September 20, 2024, 12:33 pm


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-08-06 15:21:55 BdST

‘আয়নাঘরে হতো নির্মম নির্যাতন, অনেক রাত ঘুমাতে পারিনি’


বাংলাদেশের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের (ডিজিএফআই) আয়নাঘরে প্রচুর লোক আটকা আছে বলে জানিয়েছেন সেখান থেকে ছাড়া পাওয়া ভুক্তভোগীরা।

আয়নাঘরে আটকে থাকা লোকদের মুক্তির দাবিও করেছেন তারা। একইসঙ্গে এসব ঘটনায় জড়িত ডিজিএফআই-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করেছেন তারা।

আয়নাঘর থেকে ফিরে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী বলেন, আমাকে গুম করে রাখা হয়। সেটাকে জয়েন্ট ইন্টোরেগেশন সেল বলে। সেটাকে ডেভলপ করে আয়নাঘর বানানো হয়। প্রচুর লোক সেখানে আটকানো আছেন। তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সেখানে নির্যাতন চলছে, দীর্ঘদিন তারা রাতে ঘুমাতে পারেন না। এটা একটা স্বাধীন দেশে হতে পারে না। আমরা কারও পরাধীন না। কাউকে এভাবে উঠিয়ে নিয়ে রাখা যায় না।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনী আমাদের গর্বের বাহিনী। সেনাবাহিনী স্বাধীনতার প্রতীক। সেনাবাহিনীর উপর বন্দুক রেখে ডিজিএফআই-এর অসৎ কিছু কর্মকর্তা রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীকে বদনামে ফেলতে পারে না। এদেরকে চিহ্নিত করতে হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া আয়নাঘরে যারা বন্দী আছেন, তাদেরকে মুক্তি দিতে হবে। আমরা চাই শান্তি ও শৃঙ্খলা।

তিনি আরও বলেন, ভেতরে যারা আটকা আছেন তাদের মুক্তি দিতে হবে। তাদেরকে চোখ বেঁধে দূরে কোথাও ফেলে দেবে, এমনটা আমরা হতে দেব না। আমরাও সেনাবাহিনীর অফিসার। অল্প কয়েকজন ডিজিএফআইয়ের সদস্যের জন্য আমরা এটা হতে দিতে পারি না। ডিজিএফআই দেশ চালায় না।

আয়নাঘর থেকে ফিরে আসা সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান বলেন, আমি সরকারি আমলা ছিলাম, সচিব হয়েছিলাম। পরে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও হয়েছি। আমাকে কিছু লোক বহুদিন ধরেই ফলো করছিল। আমি ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছোট মেয়েকে আনতে ধানমন্ডির বাসা থেকে যাওয়ার পথে ৮-১০ জন লোক আমার গাড়ি ভেঙে দুইটি পিস্তল মাথায় ঠেকিয়ে আমাকে নিয়ে গেছে। আমাকে আয়না ঘরে নিয়ে এখানে রেখেছে। আমি যেহেতু সেনাবাহিনীর অফিসার, এই ঢাকা সেনানিবাসেই আমি ছিলাম। তাই আমি বুঝতে পেরেছিলাম আমাকে কোথায় রাখা হয়েছে। সেখানে প্রচণ্ড নির্যাতন করা হতো লোকজনকে। গুটি কয়েক পলিটিক্যাল অফিসার যারা সেনাবাহিনীর মান ইজ্জত ডুবিয়ে দিয়েছে এই ডিজিএফআই থেকে। কত যে লোক মেরেছে তারা, সেটা আল্লাহ জানে।

তিনি বলেন, আমি কখনও রাজনীতি করিনি, আমি কোনও দলও করিনি। আমি সরকারি কর্মকর্তা ছিলাম। আমার দোষ ছিল আমি লেখালেখি করতাম। তারা কি আমার কলমটাকেও কন্ট্রোল করতে চায়। আমি তো কোনও বিদ্রোহ লিখি নাই। আমি তো কোনও দেশের বিরুদ্ধে লিখি নাই। আমি চেয়েছিলাম ন্যায় বিচার আর এই ন্যায় বিচার চাওয়ার জন্য আমাকে ১৬ মাস মাটির তলে একটি রুমে আয়নাঘরে ফেলে রাখবে? আমি যে কত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি ফিজিক্যালি, সেটা বলে বোঝাতে পারবো না।

তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, সবার মুক্তি চাই এবং যারা এটা করেছে তাদের বিচার চাই। এরা সেনাবাহিনীর কলঙ্ক ও জাতির কলঙ্ক। তাদেরকে যেন কোনদিন ছাড়া না হয়। যারা ভেতরে আটকা আছে তাদের মুক্তি চাই, জনগণ তাদের মুক্তি চায়।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা