শাহীন আবদুল বারী
Published:2025-12-18 20:49:12 BdST
মাতৃভূমিই তারেক রহমানের একমাত্র ঠিকানা
আগামী ১২ই ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সবকিছু ঠিক থাকলে দীর্ঘ ১৭ বছর পর ২৫ ডিসেম্বর দেশে আসবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার সঙ্গে আসবেন কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান।
বেগম খালেদা জিয়ার সংকটময় মুহূর্তে মাতৃত্বের টানেই নয় বরং বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বার্থান্বেষী কিছু মহলের নানামুখী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তারেক রহমান আসার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেমন পটপরিবর্তন হবে, তেমনি বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো আরও শক্তিশালী হবে। জমে উঠবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। প্রসার ও শক্তিশালী হবে বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবস্থান। একইসাথে অবসান ঘটবে দায়িত্বহীন, জনবিচ্ছিন্ন ও নিম্নমানের সেই সকল রাজনীতিবিদদের, যারা এতোদিন রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য রাজনীতির মাঠে দাবিয়ে বেড়িয়েছেন।
কর্মীবিমুুখ এই রাজনীতিবিদদের কাছে তারেক রহমান অসহ্যকর হলেও এই মুহুর্তে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই তারা বিএনপিকে আঁকড়ে ধরে আছে। তারেক রহমানের ছায়াতলে থাকা ছাড়া আর কোনও বিকল্প তাদের নেই।
সংগত কারণেই শুধু বিএনপি নয় বরং দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে এখন তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের খবরের বাজনা বেজে উঠছে। উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বমহলে। তবে, দেশে ফেরার পর তারেক রহমানকে বিভিন্ন ইস্যুতে কঠোর দৃষ্টি রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন মহলের উস্কানি এড়িয়ে যে কোন সিদ্ধান্ত ধীরস্থিরভাবে, নিজের অতীত অভিজ্ঞতা, প্রাজ্ঞতা এবং দূরদর্শিতার আলোকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দ্রুততম সময়ে বিএনপির ইশতেহার প্রনয়ণ, মাঠপর্যায়ে সাংগঠনিক দায়িত্ব পুনর্বিন্যাস করা, দলীয় কোন্দল নিরসন, প্রতিটি আসনে প্রার্থীদের সাথে নেতাকর্মী ও জোটশরিকদের সমন্বয় সাধন, প্রচারণা কৌশল নির্ধারণ, আসনভিত্তিক ইস্যুতে প্রচারণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারেক রহমানকে এখন নেতৃত্ব দিতে হবে।
নির্বাচনকেন্দ্রিক পদ দখল
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে একটি রাজনৈতিক দল প্রশাসন ও মিডিয়াকে ব্যবহার করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা যেভাবে কৌশল অবলম্বন করে মিডিয়া এবং প্রশাসনে নিজেদের লোক নিয়োগ দিয়েছে সেটি বিএনপি করতে পারেনি এবং একঅর্থে সেই চেষ্টাও করেনি। এখনও এই প্রশাসন ও মিডিয়া আওয়ামী দোসর এবং জামাতের দখলেই রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, নির্বাচন কমিশন এবং বাংলাদেশ সচিবালয়েও এই দুই দলের প্রভাব অনেক বেশী। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শিবির এককভাবে জয় লাভ করার পর তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জেতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এজন্য দলটি তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও হরেকরকম প্রপাগাণ্ডা চালিয়ে যাচ্ছে।
স্বৈরাচারী গোষ্ঠীকে পুনর্বাসন
রাজনীতির ময়দানে প্রকাশ্যে স্বৈরাচারের বিরোধিতা করলেও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী কঠোর গোপনীয়তা বজায় রেখে বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে থাকা নেতাকর্মীদের আশ্রয় প্রশ্রয় ও সুবিধা দিচ্ছে। বিপরীতে যে কোন অপকর্মের দায় বিএনপির উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের এই কূটবুদ্ধির কাছে বিএনপির অনেক বড় বড় নেতাও হিমশিম খাচ্ছেন।
কোন্দল মোকাবেলা
এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংসদীয় আসনগুলোতে জামায়াতে ইসলামী একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে যেসব আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী আছে, সেখানে তারা সুকৌশলে দলটির নেতাকর্মীদের উস্কানি দিয়ে গ্রুপিং ও কোন্দল সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। জামাতের এই পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে বিএনপির কিছু লোভী নেতা দলের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। এই সমস্যা এখন প্রতিটি জেলায় বিরাজমান। পেছন থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগও কলকাঠি নাড়ছে।
সূত্র মতে, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে জিততে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করবে। জামাতের যে পরিমাণ ফান্ড আছে তা বিএনপির নেই। তারা দলীয়ভাবে পরিকল্পনা মোতাবেক এগুচ্ছে। খুন, মারামারি ও চাঁদাবাজির দায় বিএনপির ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে কোন প্রকার যাচাই-বাছাই করছে না জামাত। দলটি বিভিন্ন আইডি খুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় একাকার পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনের সময় এই সোশ্যাল মিডিয়া ছিলো জামাতের এক নম্বর হাতিয়ার।
জাতীয় নির্বাচনেও তাদের প্রথম পরিকল্পনা সোশ্যাল মিডিয়া এবং গরীব অসহায় মানুষের সাথে যোগাযোগ গড়ে তোলা। বিএনপির মিডিয়া সেল এখনো জামাতের মিডিয়া সেলের সামনে বেশ দুর্বল। ইতোমধ্যে তারেক রহমানের বরাত দিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাব এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। জামাতপন্থী নেতারা বলছে, নির্বাচনে হারার আশঙ্কার বিএনপিপন্থী সাংবাদিক নেতারা তারেক রহমানের বরাত দিয়ে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করিয়েছেন। এটিও জামাতের একটি কূটবুদ্ধি কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামাত এটাকেও ইস্যু করবে। ইতিমধ্যে তারা বলেও বেড়াচ্ছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনগুলোতে হেরে যাওয়ায় বিএনপির মধ্যে ভয় ঢুকেছে। তাই এখন জাতীয় প্রেস ক্লাব এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে।
প্রাসঙ্গিক কারনেই বিএনপির তৃনমূলে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে, যে জামাতকে বিএনপি এতোদিন আশ্রয় ও সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে এতদুর এনেছে, তারাই এখন বিএনপিকে টক্কর দিচ্ছে। দুধকলা দিয়ে কি তাহলে কালসাপ পুষেছে পার্টি হাইকমান্ড?
তারেক রহমানকে দেশে ফিরেই তৃনমূলের এসব কথা বা আলোচনাকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। তবে, তারেক রহমান দেশে আসার পর পুরো চিত্রই বদলে যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পথেই হাঁটবেন তারেক রহমান। এই মুহুর্তে তারেক রহমান মাতৃত্বকে আরও গভীর করে দেখছেন। বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক তারেক রহমান মায়ের কষ্টে কতটা যন্ত্রণায় আছেন তা কেবল তিনিই উপলব্ধি করেন। তার প্রতিটি নিঃশ্বাসে দেশের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা জেগে আছে।
তারেক রহমানের জীবন ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে কিন্তু তার আচরণে কখনো কঠোরতা দেখা যায়নি। শত আঘাত সহ্য করেও তারেক রহমান নরম সুরেই কথা বলছেন। কিন্তু একটি দল তার বিরুদ্ধে নানাভাবে সমালোচনার যে দুঃসাহস দেখাচ্ছে তা সম্ভব হচ্ছে কেবলমাত্র দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা কিছ হাইব্রিড নেতার কারণে। তারা বিএনপিকে একটি বড় দল বলে চালিয়ে দিচ্ছে।
এই চক্রটি বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনার অভাব ও সাংগঠনিক দুর্বলতার বিষয়টি মানতে নারাজ। তারেক রহমান দেরিতে দেশে আসার পেছনে অনেকগুলো বিষয়ের মধ্যে এটিও একটি বড় কারণ। তিনি লন্ডনে থেকে অনেক কিছুই উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধ, সার্বভৌমত্ব, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আমৃত্যু ভূমিকা রেখেছেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তাঁর হাতে গড়া দল বিএনপির নেতৃত্বে এখন তারেক রহমান। বাবার মতোই ষড়যন্ত্র এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়েই এক বন্ধুর পথের যাত্রী তিনি। নির্যাতন-নির্বাসন-সংগ্রামেই জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দিয়েছেন। দেশের জন্য তার মায়ের আত্মত্যাগ, জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার হতে দেখে আসছেন শৈশব থেকেই। একমাত্র ভাই আরাফাত রহমান কোকোকেও হারিয়েছেন।
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে তারেক রহমান মা-মাটি ও মানুষের নেতা। তাকে সহযোগিতা করা দেশের প্রতিটি নাগরিকের একান্ত দায়িত্ব। নইলে গুপ্তচরদের হাত থেকে দেশ রক্ষা পাবে না। বিশেষ করে বিএনপিকে মনে রাখতে হবে পতিত সরকারের গত সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে হওয়া নির্যাতন-নিপীড়ন ও জেল-জুলুমের কথা। এটি ভুলে গেলে মাশুল গুনতে হবে। তখন আর সুযোগও থাকবে না। খুব কঠিন করে এটাও মনে রাখতে হবে যে, জামাত বিএনপি থেকে শুধু সুবিধাই নিয়েছে। আর অন্য সব দলগুলো খুবই ছোট্ট। তাদের জনমত একেবারেই কম। তাই বিএনপির উপরই অবহেলিত জনগোষ্ঠী আস্থা ও ভরসা রেখেছে।
তারেক রহমান কার্যত এই মুহুর্তে বিএনপির সর্বোচ্চ নেতা। তিনি নির্বাসনে থাকলেও তাঁর একক নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে দলটি। তিনি দলের জন্য যে শ্রম দিয়ে চলেছেন সেটি অভাবনীয়। তারেক রহমান চাচ্ছেন, বাংলাদেশের আগামী দিনের রাজনীতিতে গুনগত পরিবর্তন আনতে। তাকে সৎভাবে যারা সহায়তা করছেন তারাই হবেন সামনের দিনগুলোতে তারেক রহমানের সবচেয়ে কাছের। অতীতে যারা মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সিপাহসালা তারেক রহমানের ইমেজ প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন তাদের সঙ্গবদ্ধ প্রচেষ্টা আর সফল হবে না। আগামী দিনে তারেক রহমানের "আকাঙ্ক্ষা"র কথা বলে ঐ স্বার্থান্বেষী মহলকে নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন তারেক রহমান। তিনি দলের সকল নেতাকর্মীকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন গরীব অসহায় মানুষের পাশে দাড়িয়ে তাদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে। তারেক রহমানের এমন উদার সিদ্ধান্তকে বিএনপির নেতাকর্মী ও দেশের সর্বস্তরের মানুষ সাধুবাদ জানিয়েছেন।
জাতির তরুণ প্রজন্মের অহংকার, জাতীয়তাবাদী শক্তির কান্ডারী, তারেক রহমান নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন দল ও দেশের মানুষের জন্য। রাজনৈতিক ইতিহাসে তারেক রহমান এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শুধুমাত্র দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য। আগামী-২৫ ডিসেম্বর হবে জাতীয়তাবাদী শক্তির পূর্ণজাগরনের দিন। ভালোবাসার উচ্ছ্বাস প্রকাশের দিন। তারেক রহমানের নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন।
তারেক রহমানকে নিয়ে যতটা প্রপাগাণ্ডা হয়েছে, সেটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্য কোনো রাজনীতিবিদকে নিয়ে হয়তো হয়নি। নব্বই-এর দশকের শেষের দিকে রাজনীতিতে আসার পর থেকেই তারেক রহমান ও বিএনপির প্রতি মানুষের যে আলাদা একটি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়েছিলো, সেটি নিঃশেষ করে দেবার জন্য এমন কোনো চেষ্টা নেই যা করা হয়নি। বেগম জিয়াকে দেশে থেকে রাজনীতি করতে দিলেও তারেক রহমানকে এক দিনের জন্যও রাজনীতি করতে দেয়নি আওয়ামী লীগ। এক কথায় বলতে গেলে, তারেক রহমানকে সারা জীবনের জন্য রাজনীতি থেকে দূরে রাখার সব আয়োজন করা হয়েছিলো। ওয়ান-ইলেভেনের সময় নিষ্ঠুর নির্যাতনের মাধ্যমে তারেক রহমানকে দেশত্যাগে বাধ্য করার চক্রান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার সময় তারেক রহমানের কাছ থেকে যে মুচলেকা রাখা হয়েছিল সেটিও আওয়ামী লীগই সুকৌশলে সেনাবাহিনীর কিছু বিপদগামী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করেছিলো।
প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতির মাঠ থেকে বিএনপিকে চিরতরে বিদায় করতে চেয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে তারেক রহমান সবকিছু জয় করেই এগিয়ে যাচ্ছেন। আজকের দিনে এই পর্যায়ে আসা তার জন্য সহজ কিছু ছিলো না। শারীরিক কঠিন অবস্থা নিয়ে লন্ডনে গিয়েও দীর্ঘদিন স্বাভাবিক জীবন-যাপন পর্যন্ত করতে পারেননি এই মানুষটি। আর রাজনৈতিক জীবনে আসা তো বহু দূরের কথা।
তারপরও আস্তে আস্তে, অল্প অল্প করে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিএনপির তৃণমূল কর্মীদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন৷ সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই কত হতাশা, কত আঘাত, কত নিরাশায় থাকা নেতাকর্মীদের তিনি ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন। আর এখন তো তারেক রহমান শুধুমাত্র বিএনপিই নয় বরং পুরো দেশের নেতা হয়েছেন। বিরোধী মতের লোকজনও তাঁর রাজনীতির প্রশংসা করছে। কার্যত তিনি বাংলাদেশে সকলের আশা ভরসার মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
সংগত কারণেই সবার মুখে এখন একটাই কথা; এই তারেক রহমান সেই তারেক রহমান নন। এই তারেক রহমান অনেক পরিনত, অভিজ্ঞ এবং দূরদর্শী। তারেক রহমান বাংলাদেশে ইতিহাস সৃষ্টি করবেন, যদি তাঁর হাতকে শক্ত রাখে বিএনপি।
গত ১৭ বছর বাংলাদেশের কোন গণমাধ্যমই তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার বা নিউজ প্রচার করেনি বা করতে পারেনি। এই বিতর্ক এখন অপ্রাসঙ্গিক। অনেক কষ্ট বুকে চেপে রেখে সরল মনের তারেক রহমান অভিমান করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে লন্ডনে নিজেকে বন্দী করে রেখেছিলেন। লন্ডনে কারো সাথেই দেখা সাক্ষাৎ করতেন না। কিন্তু দেশে বিএনপির প্রতিটি ইউনিটের সাথে ঠিকই যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন। তার কথা দেশের মিডিয়ায় প্রচার করা হতো না আওয়ামী লীগের অঘোষিত নিষেধাজ্ঞার কারনে তার বক্তব্য বিএনপির কোন কর্মী বা সাধারণ কোনও মানুষ স্বপ্রনোদিত হয়ে নিজের আইডি থেকে শেয়ার করলে বিটিসিএল সাথে সাথে সেসব আইডি ব্লক করে দিতো। লন্ডনে তারেক রহমান ছোট্ট একটা রুমের একটা কর্নারে বসেই ১৭ বছর দল চালিয়েছেন। শত চেষ্টা করেও আওয়ামী লীগ বিএনপিতে সামান্যতম ভাঙ্গন ধরাতে পারেনি।
যেদিন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পলায়নের ফলে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে, সেদিন থেকেই তারেক রহমান মুক্ত বাতাসে বের হয়েছেন। হাসিনার ১৭ বছরের শাসনামলে দেশে যত প্রতিবাদ, আন্দোলন বিএনপি দল হিসেবে করেছে তার সবই তারেক জিয়ার নেতৃত্বেই হয়েছে।
আন্তর্জাতিক নানা মহলের ষড়যন্ত্র সত্বেও আওয়ামী লীগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সেনাবাহিনীসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল শক্তি বিপরীতে দাঁড়িয়ে প্রতিটি ন্যায়সংগত অধিকার আদায়ে সেমিনার, সভা সমাবেশ, মানববন্ধন থেকে শুরু করে বিক্ষোভ, মশাল মিছিল, লংমার্চ, হরতাল, অবরোধ, ঢাকা চলোসহ আরও অনেক কর্মসূচি তারেক রহমানের নেতৃত্বেই বিএনপি পালন করেছিলো। মূলত তারেক রহমানের কারণেই শত নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করেও বিএনপি রাজনীতির মাঠে টিকেছিলো। ইনশাআল্লাহ, অদূর ভবিষ্যতে তারেক রহমানের এই নেতৃত্বগুনই বাংলাদেশকে মর্যাদাপূর্ণ ও শক্তিশালী একটি রাষ্ট্রে পরিনত করবে।
Unauthorized use or reproduction of The Finance Today content for commercial purposes is strictly prohibited.
