September 20, 2024, 12:42 pm


অনুসন্ধানী প্রতিবেদন:

Published:
2024-08-12 14:09:02 BdST

দুদক ফাইল ধামাচাপাগনপূর্ত অধিদপ্তরের ডিপ্লোমা নেতাদের ক্ষমতার উৎস ‍কি?


দেশব্যাপী দুর্নীতি পরায়ন আমলা, ব্যবসায়ী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে “জিরো টরারেন্স” নীতি ঘোষনার পর দুর্নীতিবাজদের মধ্যে মহাআতঙ্ক বিরাজ করলে ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীর কিছু নেতা গোছের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জিরো টলারেন্স ‘নীতির’ থোরাই কেয়ার করছেন। এর মধ্যে অন্যতম ই-এম বিভাগ-৭ এর উপসহকারী প্রকৌশলী মো: আমিনুল ইসলাম, ই-এম সার্কেল-৩, উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নওশাদুল হক, গণপূর্ত বিভাগ-১ উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ আতাউর রহমান।এরা প্রত্যেকেই গনপূর্ত অধিদপ্তর শাখায় ডিপ্লোমা এসোসিয়েশনের নেতা।

দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্য্যালয় ঢাকার স্মারক নং-০০.০০.০১.০০০০.১০৩.৩৫.০৬৩.০৭(অংশ-৭)৩১০৬৭(১২০)তাং-৮১৯ এর আদেশে মো: আরিফুল ইসলাম উপসহকারী প্রকৌশলী, গণপূর্ত ই-এম বিভাগ-৭ পিতা:- মাও: মো: শাহীদুল ইসলাম, বর্তমান ঠিকানা-১২/৭ এম.সি রায় লেন, পোস্তা, ঢাকা, স্থায়ী: ঠিকানা:-গ্রাম-চরকালাচাঁদপুর, ডাক-সেরাজিয়া মাদ্রাসা, ইউনিয়ন-ধলী গৌরনগর, উপজেলা-লালমোহন,জেলা-ভোলা ।

(২)মোহাম্মদ নওশাদুল হক, উপসহকারী প্রকৌশলী(ই/এম),গণপূর্ত ই/এম সার্কেল-৩,শেরেবাংলা নগর, ঢাকা, পিতা মোহাম্মদ আতিব আলী, বর্তমান ঠিকানা: বাড়ি নং- ৪১, পশ্চিম কাফরুল, মোল্লাপাড়া, তালতলা,ঢাকা, স্থায়ী ঠিকানা:-গ্রাম মাইজবাড়ী,ডাকঘর-বাদশাগঞ্জ,উপজেলা,ধর্মপাশা,জেলা-সুনামগঞ্জ।

(৩)মোহাম্মদ আতাউর রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল), শের-ই-বাংলা নগর গণপূর্ত বিভাগ-১, শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকা, পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ মতিউর রহমান বর্তমান ঠিকানা: ৩২৫ উলন রোড, পশ্চিম রামপুরা ঢাকা, স্থায়ী ঠিকানা: বাড়ি নং- ৬৭/১, তরোয়া, ডাকঘর- নরসিংদী- ১৬০০, থানা- নরসিংদী সদর,নরসিংদী পৌরসভা,জেলা-নরসিংদী ।

উপরোক্ত ব্যক্তিদের নামে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত স্বনামে/বেনামে বিপুল পরিমান সম্পদের মালিক হয়েছেন মর্মে অভিযোগ ‍আনা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ (২০০৪ সানের ৫ নং আইন) এর ধারার ২৬ –উপধারা (১) দ্বারা অর্পিত ক্ষমতাবলে উপরোক্ত ব্যক্তিদের নিজের এবং তাদের উপর ‍নির্ভরশীল ব্যক্তি বর্গের স্বনামে/বেনামে যাবতীয় স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি দায় দেনা আয়ের উৎস এবং উহা অর্জনের বিস্তারিত বিবরনী আদেশ প্রাপ্তির ২১ কার্য দিবসের মধ্যে নিদিষ্ট ছকে ২৬/১২/২০২১ইং তারিখে সাক্ষরিত সৈয়দ ইকবাল হোসেন পরিচালক (বি:অনু: ও তদন্ত-২) কার্যালয়ে প্রেরনের জন্য বলা হলেও উক্ত অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘ ৪ বছরে অদৃশ্য ইশারায় তা ফাইল চাপা পড়ে আছে।

কি এমন রহস্য বা তাদের খুঁটির জোর যে একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ও মীমাংসা করতে পারছে না দুদক! বিভিন্ন অনুসন্ধানে জানা গেছে যে উপরোক্ত ব্যক্তিবর্গ ‍আরও অধিক বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাহারা অধিদপ্তরের ডিপ্লোমা প্রকৌশলী এসোসিয়েশনের নেতা। তাদের ভয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীগন পর্যন্ত তটস্থ থাকে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঠিকাদারদের নিয়ে এদের রয়েছে আলাদা আলাদা সিন্ডিকেট, অধিকাংশ উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের প্রত্যেকের রয়েছে নামে-বেনামে ঠিকাদারী ট্রেড লাইসেন্স। ঘুপচি টেন্ডার অথবা টেন্ডার ছাড়া এরা কাজ সম্পন্ন করে পরবর্তীতে টেন্ডার আহব্বান করে কাজ বাগিয়ে নেয়। বিশেষ করে ই-এম শাখার অধিকাংশ কাজ হয় অতি জরুরী সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অধিকাংশ উপ-সহকারী, প্রকৌশলী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

এই সমস্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা হওয়ার পরে ও থেমে আছে দুদকের অনুসন্ধান।এর ফলে অভিযুক্ত ব্যক্তিগন আরও অধিকতর বেপরোয়া হয়ে অনিয়ম দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।

এদের দাপটে পুরো গনপূর্ত অধিদপ্তর তটস্থ থাকে। অধিদপ্তর সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে এসাসিয়েশনের নাম ভাঙ্গিঁয়ে যে সমস্ত কর্মকর্তারা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত তাদের ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন না করলে অধিদপ্তর জুড়ে এদের দৌরাত্ব কমবে না।

বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ‘এজেন্ডা’ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আইনের আওতায় এনে প্রতিটি মন্ত্রনালয় অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও কর্পোরেশন ব্যাংক-বীমার আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করা। গৃহায়ন ও গৃণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে রয়েছে স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টা ড. মো: ইউনুস। গৃহায়ন ও গৃণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও এসোসিয়েশনের নামে লুটপাটকারী প্রকৌশলীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে এদের স্পর্ধা ও সাহস আরও অধিকতর প্রবল হবে। একই সাথে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানকারী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রাপ্ত সূত্র ও স্মারক হতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান যে ২০২১ সালের অভিযোগ ২০২৪ সালে নিষ্পত্তি না হওয়ার পিছনে কোন রহস্য আছে কিনা?

দুদকের তদন্তকারী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সম্পদের বিবরনী ও তদন্ত করা প্রয়োজন। তা না হলে যে কোন ভালো উদ্যোগ ভেস্তে যাবে।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা ও দীর্ঘদিন একই চেয়ারে কর্মরত কর্মকর্তাদের শুধু বদলী নয় প্রত্যেকের সম্পদ বিবরনী যাচাই করতে হবে এমন দাবী তুলেছে সুশাসনের জন্য কাজ করে যাওয়া সংগঠন হিউমানিষ্ট সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ড. মো: সেলিম রেজা। তিনি বলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয় ঘিরে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট দুদককে ও বৃদ্ধাঙ্গুঁলি দেখাচ্ছে। দুর্নীতিবাজ কাউকেই ছাড় দেওয়ার সুযোগ আমাদের সংবিধানে নাই। অতএব যদি কেই দুর্নীতিবাজদের প্রতি অনুকম্পা দেখায় তাকেও একই অভিযোগে অভিযুক্ত করা যেতে পারে।

 

 

 

 

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা