধান লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন।

তবে এনডিটিভিকে তার ছেলে জয় বলেছেন, শেখ হাসিনা এখন কোথায় যাচ্ছেন, এ বিষয়ে তার সঙ্গে তিনি আলোচনা করেননি।

যে পরিস্থিতিতে তিনি দেশ ছেড়ে গেছেন, এরপর দেশে বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর করা হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যও ভাঙা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি হতাশার, ক্ষোভের! আমার দাদা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) দেশ স্বাধীন করেছিলেন এবং তারা তাকে এবং আমার পুরো পরিবারকে হত্যা করেছিল। এখন সেই একই শক্তি, এই সংখ্যালঘু; যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, তারা এই সুযোগটি ব্যবহার করছে মূলত স্বাধীনতার জন্য আমাদের কঠোর সংগ্রামকে অস্বীকার এবং ধ্বংস করার জন্য। এটা খুবই হতাশাজনক যে, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ চুপ করে আছে।’

আগামীকাল (সোমবার) সকালে কারফিউ শেষ হচ্ছে, স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হচ্ছে। আপনি কি মনে করেন, সব স্বাভাবিক হতে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আমার সন্দেহ আছে যে, সেনাবাহিনী এত দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারবে। কারণ এই মুহূর্তে যা ঘটছে, তা হলো বিরোধী এবং জঙ্গিরা, তারা শুধু ভাঙচুরই করছে না, তারা আমাদের নেতা, সাবেক মন্ত্রী এবং এমনকি সংখ্যালঘুদেরও খুঁজে বেড়াচ্ছে। তাই অপ্রত্যাশিতভাবে আমি মনে করি না যে, সহিংসতা শেষ হয়েছে।’

তাহলে আপনার মায়ের পদত্যাগের পরও সহিংসতা থামছে না, এটাই কি আপনার পরিবারের মত— জানতে চাইলে জয় বলেন, ‘না, এটা আমার ব্যক্তিগত মত।’

এখন আপনার পরিবার কী আশা, জানতে চাইল জয় বলেন, আমরা আশা করি বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। কিন্তু এই সময়ে আমাদের দলের নেতাদের যেভাবে টার্গেট করা হচ্ছে, আমি বুঝতে পারছি না যে— কীভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে। একভাবে বলতে গেলে, এটা এখন আর আমার পরিবারের দায়িত্ব নয়। আমরা দেখিয়েছি যে, বাংলাদেশের কতটা উন্নয়ন করতে পারি। বাংলাদেশের জনগণ যদি এর পক্ষে দাঁড়াতে না চায় এবং তারা এই সহিংস সংখ্যালঘুদের ক্ষমতা দখল করতে দিতে রাজি হয়, তাহলে জনগণ তাদের প্রাপ্য নেতৃত্ব পাবে।’

তার মা দেশের জন্য সেরাটা করেছেন কি না, তার জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই। আওয়ামী লীগ এখনও দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। বিএনপির আবার ক্ষমতায় আসার সুযোগ আছে এবং আমরা দেখেছি তারা শেষের মতো কেমন ছিল। তারা দায়মুক্তি সহকারে দেশকে ধ্বংস করেছে।’

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা