September 20, 2024, 7:08 am


বিশেষ প্রতিবেদক

Published:
2024-08-30 09:18:30 BdST

ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির নানা অভিযোগ


দুর্নীতি লুটপাট আর অনিয়মের কারণে প্রায়ই সংবাদের শিরোনাম হয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। প্রকল্পে দুর্নীতি, নথি হারিয়ে ফেলা, কৌশলে পুড়িয়ে ফেলা, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে হাজার কোটি টাকা লুটপাট, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে উল্টো সেই কর্মকর্তাকে হয়রানি ও চাকরিচ্যুত করার ভয়ভীতি, নিয়মনীতির বাইরে গিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের দায়িত্ব অনুসারী জুনিয়র অফিসারদের দেওয়া কি নেই চট্টগ্রাম ওয়াসাতে! এ যেন এক দুর্নীতির আতুড় ঘর।

অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বারবার সমালোচিত চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম ফজলুল্লাহ এখনও স্বপদে বহাল আছেন।

দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের পাহাড় সমান অভিযোগ থাকলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পুনরায় এমডি পদে মেয়াদ বাড়িয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে।

আট মেয়াদে এমডি

গত অক্টোবরে সাতবারের মেয়াদ শেষ হয়েছিল। কিন্তু ওই মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রায় দুই মাস আগে তাকে আবার নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

তখন স্থানীয় সরকার বিভাগের পানি সরবরাহ শাখার উপসচিব মুস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন ১৯৯৬-এর ২৮ (২) ধারা মোতাবেক এ কে এম ফজলুল্লাহকে বর্তমান চাকরির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর থেকে তিন বছরের জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি হিসেবে পুনর্নিয়োগ করা হলো। ১ নভেম্বর থেকে তিন বছর দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।

১৯৪২ সালে জন্ম নেওয়া এ কে এম ফজলুল্লাহ চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে অবসর নেন ২০০০ সালে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৬ জুলাই প্রথমবার চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে এক বছরের জন্য নিয়োগ পান। এরপর আরও এক বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

২০১১ সালে ঢাকা ওয়াসার আদলে চট্টগ্রাম ওয়াসাতেও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ তৈরি করা হয়। ওয়াসা বোর্ডও পুনর্গঠন করা হয়। তখন এমডি পদে নিয়োগ পান তৎকালীন চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলুল্লাহ। সেই থেকে এমডি পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

লাগামহীন দুর্নীতির সিন্ডিকেট

এ কে এম ফজলুল্লাহ ওয়াসার আলোচিত কর্মকর্তা। তার আমলে পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পাঁচটি বড় প্রকল্প নেওয়া হয়। এর মধ্যে কোনও প্রকল্পের কাজই নির্ধারিত মেয়াদে শেষ হয়নি। ব্যয়ও বাড়াতে হয়েছে তিনটির। নগরে পানির সংকটও কাটেনি।

অভিযোগ আছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে ওয়াসায় দুর্নীতির সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন ফজলুল্লাহ। সেবার নামে মানহীন পানি সরবরাহ করে লুট করেছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ।

এমনকি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ওয়াসায় প্রতি বছর ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পানির সিস্টেম লস দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ গত ১০ বছরের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াসার একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, জ্যৈষ্ঠতা ভেঙে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পছন্দের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রকল্পের পরিচালক ও নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব দিয়েছেন এমডি ফজলুল্লাহ।

এছাড়াও চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী এ.কে.এম ফজলুল্লাহর বিরুদ্ধে অর্থপাচার, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে বলে আদালতকে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে উচ্চ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দিয়েছে। তবে তদন্তের ওই আদেশ উচ্চ আদালতের বারান্দা পর্যন্তই সীমিত। অজ্ঞাত কোনো এক কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত প্রতিবেদন উচ্চ আদালতে দাখিল করেনি।

কৌশলে নথিপত্র পোড়ানো

অভিযোগ রয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম ওয়াসার যেসব প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে, সে সকল প্রকল্পের নথি কৌশলে পুড়িয়ে ফেলেছেন তিনি।

২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ভোররাতে ওয়াসা ভবনের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ওই সময় অগ্নিকান্ডের বিষয়টি সাজানো নাটক ছিলো বলে দাবি করেন ওয়াসা এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম।

২০২০ সালের আগুনের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ ফাইল পুড়ে যাওয়াকে যেমন 'রহস্যজনক' বলে আখ্যায়িত করা হয়, তেমনি ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গুরুত্বপূর্ণ একাধিক ফাইল সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে এমডি এ.কে.এম. ফজলুল্লাহর বিরুদ্ধে।

অবসরে যাওয়া ব্যক্তিদের চুক্তিতে নিয়োগ-বাণিজ্য

অবসরে যাওয়ার পরও ওয়াসার এমডির ব্যক্তিগত সহকারী দিদারুল আলম এবং ওয়াসার মেডিক্যাল অফিসার ডা. মোসলেহ উদ্দিনের চুক্তিতে নিয়োগের মেয়াদ বাড়িয়েছেন এমডি।

ওয়াসা সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে অবসর উত্তর ছুটিতে যান দিদারুল আলম। চলতি বছরের ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিত ওয়াসার বোর্ড সভায় তাকে চুক্তিতে নিয়োগের প্রস্তাব দেন এমডি ফজলুল্লাহ। দিদারকে এক বছরের জন্য অথবা নতুন কর্মচারী নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। দিদারুল আলমের পদ সাঁটলিপিকার ও কম্পিউটার অপারেটর হলেও এমডির পিএ হিসেবে কাজ করেন।

অপরদিকে, ২০২২ সালের ৩০ জুন অবসর উত্তর ছুটিতে যান ওয়াসার মেডিক্যাল অফিসার ডা. মোসলেহ উদ্দিন। একই বছরের ৬ জুলাই ওয়াসার বোর্ড সভায় তাকে ছয় মাস অথবা নতুন মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর এখন পর্যন্ত নতুন মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

চুক্তি অনুযায়ী তিনি বেতন পান এক লাখ ৫০০ টাকা। অথচ অবসরে যাওয়ার আগে সর্বশেষ মাসে তিনি বেতন উত্তোলন করেছেন ৮৮ হাজার ৭৩৫ টাকা করে।

চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্মচারী চাকরি প্রবিধানমালা-২০২০-এর ৬২ ধারায় বলা হয়েছে, অবসর গ্রহণ এবং কোনও কর্মচারীর পুনরায় নিয়োগ সরকারি চাকরি আইনের বিধানবলি দিয়ে পরিচালিত হবে। অবসর গ্রহণকারী সরকারি কর্মচারীকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়ে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮-এর ৪৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি জনস্বার্থে কোনও কর্মচারীকে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করতে পারবেন।

এমডির বেতন কত?

শুরু থেকে এমডি ফজলুল্লাহকে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয়। ২০১৬ সালে বেতন বৃদ্ধির আবেদন করলে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা করা হয়। এ ছাড়া বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা, আপ্যায়ন ও বিশেষ ভাতাসহ মোট তিন লাখ ১৭ হাজার টাকা পান।

এরপরও ২০২২ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ওয়াসার ৬৫তম বোর্ড সভায় অন্যতম সূচি ছিল এমডির বেতন-ভাতা বৃদ্ধির বিষয়। অর্থাৎ মূল বেতন এক লাখ ৮০ হাজার থেকে একলাফে দুই লাখ ৭০ হাজার বাড়িয়ে সাড়ে চার লাখ টাকা চান।

তখন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের এই আবেদনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বোর্ড সদস্যরা। তবে সভায় সিদ্ধান্ত হয়নি। বেতন বৃদ্ধির আবেদনের বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সমালোচনা শুরু হলে সেই আবেদন প্রত্যাহার করে নেন।

সংকটের মধ্যেও পানির দাম বেড়েছে ১৩ বার

বছর পাঁচেক আগে এ কে এম ফজলুল্লাহ ঘোষণা দিয়েছিলেন, ২০২০ সালের মধ্যে চট্টগ্রামবাসী দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা নিরাপদ পানি পাবেন। ওই ঘোষণা আলোর মুখ দেখেনি। এখনও প্রতিদিন ঘাটতি রয়েছে ১২ থেকে ১৫ কোটি লিটার পানির। এ নিয়ে গ্রাহকরাও ক্ষুব্ধ।

ওয়াসার বোর্ড সদস্য, কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরা বলছেন, সিস্টেম লস বা কারিগরি ত্রুটি ও পানি চুরি কমানো যায়নি। ওয়াসা এখন যা উৎপাদন করে, তার ৩০ ভাগ পানিই গ্রাহকের কাছে পৌঁছায় না। প্রায় ১৪ কোটি লিটার পানি নষ্ট হয়। আর্থিকভাবে বছরে ১৪২ কোটি টাকা গচ্চা দিতে হয়।

সংকটের সমাধান না হলেও এ কে এম ফজলুল্লাহর আমলে ১৩ বার পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে গত বছর একলাফে ৩৮ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি।

এই ব্যাপারে এ কে এম ফজলুল্লাহ তখন জানিয়েছেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগে পানির উৎপাদন ছিল মাত্র ১৪ কোটি লিটার। সেই ১৪ কোটিকে তিনি ৫৬ কোটিতে নিয়ে গেছেন। তার সময়ে নতুন নতুন পানি শোধনাগার চালু হয়েছে। তবে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় পানির দাম বাড়ানো হয়েছে।

প্রকল্পে ধীরগতি

এ কে এম ফজলুল্লাহ ২০১১ সালে এমডি হওয়ার পর চট্টগ্রাম ওয়াসা পানি সরবরাহে চারটি বড় প্রকল্প নেয়। প্রকল্পগুলো হলো, কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (প্রথম পর্যায়), কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়), চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও পয়োনিষ্কাশন প্রকল্প ও ভান্ডালজুড়ি পানি সরবরাহ প্রকল্প। চার প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। কোনোটিই নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। দুটিতে ব্যয় বেড়েছে এক হাজার ৭১২ কোটি টাকা।

অন্যদিকে নগরীর পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে ২০১৮ সাল থেকে তিন হাজার ৮০৮ কোটি ব্যয়ের একটি প্রকল্পের কাজ করছে ওয়াসা। পাঁচ বছরে কাজের অগ্রগতি মাত্র ৩০ শতাংশ। ২০২৬ সালের আগে কাজ শেষ হবে না। ব্যয়ও বাড়বে। অবশ্য এই প্রকল্পের কাজ শেষ না হলেও এখন একই ধরনের আরও পাঁচটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কাজে ধীরগতির বিষয়ে এমডি বলেছেন, প্রকল্পের নকশা, অনুমোদন থেকে শুরু করে দরপত্র আহ্বান, জমা ও মূল্যায়ন পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপ পার হতে হয়। এই কারণে প্রকল্পের সময় বেশি লাগে।

প্রকল্প শেষ হলেও বেতন-ভাতা পাচ্ছেন ২৬ জন

প্রকল্প শেষ হওয়া সত্ত্বেও প্রকল্পে নিয়োজিত দেখিয়ে ওয়াসার ফান্ড থেকে ২৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বেতন দিচ্ছেন এমডি। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অডিট অধিদফতরের এঅ্যান্ডএও ও উপদল নেতা মো. তরিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অডিট প্রতিবেদন এমডির কাছে পাঠানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেইজ-২) এবং চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও মোট ২৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রাজস্ব বাজেট কোড থেকে বেতন ভাতাদি বাবদ এক কোটি ৮৬ লাখ তিন হাজার ৮২০ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। যেখানে প্রকল্প শেষ, চাকরিও শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চাকরিতে বহাল রেখে রাজস্ব খাত থেকে অনিয়মিতভাবে বেতন ভাতাদি পরিশোধ করা হচ্ছে।

ওয়াসার দুটি প্রকল্পের মধ্যে চিটাগাং ওয়াটার সাপ্লাই ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৮ সালের জুনে এবং কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের (ফেইজ-২) মেয়াদ শেষ হয় ২০২৩ সালের জুনে। প্রকল্প দুটি শেষ হলেও একক ক্ষমতাবলে কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেইজ-২) নিয়োজিত ২৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পুনর্বহাল করেন এমডি। এখানেও দুর্নীতি আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী দলের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলের, ‘আমরা যারা সরকারের বাইরে ভিন্ন দলে ছিলাম, গত ১৫ বছর নানাভাবে হয়রানি-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। ওয়াসার এমডির এসব দুর্নীতি নিয়ে কোনও কথা বলতে পারিনি। সিন্ডিকেট দিয়ে ওয়াসা জিম্মি করে রেখেছেন এমডি। যে কারণে সরকারের পতন হলেও ওই সিন্ডিকেট দিয়ে স্বপদে বহাল আছেন তিনি।’

গত ১৫ বছরে চুক্তিতে এবং আউটসোর্সিংয়ে যেসব লোক নিয়োগ হয়েছে সব নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে উল্লেখ করে আবুল কালাম বলেন, ‘টাকা ছাড়া চাকরি হয়েছে, এরকম একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এক পরিবারে একাধিক সদস্যও চাকরি পেয়েছেন। ওয়াসায় বর্তমানে আউটসোর্সিংয়ে ৩০০ জন লোক কর্মরত আছেন। এসব লোককে বাদ দিয়ে নতুন করে স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।’

অনিয়ম-দুর্নীতির এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহর কার্যালয়ে বুধবার গেলে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কোনও কথা বলতে রাজি হননি। ‘এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলবো’ বলে কার্যালয় থেকে চলে যান। পরে তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও ধরেননি।

এই প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘এমডির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তার বেশিরভাগের সত্যতা নেই। অনেকে মনগড়া অভিযোগ করছেন।’

Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.


Popular Article from FT বাংলা