September 20, 2024, 6:56 am


নিজস্ব প্রতিবেদক

Published:
2024-08-23 09:11:16 BdST

বিদ্যুৎহীন ১০ জেলার বেশির ভাগ গ্রাহক, কয়েকটি উপকেন্দ্র বন্ধ


উজানের পানির ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এখন দেশের ১০টি জেলা বন্যাকবলিত অবস্থায় আছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি। কেউ সম্পদ রক্ষায় ব্যস্ত, কেউ খুঁজছেন আশ্রয়। এই অবস্থায় বন্যার কারণে বিদ্যুতের বেশ কয়েকটি উপকেন্দ্রে পানি ঢুকে পড়েছে। বেশ কয়েকটি উপকেন্দ্র আছে ঝুঁকিতে।

উপকেন্দ্র বন্ধের পাশাপাশি নিরাপত্তাজনিত কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও পিডিবি তাদের অধীন বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এতে ১০টি জেলার বেশির ভাগ গ্রাহক এখন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মকবুল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাত পর্যন্ত আনুমানিক ১৫ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। সীমান্তবর্তী ৮টি গ্রামে বিদ্যুৎ বন্ধ আছে। এদিকে আগরতলা বর্ডারের পাশেই আরও সাতটি গ্রাম বন্যাকবলিত হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

চট্টগ্রাম পিবিএস জেনারেল ম্যানেজার মৃদুল কান্তি চাকমা বলেন, এই সমিতির অধীনে ৬৫ হাজার গ্রাহক এখন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে। বন্যার পানি না কমলে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা ঝুঁকিপূর্ণ, তাই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

নোয়াখালী পিবিএসের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি বন্ধ হলেও বন্যার পানি যা ছিল, তা-ই আছে। এখানে বন্যাকবলিত এলাকার মধ্যে ২ লাখ ৪৩ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় বেগমগঞ্জের একটি সাবস্টেশন বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অফিসের ক্যাম্পাসই এখন বন্যাকবলিত। পানি কমলে লাইন চেক না করে আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করতে পারবো না।

কুমিল্লা পিবিএস ৩-এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোহম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, আমাদের অধীনে এক লাখ ৬৩ হাজার ২৫৫ জন গ্রাহকের বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় দুটি সাবস্টেশন বন্ধ আছে।

তিনি জানান, মিয়াবাজারের আওতায় শামুকশার, ইলিয়াসপুর, গুনাগরি ও চৌদ্দগ্রামের অবস্থা বেশি খারাপ। বাগমারার পাশে বুসচি নামক একটি জায়গায় বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। গতকালের চেয়ে পানি আরও চার ফুট বেড়েছে। এই অবস্থা বজায় থাকলে আরও এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিতে হতে পারে বলে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন।

বন্যার কারণে ফেনীর পাশাপাশি নোয়াখালীর বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার রাস্তাঘাট, বিভিন্ন উন্নয়ন অবকাঠামোর পাশাপাশি বিদ্যুতের স্থাপনা বিশেষ করে, বিদ্যুৎ অফিস, উপকেন্দ্র, বিদ্যুতের, তার, খুঁটি ও ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বন্যার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় আছেন ফেনীর গ্রাহকরা। ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আকাশ কুসুম বড়ুয়া বলেন, বন্যার পানি ওঠায় ইতোমধ্যে চারটি সাবস্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছে। বাকিগুলো বন্যার পানি ঢুকে পড়ার ঝুঁকিতে আছে।

বন্যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে পিডিবি নতুন চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘বন্যার কারণে পিডিবির কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার একটি উপকেন্দ্রে পানি উঠেছে। সেখানে ট্রান্সমিটার পানি স্পর্শ করেছে। ঝুঁকি এড়াতে ওই উপকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত গড়ে আমাদের ২০ হাজারের মতো গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে।

তিনি আরও বলেন, এখনও খুব বেশি এলাকা আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আমরা প্রস্তুত আছি। বন্যার কারণে পিডিবির আওতাধীন আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা